খালেদাকে অন্য কারাগারে নেওয়ার ‘চক্রান্ত’ হচ্ছে: রিজভী

দুর্নীতি মামলায় কারাবন্দি খালেদা জিয়াকে অন্য কারাগারে স্থানান্তরের পরিকল্পনা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 March 2019, 02:18 PM
Updated : 12 March 2019, 02:18 PM

মঙ্গলবার নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, “কোনো স্থানান্তরের ষড়যন্ত্র দেশবাসী মেনে নেবে না। আমরা মানব না। দেশনেত্রীকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে।”

ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগার দুই বছর আগেই বন্দিদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল কেরানীগঞ্জে নির্মিত নতুন কারাগার ভবনে। গতবছর ফেব্রুয়ারিতে জিয়া এতিমখানা দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার সাজা হলে তাকে নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কারাগারের একটি ভবনে রাখা হয়। সেখানে তিনিই একমাত্র বন্দি। 

সম্প্রতি কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়, খালেদা জিয়াকে সরিয়ে কেরানীগঞ্জের রাজেন্দ্রপুর এলাকায় নতুন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া জেলখানায় ‘কষ্টে আছেন’ মন্তব্য করে রিজভী বলেন, “আমরা জানতে পেরেছি, দেশনেত্রীর স্বাস্থ্যের গুরুতর অবনতি ঘটেছে। গত চার দিন তিনি অন্যের সাহায্য ছাড়া বিছানো থেকে নামতে পারছেন না। হুইল চেয়ারে বসতেও তার কষ্ট হচ্ছে; ঠিকমতো বসতে পারছেন না।”

৭৩ পেরুনো খালেদা জিয়াকে গত পাঁচ মাস ধরে ‘বিনা চিকিৎসায় রাখা হয়েছে’ অভিযোগ করেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘‘সরকারকে বলব, এই ভয়ঙ্কর চরম বিপজ্জনক চক্রান্ত থেকে সরে আসুন। দেশনেত্রীর কোনো ক্ষতি হলে এর সম্পূর্ণ দায় আপনাদের ওপরই বর্তাবে। জনগণ আপনাদের রেহাই দেবে না।”

মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ী সরকার খালেদা জিয়াকে গত রোববার ঢাকার বঙ্গবন্ধু মেডিকল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে নেওয়ার পরিকল্পনা করলেও তিনি রাজি হননি বলে কারা কর্তৃপক্ষ সেদিন জানায়।

বিএনপি নেতাদের পক্ষ থেকে পরে বলা হয়, খালেদা ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে চান, বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে নয়।   

রিজভী বলেন, “পিজির (বঙ্গবন্ধু মেডিকেল) চিকিৎসার ওপর তো প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে কোনো মন্ত্রীরই ভরসা নেই। এক বড় মন্ত্রীকে ভর্তির পর জীবনহানির আশঙ্কায় তাড়াহুড়া করে সিঙ্গাপুরে নিয়ে গেছে। সেই পিজি হাসপাতালে আমাদের দেশনেত্রীর কোনোভাবেই চিকিৎসা হতে পারে না। এই হাসপাতালের চিকিৎসার প্রতি সরকারের মন্ত্রীদের মত আমাদেরও অনাস্থা।”

বিএনপি নেত্রী ‘জীবন ঝুঁকিতে’ রয়েছেন দাবি করে রিজভী বলেন, “তাকে এখুনি ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে। সেখানে যে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা আছেন তার অধীনে তিনি চিকিৎসা নেবেন। এজন্য রাষ্ট্রীয় অর্থ দিতে হবে না। দেশনেত্রী ব্যক্তিগত অর্থেই চিকিৎসা নিতে চান। আমাদের আহ্বান, আজকের মধ্যে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে তাকে বিশেষায়িত ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তির সুযোগ দিন।”

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে রিজভী বলেন, “জনগণের নেত্রীকে মুক্তি দিয়ে জনগণের মাঝে ফিরে আসতে দিন। তাকে প্রাণে বাঁচতে দিন। তিনি এদেশেই চিকিৎসা নেবেন। দেশনেত্রীকে উপযুক্ত চিকিৎসা গ্রহণ করে সুস্থ হওয়ার সুযোগ দিন।”

অন্যদের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য সাহিদা রফিক, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, আবদুল আউয়াল খান, শামসুজ্জামান সুরুজ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।