নির্বাচনে বিরোধীদের বিপর্যয়ের কারণে জাপা বিরোধী দলে: জিএম কাদের

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট থেকে নির্বাচন করলেও সংসদে বিরোধী দলের আসনে বসার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিলেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের।

সংসদ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 March 2019, 05:57 PM
Updated : 11 March 2019, 05:57 PM

সোমবার সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি বলেন, “মহাজোটগতভাবে ভোটে অংশ নেওয়ার পর আওয়ামী লীগের সঙ্গে সরকারেও থাকার কথা ছিল। কিন্তু যাদের বিরুদ্ধে নির্বাচন করেছি তাদের বিপর্যের কারণে সবচেয়ে ভালো বিকল্প হয়ে দাঁড়ায় বিরোধী দলের আসনে বসার।”

আওয়ামী লীগের সঙ্গে আলাপ আলোচনার মাধ্যমেই তারা বিরোধী দলের ভূমিকায় বসেছেন জানিয়ে জিএম কাদের বলেন, “এই ভূমিকাকে পাতানো খেলার সঙ্গে তুলনা করছেন অনেকে। কথা উঠেছে এটি কৃত্রিমভাবে তৈরি। এটি মেকি বিরোধী দল। কিন্তু এটা ঠিক নয়।

“বিরোধী দলের সদস্য সংখ্যা বেশি হলে বেশি হইচই হত। কিন্তু সংসদের কোনো সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। ১৯৯০ সালের পর প্রতিটি সংসদেই সরকারি দল যা চেয়েছে, তা হয়েছে। এজন্য বিরোধী দল সংসদে থাকতে পারেনি।”

এ অবস্থায় সংসদকে প্রাণবন্ত করতে যথেষ্ট সময় ও সুযোগ চেয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের ছোট ভাই কাদের।

তিনি বলেন, “সমালোচনাকে শত্রুতা মনে করলে হবে না। সহায়ক শক্তি হিসেবে মনে করতে হবে। শত্রু মনে করা যাবে না।”

সরকারেরর কার্যক্রম ও অর্থনৈতিক অগ্রগতি সম্পর্কে জি এম কাদের বলেন, “উচ্চ প্রবৃদ্ধি জনগণের কাছে একটা সংখ্যা মাত্র। কী লাভ হলো এটা বড় বিষয়। এর বড় বিষয় হচ্ছে বেকার সমস্যা সমাধান। এই বেকার সমস্যা সমাধান হয়নি। সিপিডি বলেছে, উচ্চ প্রবৃধির সুফল জনগণ পাচ্ছে না। ৪ কোটি ৮২ লাখ কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী বেকার। এক বছরে বেকারের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ১৭ লাখ। আয় বৈষম্য বেড়ে যাচ্ছে।”

তিনি বলেন, “অবকাঠামো নির্মাণ খরচ আশপাশের দেশের তুলনায় অনেক বেশি। সড়ক নির্মাণে সবচেয়ে বেশি খরচ বাংলাদেশে। দুর্নীতি ও সময়মতো কাজ শেষ না হওয়ার কারণে ব্যয় বাড়ছে। ঢাকা–মাওয়া চার লেন প্রকল্পে ভারতের সড়কের চেয়ে ১০ গুণ ব্যয় বেশি। উড়াল সড়কের নির্মাণ খরচ ভারতের চেয়ে সাড়ে চারগুণ বেশি।”

সুশাসন প্রসঙ্গে জি এম কাদের বলেন, “৪৬৬ জন গত বছর বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। ধর্ষণ, হত্যা ও নারী নির্যাতনও বিপুল। সড়ক দুর্ঘটনায় গড়ে প্রতিদিন ২০ জন মারা গেছেন।”

এর আগে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ বলেন, “দেশে ঐক্যমত্যের প্রয়োজন। নতুবা দেশকে এগিয়ে নেওয়া যাবে না। দশম সংসদে আমরা সর্বাত্মক সাহয্য করেছি। আলোচনা, সমালোচনা ও সহযোগিতা করেছি। এতটা সুন্দরভাবে স্বাধীনতার পর সংসদ চলেনি। আমরা দেখেছি, বিরোধী দল সরকারের কাজ বাধাগ্রস্ত করত। আমরা উন্নয়ন প্রকল্প এগিয়ে নেওয়ার জন্য সহযোগিতা করেছি।”

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ অসুস্থ জানিয়ে তার স্ত্রী রওশন বলেন, “তিনি (এরশাদ) ধীরে ধীরে সুস্থ হচ্ছেন। সুস্থ হলেই সংসদে আসবেন।”

আলোচনায় আরও অংশ নেন আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সংসদ সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, প্রধান হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী, সংসদ সদস্য আবু রেজা মোহাম্মদ নেজামুদ্দীন নদভী।