শপথ নিয়ে সংসদ অধিবেশনে সুলতান মনসুর

দল থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার পর সংসদ অধিবেশনে যোগ দিয়েছেন ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য সুলতান মো. মনসুর আহমেদ।

সংসদ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 March 2019, 01:53 PM
Updated : 7 March 2019, 02:12 PM

বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর কাছে শপথ নেন সুলতান মনসুর। তার কয়েকঘণ্টা পর দল গণফোরাম থেকে বহিষ্কৃত হন তিনি।

সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হয় জাতীয় সংসদের বৈঠক। তখনই তাকে দেখা যায় অধিবেশন কক্ষে।

স্পিকারের আসনের বাম পাশে বিরোধী দলের আসনের দ্বিতীয় সারিতে সুলতান মনসুরকে স্থান দেওয়া হয়েছে।

এই সংসদেই ১৯৯৬ সালে ছিলেন সুলতান মনসুর; তখন তিনি আওয়ামী লীগের টিকেটে নির্বাচিত হয়ে সরকারি দলের আসনে ছিলেন।

বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ নিয়ে সংসদে এক অনির্ধারিত আলোচনায় বক্তব্যও দেন তিনি। 

শপথ নেওয়ার পর সুলতান মনসুর সাংবাদিকদের বলেছিলেন, জোটের শীর্ষ নেতা অর্থাৎ কামাল হোসেনকে ‘জানিয়েই’ তিনি শপথ নিয়েছেন।

তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বিকালে মতিঝিলে দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসে সুলতান মনসুরকে গণফোরাম থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দলটির সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু বলেন, কামাল হোসেনের ‘নির্দেশেই’ এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

সুলতান মনসুরকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটি থেকেও অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে বলে জানান মন্টু, যে জোটে গণফোরাম ছাড়াও রয়েছে বিএনপি, কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগ, জেএসডি ও নাগরিক ঐক্য।

একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে কামাল হোসেনের উদ্যোগে বিএনপিকে নিয়ে এই জোট গঠিত হয় এবং জোটের প্রায় সব প্রার্থী বিএনপির ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে অংশ নিয়েছিলেন।

সুলতান মনসুরও মৌলভীবাজার-২ আসনে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী হন। তিনিসহ জোটের মোট আটজন জিতলেও হেরে যান বাকি সবাই।

ফল ঘোষণার পর ‘ভোট ডাকাতি’র অভিযোগ তুললেও কামাল হোসেন ঐক্যফ্রন্ট থেকে বিজয়ীদের শপথ নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। কিন্তু পরে বিএনপির অনড় অবস্থানের মধ্যে জোটের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ঐক্যফ্রন্ট থেকে নির্বাচিত কেউ সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেবে না।

কিন্তু এর মধ্যে গণফোরামের হয়ে নির্বাচনে জিতে আসা সুলতান মনসুর ও মোকাব্বির খান শপথ নেওয়ার আগ্রহ জানিয়ে চিঠি দেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীকে।

শেষ মুহূর্তে মোকাব্বির দলের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় থেকে বৃহস্পতিবার সংসদ ভবনে না গেলেও সুলতান মনসুর গিয়ে শপথ নেন।

শপথ নেওয়ার পর ‘জয় বাংলা-জয় বঙ্গবন্ধু’ বলেন আওয়ামী লীগের সাবেক এই সংগঠনিক সম্পাদক, যিনি ২০০৭ সালে জরুরি অবস্থার সময় সংস্কারপন্থি হিসেবে চিহ্নিত হয়ে দলে অপাঙক্তেয় হয়ে পড়ার কয়েক বছর পর ভিড়েছিলেন আওয়ামী লীগেরই এক সময়ের নেতা কামাল হোসেনের সঙ্গে।

ধানের শীষ প্রতীকে ভোটে জয়ী হয়ে জোটের সিদ্ধান্ত অমান্য করে সুলতান মনসুর শপথ নেওয়ায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে ঘটনাটিকে ‘ছলনা’ বলেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।