নিউ জিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের মসজিদে সন্ত্রাসী হামলার নিহত ও আহতের ঘটনায় শোক ও সংহতি জানাতে সোমবার ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই আহ্বান জানান তিনি।
কামাল বলেন, “আমাদের স্বাধীনতা যে অর্জন যেটা হল, এদেশের সকল মানুষ সমান অধিকারের অধিকারী হবে। ধর্মকে নিয়ে মানুষের মানুষের মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টি করা, বিভেদ-বিভাজন সৃষ্টি করা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়্।
“আসুন এটাকে বাস্তবে রূপান্তরিত করার জন্য সেই পরিবেশ, সেই সংস্কৃতি, সেই মূল্যবোধ সারা দেশে ছড়িয়ে দেই। এটাকে ধরে নিয়ে আগামীকাল আমাদের স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করি।”
কামাল বলেন, “পাকিস্তান আমলে সম্প্রদায়িকতাকে লালন করা হয়েছে, ধর্মকে অপব্যবহার করা হয়েছে মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করার জন্য।
“আমি ভুলব না সেটা যে, আমাকে একাত্তরে যখন ধরে নিয়ে গেল, তখন প্রশ্ন করা হল- তুমি মুসলমান না বাঙালি? আমি হেসে বললাম, এই প্রশ্নটা অর্থহীন। একটা হলো ধর্ম, একটা হলো জাতীয় পরিচয়। একটার বিপরীত আরেকটা হয় না।”
দেশের বিভেদ-বিভাজনের রাজনীতির প্রতি ইঙ্গিত করে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না সরকারের উদ্দেশে বলেন, “আহ্বান জানাই, ঘৃণা ছাড়েন, বিভাজনের নীতি ছাড়েন। দেশকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাওয়ার নীতি ছাড়েন।
“আর যদি না করেন তাহলে আপনাকে প্রতিরোধ করবার জন্য অবশ্যই আমি আমার সমস্ত শক্তি নিয়োজিত করবো। এখনকার সময়ে এটাই আমাদের শিক্ষা হওয়া উচিৎ।”
নিউ জিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে হামলার পর সেদেশের প্রধানমন্ত্রী ও তার সরকারের ভুমিকার প্রশংসা করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, “আমাদের দেশে বিভিন্ন সময়ে অনেক নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু তার জন্য আমরা কাউকে লজ্জিত হতে দেথি নাই। কাজেই নিউ জিল্যান্ডের ঘটনা থেকে আমাদের শেখার অনেক কিছু আছে।”
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বলেন, “বিশ্বের সকল দেশের জন্যই নিউ জিল্যান্ডের অতি সাম্প্রতিক দৃষ্টিভঙ্গি, অভিব্যক্তি ও কর্মপন্থা দিক নির্দেশনামূলক হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
মজিবুর রহমান মনজুর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী, সাবেক সচিব সচিব এএইচএম মোফাজ্জল করীম, অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল ফজলে এলাহী আকবর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, অধ্যাপক আসিফ নজরুল, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাহদীন মালিক, মাওলানা কামালউদ্দিন জাফরী, মাওলানা আবদুর রব ইউসুফী, সারোয়ার হোসেন, রুমিন ফারহানা।