জিয়ার নাম মুছে ফেলতে আবার ষড়যন্ত্র: রিজভী

চট্টগ্রামের ‘জিয়া স্মৃতি জাদুঘর’ এর নাম পরিবর্তন ও ঢাকায় ‘জিয়ার সমাধি’ সরিয়ে ফেলতে সরকার ফের ষড়যন্ত্র শুরু করছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Feb 2019, 08:50 AM
Updated : 13 Feb 2019, 08:50 AM

সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, “হিংস্রাশ্রয়ী সরকার বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসা ও আবেগের উৎস স্বাধীনতার মহান ঘোষক ও বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীর উত্তমকে নিয়ে এখন নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে।

“শেরে বাংলা নগরে তার মাজার সরিয়ে ফেলার নীলনকশা বাস্তবায়ন শুরু করার পর এবার চট্টগ্রামে জিয়া স্মৃতি জাদুঘর দখল করতে মাছে নেমেছে তারা। গত সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে শেখ হাসিনার সম্মতিতে জিয়া স্মৃতি জাদুঘরকে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে রূপান্তরের জন্য প্রস্তাব এনেছে মিডনাইট ইলেকশনের শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। গতকাল নামফলক কালি দিয়ে মুছে দিয়েছে ছাত্রলীগের ক্যাডাররা।”

গত সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে চট্টগ্রামের সাংসদ নওফেল ‘জিয়া স্মৃতি জাদুঘরের’ নাম বদলে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর করার প্রস্তাব করলে প্রধানমন্ত্রী তাতে সম্মতি দেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে।

এর পরদিনই মঙ্গলবার জাদুঘরের নামফরকে থাকা জিয়ার নাম কালি দিয়ে ঢেকে দেয় ছাত্র ফোরাম নামের একটি সংগঠন, যার নেতৃত্বে রয়েছেন সরকার সমর্থক ছাত্রলীগের নেতারা।  

রিজভী বলেন, “এটা শুধু নোংরামীই নই, কাপুরুষতা। শাসকগোষ্ঠির পৃষ্ঠপোষকতায় দেশের স্বাধীনতার ঘোষক ও একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে অপমান করার অর্থই হল মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাকে অপমান করা।”

তিনি বলেন, “একাত্তরে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের স্বাধীনতা চায়নি। স্বাধীনতা নিয়ে আওয়ামী নেতৃবৃন্দের দ্বিধা সর্বজনবিদিত। এই কারণে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তহীনতায় একজন মেজর জিয়া যখন হতাশাগ্রস্ত জাতির সামনে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর স্পর্ধিত বার্তা দেন তখন ওরা হতবাক, ক্ষুব্ধ ও অনুশোচনাগ্রস্ত হয়ে পড়ে।

“ঐতিহাসিক ব্যর্থতার জন্যই শহীদ জিয়ার ওপর ওরা প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে ওঠে। সেজন্যই প্রতিহিংসা মেটাতে এখন শহীদ জিয়ার নাম ও কবরকেও নিশ্চিহ্ন করার ঘৃণ্য কর্মে মেতে উঠেছে।”

রাজনীতি থেকে প্রধানমন্ত্রীর অবসরের খবরকে স্বাগত জানিয়েছেন রিজভী।

মঙ্গলবার সফিপুরের আনসার একাডেমিতে এক অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে প্রধান রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়ার পর টুঙ্গীপাড়ায় গিয়ে থাকার কথা বলেন। 

রিজভী বলেন, “আমি প্রধানমন্ত্রীকে বলব, খুব ভালো খবর। জনগণ সেই মাহেন্দ্র দিনের ক্ষণ গণনা শুরু করেছে। কবে আসবে সেই সুখবর যে আপনি রাজনীতি থেকে অবসর নিচ্ছেন। আমরা সেই তারিখটা জানতে চাই।

“আমরা বিনীতভাবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করব- আপনি অবসর গ্রহণের সিদ্ধান্তটি দ্রুত কার্য্কর করুন, দ্রুত কার্য্কর করলে দেশে গণতন্ত্র ফিরে আসবে, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা হবে। আপনি যদি সত্যিই অবসরে যান তাহলে কমপক্ষে ভালো কাজগুলো করুন। মানুষের ক্ষোভ-ধিক্কার থেকে নিজেকে হেফাজত করুন। অনেক হয়েছে এবার রেহাই দিন।”

সংবাদ সম্মেলনে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবুল খায়ের ভুঁইয়া, আবদুস সালাম, কেন্দ্রীয় নেতা শাহজাহান চৌধুরী, আবদুস সালাম আজাদ, তাইফুল ইসলাম টিপু, বেলাল আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।