শাজাহানকে নিয়ে কমিটি ‘হাস্যকর’: রিজভী

সড়কে দুর্ঘটনা রোধে গঠিত কমিটিতে শাজাহান খানকে রাখাকে ‘হাস্যকর’ বলেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।   

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Feb 2019, 12:01 PM
Updated : 5 May 2019, 01:45 PM

মঙ্গলবার নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সড়কে বিশৃঙ্খলার জন্য সাবেক নৌমন্ত্রী ও সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি শাজাহান খানকে দায়ী করে একথা বলেন তিনি।

রিজভী বলেন, “সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার নামে সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খানকে আহ্বায়ক করে যে কমিটি গঠন করা হয়েছে, তা রীতিমতো হাস্যকর।

“এই শ্রমিক নেতার কারণে যত প্রাণহানি ও বিশৃঙ্খলা ঘটেছে। ঘটনাটা কি এইরকম দাঁড়াচ্ছে না যে চোরের কাছে চুরির বিচার দেওয়া? এরকমই তো দাঁড়াচ্ছে।”

দুই দিন আগে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে ১৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিল। শাজাহান খানকে এই কমিটির প্রধান করা হয়েছে।

শাজাহান খানকে এই কমিটিতে  রেখে সড়ক দুর্ঘটনা রোধ সম্ভব হবে না বলে মন্তব্য করেন বিএনপি নেতা রিজভী।

তিনি বলেন, “তাকে (শাজাহান খান) আহ্বায়ক করে যে কমিটি গঠন করা হয়েছে তা জাতির সঙ্গে তামাশা মাত্র। মিডনাইট সরকারের এটি জনগণের সাথে আরেকটি শ্রেষ্ঠ প্রহসন।

“এতে সড়কে বিশৃঙ্খলা ও মর্মান্তিক দুর্ঘটনা কত যে পৃনরাবৃত্তি হবে তা বলাই বাহুল্য।”

‘‘অভিজ্ঞতার কারণে’ শাজাহান খানকে কমিটির প্রধানের দায়িত্ব দেওয়ার যুক্তি সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দিলেও শ্রমিক নেতা শাজাহান খানের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ‘‘যখনই সড়কের বিশৃঙ্খলা ও অব্যবস্থাপনা নিয়ে আন্দোলন হয়েছে তখনই এই শাজাহান খানরাই বাধার সৃষ্টি করেছে। সড়কে দুর্ঘটনা ও মর্মান্তিক মৃত্যুর জন্য এই নেতাই অনেকাংশে দায়ী।”

বিকল্প ছাড়া গ্যাস বন্ধের ঘোষণা ‘নিষ্ঠুর’

বিকল্প ব্যবস্থা ছাড়া ঢাকা মহানগরীতে ১২ ঘণ্টা গ্যাস বন্ধের ঘোষণাকে ‘নিষ্ঠুর কর্তৃত্ববাদী শাসনের প্রতিফলন’ বলে মন্তব্য করেছেন রিজভী।

তিনি বলেন, “মহানগরী ঢাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ আছে। এই বন্ধ আজকেই শুধু নয়, আরও কয়েকদিন এই ধরনের বন্ধ চলছে। বলা হচ্ছে প্রায় অর্ধেক মহানগরীতে গ্যাস সরবারহ আজকে বন্ধ থাকবে।

“বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না করে ঢাকা মহানগরীতে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ ঘোষণা নিষ্ঠুর কর্তৃত্ববাদী শাসনেরই প্রতিফলন বলে আমরা মনে করি।

‘‘এক ব্যক্তির শাসনের হুকুমের শাসন জারি আছে বলেই জনগণের চাহিদাগুলোকে পদদলিত করা হচ্ছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।”

রিজভী বলেন, ‘“এই যে উঁচু তলা বিল্ডিং, ঢাকাতে অন্য কোনো অপশন নেই। তাহলে কী করে তাদের চুলা জ্বলবে?”

নতুন ব্যাংকের বিরোধিতা

নতুন তিনটি ব্যাংক অনুমোদন করে ব্যাংক  ‘লুটের’ পথকে আরও প্রসারিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন রিজভী।

তিনি বলেন, “ব্যাংক লুটের কারণে দেশের ব্যাংকগুলোর যখন ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা তখন আবারো নতুন তিনটি ব্যাংকের অনুমোদন ব্যাংক লুটের পথকে আরও প্রসারিত করল।

“যখন পূর্বের ঢালাওভাবে অনুমোদিত ব্যাংকগুলো ধসে পড়ছে, তখন আবার তিনটি ব্যাংকের অনুমোদনে এটি সুস্পষ্ট যে, জনগণ ও দেশের সর্বশেষ সঞ্চয়টুকু শোষণ করতেই মিড নাইট সরকারের খয়ের খাঁদের নতুন তিনটি ব্যাংক দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়েছে।”

তিনি বলেন, “হয়তবা এরাই নানাভাবে শাসকগোষ্ঠীকে উপকৃত করেছে অবৈধ কর্মকাণ্ডে, সেজন্য তাদেরকেই এই ব্যাংকগুলো দেওয়া হয়েছে। জনস্বাস্থ্য ও রাষ্ট্রীয় অর্থনীতি ধ্বংস করে নিশীথ রাতের ভোটে সৃষ্টি আওয়ামী সরকার নিজের আখের গোছাতেই এখন রীতিমতো ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।”

সংবাদ সম্মেলনে আরো ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবুল খায়ের ভুঁইয়া, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, এবিএম মোশাররফ হোসেন, আবদুস সালাম আজাদ, তাইফুল ইসলাম টিপু প্রমুখ।