বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে কীভাবে খালেদার সুচিকিৎসা সম্ভব, প্রশ্ন রিজভীর

কারাবন্দি খালেদা জিয়া কেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে চান না, সেই ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে দেশের শীর্ষ পর্যায়ের এই সরকারি হাসপাতালের সক্ষমতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 March 2019, 01:57 PM
Updated : 11 March 2019, 01:57 PM

তিনি প্রশ্ন রেখেছেন, যে হাসপাতালে অন্য হাসপাতাল থেকে ক্লিনিক্যাল যন্ত্রপাতি ধার করে আনতে হয়, সেখানে কীভাবে সুচিকিৎসা সম্ভব?

সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, “পত্রিকায় লিখেছে, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গুরুতর অসুস্থ হয়েছিলেন। সেই অসুস্থতার সাপোর্ট পিজি (বঙ্গবন্ধু মেডিকেল) দিতে পারেনি, ল্যাব এইড থেকে যন্ত্রপাতি আনতে হয়েছে। তাহলে সেই হাসপাতালে দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রীকে কী চিকিৎসা দেবেন?”

জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট ও জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১৭ বছরের দণ্ড নিয়ে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

৭৪ বছর বয়সী খালেদা জিয়া আর্থ্রাইটিসসহ বয়সজনিত বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছেন। কারাগারে তার স্বাস্থ্যের ‘চরম অবনতি’ হয়েছে দাবি করে তাকে ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে স্থানান্তরের আহ্বান জানিয়ে আসছেন বিএনপি নেতারা।

আদালতের নির্দেশে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে সরকার খালেদা জিয়াকে রোববার বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে স্থানান্তরের যাবতীয় প্রস্তুতি নেয়। কিন্তু পরে কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, খালেদা জিয়া বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে যেতে রাজি নন।

এর কারণ ব্যাখ্যা করে ড্যাব নেতা ফরহাদ হালিম ডোনার রোববার সাংবাদিকদের বলেন, খালেদা জিয়া বরাবরই ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে এসেছেন। সে কারণে তিনি সেখানেই যেতে চান।

মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ী খালেদা জিয়াকে গত বছরের ৭ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়েছিল। সে সময় প্রায় এক মাস চিকিৎসা শেষে আবার তাকে কারাগারে ফিরিয়ে নেওয়া হয়।

সে প্রসঙ্গ টেনে রুহুল কবির রিজভী সোমবারের সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “কী চিকিৎসা দেবেন তার দৃষ্টান্ত তো আছেই, চিকিৎসার মাঝখানে দেশনেত্রীকে কারাগারে ফেরত পাঠানো হয়েছে।”

এই বিএনপি নেতার দাবি, খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য যে ‘আধুনিক যন্ত্রপাতি’ দরকার, তা বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে নেই।

“সেটা অক্ষরে অক্ষরে প্রমাণিত হল ওবায়দুল কাদেরের সময়ে তার পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ল্যাবএইড থেকে যন্ত্রপাতি আনার মধ্য দিয়ে। আর কোনো প্রমাণ দেওয়ার দরকার আছে আপনাদের কাছে? আজকে কেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া পিজিতে যেন চান না? কারণ সেখানে কোনো চিকিৎসা নেই।”

খালেদা জিয়াকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানিয়ে রিজভী বলেন, “মিডনাইট ভোটের সরকার প্রধানের প্রতিহিংসার তুষের আগুন ধিকিধিকি জ্বলার কারণেই বেগম খালেদা জিয়া কারান্তরালে, তাকে উন্নত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রলীগকে বিজয়ী করতে কাজ করেছে অভিযোগ করে রিজভী বলেন, ‘‘আজ ডাকসু নির্বাচনকেও কলঙ্কিত করা হল। গত রাতেও ব্যালট বাক্স ভরানো হয়েছে যার প্রমাণ পাওয়া গেল কুয়েত মৈত্রী হলে বস্তাভর্তি সিল মারা ব্যালট উদ্ধারের মাধ্যমে। ২৯ ডিসেম্বরের মধ্যরাতের ভোটের সংস্কৃতি থেকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বের হতে পারেনি।”

নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে দলের ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, প্রচার সম্পাদক শহিদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সাবেক ছাত্র নেতা মনির হোসেন, রকিবুল ইসলাম বকুল, সেলিমুজ্জামান সেলিম, হায়দার আলী লেলিন, আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন, ওমর ফারুক সাফিন, আমিনুল ইসলাম, ছাত্রদলের সভাপতি রাজীব আহসান উপস্থিত ছিলেন।