সংসদে গিয়ে পুনর্নির্বাচনের দাবি তুললেন মোকাব্বির

নিজের দল গণফোরামের সিদ্ধান্ত অমান্য করে সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিয়ে আইন সভায় প্রথম বক্তৃতায় পুনর্নির্বাচনের দাবি তুললেন মোকাব্বির খান, যার তার দলেরও দাবি।

সংসদ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 April 2019, 05:19 PM
Updated : 24 April 2019, 05:24 PM

বুধবার সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় দাঁড়িয়ে মোকাব্বির বলেন, “আমি গণফোরামের পক্ষে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই, ৩০ ডিসেম্বরের সাধারণ নির্বাচন নিয়ে জনমনে প্রশ্ন আছে।

“প্রধানমন্ত্রীর কাছে সর্বপ্রথম দাবি জানাব, অবিলম্বে এমন একটি সাধারণ নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন, যাতে দলমত নির্বিশেষে দেশের মানুষ নির্ভয়ে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন।”

গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির একথা বলার সময় সরকারি দলের সদস্যরা টেবিল চাপড়ানোর পাশাপাশি মৃদু হট্টগোলও করেন।

গত ২ এপ্রিল সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেন মোকাব্বির। সংসদ সদস্য হিসেবে বুধবারই প্রথম সংসদে ছিলেন তিনি।

গণফোরামের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোকাব্বির জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে একাদশ সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রতীক উদীয়মান সূর্য নিয়ে সিলেট-২ আসনে নির্বাচিত হন।

গণফোরামের দলীয় প্রতীকে নির্বাচিত প্রথম এবং একমাত্র সংসদ সদস্য তিনি।

গত ৩০ ডিসেম্বর ওই নির্বাচনে অংশ নিয়ে মাত্র ছয়টি আসনে জয় পায় ঐক্যফ্রন্টের বড় দল বিএনপি। আর গণফোরামের দুটি মিলিয়ে জোটের আসন হয় আটটি।

ওই নির্বাচনে ভোট ডাকাতি হয়েছে দাবি করে পুনর্নির্বাচনের আহ্বান জানায় ঐক্যফ্রন্ট। সেই সঙ্গে সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় তারা।

এর মধ্যেই গণফোরামের দুজন মোকাব্বির ও সুলতান মো. মনসুর আহমেদ শপথ নিয়ে ফেলেন। এরপর গণফোরাম সুলতার মনসুরকে বহিষ্কার করে; মোকাব্বিরকেও দেওয়া হয়েছে নোটিস।

শপথ নেওয়ার পর মোকাব্বির দাবি করেন, তিনি দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের অনুমতি নিয়ে শপথ নিয়েছেন।

তবে পরে গণফোরাম সভাপতি কামাল হোসেন তাকে নিজের কার্যালয় থেকে বের করে দেন।

সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিয়ে বেরিয়ে আসছেন মোকাব্বির খান (ফাইল ছবি)

সংসদে বক্তৃতায় মোকাব্বির দলীয় প্রধান কামাল হোসেন ও গণফোরামের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, “গণফোরাম চার লাখ কোটি টাকা পাচার, ব্যাংকের টাকা তসরুফ হওয়া, নুসরাতকে পুড়িয়ে মারার মতো অপরাজনীতির বিপরীতে ঐক্যবোধ পুনরুদ্ধারের স্বপ্ন দেখে।

“আজ সময় এসেছে আত্মজিজ্ঞাসার- ৩০ ডিসেম্বরের মতো নির্বাচন কেন করা সম্ভব হল? এর দায় কার কতটা? আমরা যে যার দায়িত্ব পালন করতে সক্ষম হয়েছি কি না? রাষ্ট্রযন্ত্র কেন এতটা রুগ্ন হতে পারলো তা খতিয়ে দেখা দরকার।”

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, “বর্তমানে তিনি কারাবন্দি চিকিৎসাধীন। তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই। তার চিকিৎসা না হওয়া দেশে সচেতন মানুষকে পীড়িত করছে। অবিলম্বে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা নেওয়া হলে বঙ্গবন্ধুকন্যার মহানুভবতার প্রমাণ মেলবে।”

বিরোধী রাজনীতিকদের বঙ্গবন্ধু ‘গোপনে’ সাহায্য ও সহযোগিতা করতেন বলেও উল্লেখ করেন মোকাব্বির।

নিখোঁজ বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলীর অনুসন্ধানে একটি তদন্ত কমিটি গঠনের দাবিও জানান তিনি।