সরকার অত বেকায়দায় নেই: হাছান মাহমুদ

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে বিএনপি নেতারা ‘বার বার অবান্তর কথা বলছেন’ বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 April 2019, 05:55 PM
Updated : 19 April 2019, 05:57 PM

তিনি বলেছেন, “সরকার এমন কোনো বেকায়দায় নেই যে দণ্ডিত বেগম খালেদা জিয়াকে যে কোনো উপায়ে মুক্তি দিতে হবে।”

শনিবার রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে এক আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছানের এমন মন্তব্য আসে।

দুর্নীতির দুই মামলায় ১৭ বছরের সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তির বিষয়ে বৃহস্পতিবার দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, সরকার খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তি নিয়ে ‘অশুভ চক্রান্ত’ করছে।

শিল্পকলা একাডেমিতে শুক্রবার আলোকচিত্র প্রদর্শনী ‘রূপসী বাংলা’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রয়াত তিন ফটো সাংবাদিক মোজ্জাম্মিল হোসেন, মোশারফ হোসেন (লাল ভাই) ও মোহাম্মদ জহিরুল হকের পরিবারের হাতে সম্মাননা তুলে দেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

রিজভীর এ কথার জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, “বেগম খালেদা জিয়া আদালতে দণ্ডিত হয়ে কারাগারে আছেন। আদালতে জামিন পাওয়াই তার মুক্তির পথ। আর প্যারোলের বিষয়টি হচ্ছে, দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তি নিজে চাইলেই কেবল তা বিবেচনার সুযোগ থাকে। কাউকে তো জোর করে প্যারোল দেওয়া যায় না।

“বিএনপি নেতারা কেন অবান্তর কথা বলেন, তা বোধগম্য নয়,” বলেন হাছান মাহমুদ।

সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত বিএনপি নেতাদের সংসদে যোগ দেওয়ার বিষয়ে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, “যারা তাদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে, তারা সংসদে তাদের কথা বলার জন্যই করেছে, সংসদে না যাওয়ার জন্য নয়।

“সুতরাং শপথ নেওয়া তাদির দায়িত্ব এবং কর্তব্য। আমি মনে করি তারা সে দায়িত্ব পালন করবেন, কারণ তাতে বিএনপিরই মঙ্গল।”

বিএনপি নেতারা রাজপথে যে কথা বলছেন, সেটা তারা সংসদে গিয়ে বলার ‘সুযোগ পাবেন’ বলেও আশ্বাস দেন তথ্যমন্ত্রী।

শিল্পকলা একাডেমিতে শুক্রবার আলোকচিত্র প্রদর্শনী ‘রূপসী বাংলা’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রয়াত তিন ফটো সাংবাদিক মোজ্জাম্মিল হোসেন, মোশারফ হোসেন (লাল ভাই) ও মোহাম্মদ জহিরুল হকের পরিবারের হাতে সম্মাননা তুলে দেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেন, “কোনো শর্তে বিএনপি সংসদে যোগ দেবে এমন কোনো বিষয়ই নেই। তারা নির্বাচিত হয়েছেন যোগ দেওয়ার জন্য। সেটি না করে, শপথ না নিয়ে, ভোটদাতাদের অবজ্ঞা করা অনুচিত বলেই আমি মনে করি।”

শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালা মিলনায়তনে বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত তিন দিনব্যাপী ‘রূপসী বাংলা জাতীয় ফটো প্রদর্শনী’র উদ্বোধন করেন তথ্যমন্ত্রী।

নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, “দলীয় কাজে তথ্যচিত্র নির্মাণ করার সময় জনগণের ওপর বিএনপির পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ ও নানা অত্যাচারের সাক্ষী আলোকচিত্রগুলো আমাকে বহুবার কাঁদিয়েছে, আবেগাপ্লুত করেছে। ফটোসাংবাদিকরাই এর মূল, তারাই কালের সাক্ষ্য ধারণ করে রাখেন।”

মন্ত্রী বলেন, “আলোকচিত্র মানুষের তৃতীয় নয়ন খুলে দিতে পারে, সংবাদকে পূর্ণতা দিতে পারে, এমনকি একটি আলোকচিত্র নিজেই হয়ে উঠতে পারে সংবাদ।’”  

সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।  

এ অনুষ্ঠানে প্রয়াত তিন ফটোসাংবাদিক মোশাররফ হোসেন লাল, এস এম মোজাম্মিল হোসেন ও মোহাম্মদ জহিরুল হককে মরণোত্তর সম্মাননা দেওয়া হয়।

এবারের রূপসী বাংলা আলোকচিত্র প্রদর্শনীর প্রতিযোগিতায় আব্দুল্লাহ অপু, জাকির হোসেন চৌধুরী ও সোহেল আহমেদ যথাক্রমে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুরস্কার পেয়েছেন।