ঐক্যফ্রন্টের গণশুনানি দুদিন এগিয়েছে

সংসদ নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের গণশুনানি হবে আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে, যাতে বিচারকের আসনে থাকবেন জোটের শীর্ষনেতা কামাল হোসেন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Feb 2019, 01:42 PM
Updated : 19 Feb 2019, 01:48 PM

ঢাকার আর কোথাও এই আয়োজনের সুযোগ না পাওয়ার পর মঙ্গলবার ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির এক বৈঠকে কর্মসূচি দুদিন এগিয়ে এনে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতিকে স্থান হিসেবে বেছে নেওয়া হয়।

বৈঠকের পর কামাল সাংবাদিকদের বলেন, “আমাদের গণশুনানি ছিল ২৪ তারিখ। এটি আগামী ২২ তারিখ শুক্রবার হবে। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির মিলনায়তনে এই গণশুনানি সকাল ১০টায় শুরু হবে এবং বিকাল ৪/৫টা পর্যন্ত চলবে। এটাই আজকের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে।”

দুদিন কেন এগিয়ে আনা হল- প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “কোথাও জায়গা পাওয়া যাচ্ছিল না, যেহেতু আমরা আইনজীবী সমিতির মিলনায়তনটি পেয়েছি ২২ তারিখ। সেজন্য গণশুনানির তারিখ এগিয়ে আনা হয়েছে।”

গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ‘ভোট ডাকাতি’ করে জিতেছে বলে অভিযোগ তোলার পর এই গণশুনানি করার উদ্যোগ নেয় বিএনপি নেতৃত্বাধীন এই জোট।

এই গণশুনানির থেকে কী অর্জন করবে ফ্রন্ট- জানতে চাইলে কামাল বলেন, “সংবিধানে লেখা আছে, জনগণ ক্ষমতার মালিক। সেদিন জনগণ জানতে পারবে একাদশ (সংসদ) নির্বাচনে কী ঘটেছিল? তার বাস্তব অভিজ্ঞতা প্রার্থীরা তুলে ধরবেন।”

জামায়াত প্রশ্নে অস্পষ্ট উত্তর

এই গণশুনানিতে জোটের শরিক দল বিএনপি, জেএসডি, গণফোরাম, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, নাগরিক ঐক্য ছাড়াও বাম ও গণতান্ত্রিক যেসব দল নির্বাচনে অংশ নিযেছে তাদের আমন্ত্রণ জানানো হবে বলে জানান ঐক্যফ্রন্ট নেতা আ স ম আবদুর রব।

জামায়াতে ইসলামীর যে ২২ জন প্রার্থী ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেছে তাদেরকে এই গণশুনানিতে আমন্ত্রণ জানানো হবে কি না-এ প্রশ্নে কামাল বলেন, “এগুলো আমার জানা নেই।”

তখন রব বলেন, “স্যার যেটা বলেছেন, ঐক্যফ্রন্টের মধ্যে সকল প্রার্থী, প্লাস বাইরে বাম ঐক্যজোটসহ প্রগতিশীল দলের যারা অংশগ্রহণ করেছেন, তাদের দাওয়াত দেয়া হয়েছে। ঐক্যফ্রন্টের মধ্যে যদি অন্য কোনো দল থাকে, ঐক্যফ্রন্টের মধ্যে যেসব দল আছে তাদের এবং বাম গণতান্ত্রিক প্রগতিশীল যেসব দল আছে, তাদেরকে আমন্ত্রণ জানানো হবে।”

“আপনার প্রশ্ন যদি এর মধ্যে থাকে, আমার বলার কিছু নেই, স্যারও (কামাল হোসেন) কিছু বলবেন না। আর যদি না থাকে, এই প্রশ্ন অবান্তর,” প্রশ্নকর্তা সাংবাদিককে উদ্দেশ করে বলেন রব।

এসময় গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু বলেন, “নির্বাচনে ফ্রন্টে জামায়াত ছিল না।”

এ সময় গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী বলেন, “আপনারা তো উদ্দেশ্যমূলক প্রশ্ন করেন। বলা হল তো জামায়াতে ইসলামী ছিল না।”

এই নির্বাচনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলের শরিক জামায়াতের ২২ নেতা ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী ছিলেন। নিবন্ধন না থাকায় ভোট করতে এই কৌশল নেয় দলটি।

কামাল হোসেন দাবি করছেন, জামায়াত নেতারা যে বিএনপির প্রতীকে নির্বাচন করবেন, তা তাকে জানানো হয়নি।

তবে আওয়ামী লীগ নেতারা এভাবে জামায়াতকে পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়ায় কামালসহ ঐক্যফ্রন্ট নেতাদেরও দায়ী করছেন।

নির্বাচনে অংশ নেওয়া ইসলামী আন্দোলনকে গণশুনানিতে আমন্ত্রণ জানানো হবে কি না- প্রশ্ন করা হলে রব বলেন, “এটা বিবেচনা করে দেখা হবে।”

বিকালে মতিঝিলে কামাল হোসেনের পেশাগত চেম্বারে ঐক্যফ্রন্টের এই বৈঠকে বিএনপি নেতা আবদুল মঈন খান ও আবদুস সালাম উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়াও ছিলেন গণফোরামের জগলুল হায়দার আফ্রিক, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের হাবিবুর রহমান তালুকদার খোকা, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, শহিদুল্লাহ কায়সার, বিকল্পধারার নুরুল আমিন ব্যাপারী, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী।