‘কেবল দল বললেই’ সংসদে যাবেন বিএনপির মোশাররফ

বিএনপির নির্বাচিতদের শপথ গ্রহণ নিয়ে আলোচনার মধ্যে বগুড়া- ৪ আসনে নির্বাচিত মো. মোশাররফ হোসেন বলেছেন, কেবল দল বললেই সংসদে যাবেন, অন্যথায় চেয়ারপারসনের মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত তিনি ও পথে হাঁটবেন না।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 April 2019, 01:07 PM
Updated : 20 April 2019, 07:13 PM

একাদশ সংসদ নির্বাচনে আটটি আসনে জয় পায় বিএনপি ও তাদের জোটসঙ্গীরা। এরমধ্যে গণফোরামের দুই নেতা এরইমধ্যে সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিয়েছেন।

আগামী ২৯ এপ্রিলের মধ্যে শপথ না নিলে বিএনপির ওই ছয় জনের আসনে নতুন করে নির্বাচন হবে। এরমধ্যেই তারা শপথ নিতে পারেন বলে গুঞ্জন চলছে। সম্প্রতি একটি ইংরেজি দৈনিকের প্রতিবেদনে বলা হয়, কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্যারোল নিয়ে বিদেশে যাওয়ার শর্তে বিএনপির নির্বাচিতরা শপথ নেবেন।

খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বিষয়টি নিয়ে কথা বলার পর নিজের অবস্থান ব্যক্ত করেন মোশাররফ।  

তিনি বলেন, “প্রতিদিন ১০-১৫ চ্যানেল-মিডিয়া ফোন দেয় আপনারা নাকি সংসদে যাচ্ছেন, আপনারা নাকি শপথ গ্রহণ করছেন? আমি জাতীয়তাবাদী দলের ধারক বাহক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শে আদর্শিত, ম্যাডামের দীক্ষায় দীক্ষিত, দেশনায়ক তারেক রহমানের আদর্শে আদর্শিত হয়েছি। আপনাদের আমি কথা দিচ্ছি, যদি আমার দলের নির্দেশনা আসে যে, আপনারা সংসদে যান তাহলে সংসদে যাবে।

“যদি নির্দেশনা না আসে আমি কথা দিচ্ছি, আমি সংসদে যাব না ম্যাডামের মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত।”

বিএনপির নির্বাচিতদের শপথ গ্রহণের বিরোধিতা করে আমীর খসরু বলেন, তারা শপথ নিলে তা জনগণের প্রত্যাশার বিরুদ্ধে যাবে।

তিনি বলেন, “যে নির্বাচনটি বাংলাদেশের মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে, যে নির্বাচনটি বিশ্বের সমস্ত গণতন্ত্রকামী দেশগুলো প্রত্যাখ্যান করেছে, যে নির্বাচন তারা ইনভেস্টিগেশন করতে বলেছে। এখনও জাতিসংঘ থেকে শুরু হয়ে মার্কিন রাষ্ট্রপ্রধান তারা বলেছেন এই নির্বাচনটি তদন্ত করতে। যেখানে নির্বাচনই হয়নি সেখানে বিএনপির ছয়জন ব্যক্তি যাদেরকে বলা হচ্ছে তারা কীভাবে সংসদে যাবে?

“এটা তো জাতির সাথে, জনগণের সাথে, বাংলাদেশের মানুষের যে প্রত্যাশা তার বিরুদ্ধে যাওয়া হবে। এটা আলোচনায় আসতে পারে কীভাবে? যেখানে নির্বাচনই হয়নি, যেখানে বাংলাদেশের মানুষ ভোট দেয়নি, যেখানে প্রতিটি ভোটের আগের দিন ভোট চুরি হয়ে গেছে, আবার ভোটের দিনও চুরি হয়েছে, আবার ফলাফল প্রকাশের সময়ে আবার চুরি হয়েছে।”

এরপরেও ওই সংসদে কাউকে যেতে বলার কোনো সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি।

শপথ গ্রহণের সঙ্গে খালেদা জিয়ার মুক্তির কোনো সম্পর্ক নেই বলেও মন্তব্য করেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

তিনি বলেন, “এটার সাথে দেশনেত্রীর মুক্তির কী সম্পর্ক? এই আলোচনা কীভাবে আসতে পারে? এ বিষয়গুলো পরিষ্কার হওয়া দরকার। জাতিকে আর কত বিভ্রান্ত করা যাবে? আমরা বিভ্রান্ত করতে চাই না।”

সরকার তার প্রয়োজনে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে অবস্থান কর্মসূচি দাবি করেন আমীর খসরু।

নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরামের উদ্যোগে খালেদা জিয়া, সৈয়দ মেহেদি আহমেদ রুমি ও হাবিব উন নবী খান সোহেলের মুক্তি দাবিতে এই প্রতিবাদ সভা হয়।

সংগঠনের উপদেষ্টা সাঈদ আহমেদ আসলামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমের পরিচালনায় সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, কারাবন্দি সৈয়দ মেহেদি আহমেদ রুমির মেয়ে সৈয়দ ফাহিমা রুমী, ঢাকা মহানগরের ফরিদ উদ্দিন, কৃষক দলের খলিলুর রহমান ভিপি ইব্রাহিম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।