দে আর অল ব্রিলিয়ান্ট: কাদের

সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মনোনয়নে ত্যাগী ও তৃণমূলের নেতাদের প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে বলে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Feb 2019, 01:57 PM
Updated : 11 Feb 2019, 02:49 PM

সোমবার ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে ৪৩ জনের মনোনয়নপত্র নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়ার পর একথা বলেন তিনি।

মনোনীতদের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, “এবার আমরা অনেক সময় নিয়েছি। আমাদের সভাপতি শেখ হাসিনা সংরক্ষিত নারী আসনের বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে দেখে আসছেন।  অনেক যাচাই-বাছাই করা হয়েছে।

“দে আর অল ব্রিলিয়ান্ট, পোলাইট, কমিটেড এবং ডেডিকেটেড।”

দীর্ঘদিন ধরে দলের সঙ্গে আছেন, সাহসী ভূমিকা রেখেছেন এবং জেল-জুলুম-নির্যাতন সহ্য করেছে- এমন নেত্রীদেরই বেছে নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, “আমাদের দলের প্রতি কমিটেড, দেশ- মুক্তিযুদ্ধের প্রতিও তারা কমিটেড, আন্দোলন সংগ্রামে তাদের যে ত্যাগী ভূমিকা, সেটা আমরা গুরুত্ব দিয়েছি, অগ্রাধিকার দিয়েছি। আমাদের নেত্রীর সক্রিয় মতামতের ভিত্তিতে দলের দীর্ঘদিনের ত্যাগী কর্মীরা এবং মুক্তিযুদ্ধের পরিবার, এছাড়া সব অঙ্গনের প্রতিনিধি এখানে আছে। সংস্কৃতি অঙ্গন থেকে শুরু সকল পর্যায় থেকে নিয়েছি।”

একাদশ সংসদ নির্বাচনে প্রাপ্ত আসন সংখ্যার ভিত্তিতে সংসদের ৫০টি সংরক্ষিত নারী আসনের মধ্যে ৪৩টি পেয়েছে আওয়ামী লীগ। তাদের পাশাপাশি জাতীয় পার্টির চারজন, ওয়াকার্স পার্টির একজন এবং স্বতন্ত্ররা একজনের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। সোমবারই সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনয়নপত্র জমার শেষ দিন ছিল।

দলগুলোর প্রাপ্ত সাধারণ আসনের সংখ্যানুপাতে বণ্টিত নারী আসনে বিএনপির একটি আসন পাওয়ার সুযোগ থাকলেও তাদের এমপিরা শপথ না নেওয়ায় তাদের নারী আসন স্থগিত রয়েছে, তাই প্রার্থী একজন কম হয়েছেন।

অতিরিক্ত প্রার্থী না থাকায় আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সময়সীমা পার হওয়ার পর এই ৪৯ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হবেন।

আওয়ামী লীগের ৪৩ জন

ঢাকা থেকে সুবর্ণা মুস্তাফা, শিরীন আহমেদ, জিন্নাতুল বাকিয়া, শবনম জাহান শিলা ও নাহিদ ইজহার খান; চট্টগ্রাম থেকে খাদিজাতুল আনোয়ার ও ওয়াশিকা আয়েশা খানম; কক্সবাজার থেকে কানিজ ফাতেমা আহমেদ, খাগড়াছড়ি থেকে বাসন্তী চাকমা, কুমিল্লা থেকে আঞ্জুম সুলতানা ও আরমা দত্ত; ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম, গাজীপুর থেকে শামসুন্নাহার ভূঁইয়া ও রুমানা আলী; বরগুনা থেকে সুলতানা নাদিরা, জামালপুর থেকে হোসনে আরা, নেত্রকোণা থেকে হাবিবা রহমান খান (শেফালী) ও জাকিয়া পারভীন খানম;  পিরোজপুর থেকে শেখ এ্যানী রহমান, টাঙ্গাইল থেকে অপরাজিতা হক, সুনামগঞ্জ থেকে শামীমা আক্তার খানম, মুন্সিগঞ্জ থেকে ফজিলাতুন নেসা, নীলফামারী থেকে রাবেয়া আলীম, নরসিংদী থেকে তামান্না নুসরাত বুবলী, গোপালগঞ্জ থেকে নার্গিস রহমান, ময়মনসিংহ থেকে মনিরা সুলতানা, ঝিনাইদহ থেকে খালেদা খানম, বরিশাল থেকে সৈয়দা রুবিনা মিরা, পটুয়াখালী থেকে কাজী কানিজ সুলতানা, খুলনা থেকে গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার, টাঙ্গাইল থেকে খন্দকার মমতা হেনা লাভলী, দিনাজপুর থেকে জাকিয়া তাবাসসুম, নোয়াখালী থেকে ফরিদা খানম (সাকী), ফরিদপুর থেকে রুশেমা বেগম, কুষ্টিয়া থেকে সৈয়দা রাশেদা বেগম, মৌলভীবাজার থেকে সৈয়দা জোহরা আলাউদ্দিন, রাজশাহী থেকে আদিবা আনজুম মিতা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ফেরদৌসী ইসলাম জেসী, শরীয়তপুর থেকে পারভীন হক সিকদার, রাজবাড়ী থেকে খোদেজা নাসরীন আক্তার হোসেন, মাদারীপুর থেকে তাহমিনা বেগম, পাবনা থেকে নাদিয়া ইয়াসমিন জলি ও নাটোর থেকে রত্না আহমেদ।

এদের মধ্যে ফজিলাতুন নেসা ও ওয়াশিকা আয়েশা খানম ছাড়া সবাই এবারই প্রথম সংসদ সদস্য হতে চলেছেন। সংরক্ষিত আসনের এই প্রার্থীদের মধ্যে কয়েকজনকে সরাসরি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেওয়ার চিন্তা করেও পরে পিছিয়ে যেতে হয় বলে জানান ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, ভবিষ্যতে সংসদের সংরক্ষিত নারী আসন সংখ্যা কমানোর পক্ষে তার দল।

“এমনিতেই ২৫ বছরের জন্য অন্তর্ভুক্ত আছে। নারী ক্ষমতায়ন অনেক দূর এগিয়ে যাবে।”

‘কেয়ামত পর্যন্ত অভিযোগ করবে বিএনপি’

উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দেওয়ায় দলটির সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, জেতার সম্ভাবনা না দেখলে তারা সব সময় একতরফা নির্বাচনের অভিযোগ করে আসছে।

“তারা নির্বাচন হওয়ার আগেই হেরে যায়। নির্বাচন হওয়ার আগেই বিরূপ মন্তব্য করা, নালিশ করা তাদের পুরনো অভ্যাস।  এটা নিয়ে কারো কোনো মাথাব্যথা নেই। এটা হাস্যকর হয়ে গেছে। ”

বিএনপি দেশে-বিদেশে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করে ‘ব্যর্থ হয়েছে’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।

“বিএনপির নালিশের কোনো বাস্তবতা, সত্যতা নেই। সারা দুনিয়া এই নির্বাচনের ফলকে অভিনন্দন জানিয়েছে।”

এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, “জাতীয় নির্বাচনে যে ভরাডুবি হয়েছে, তাতে উপজেলা নির্বাচনে আরো শোচনীয় অবস্থা হবে। এই ভয়ে তারা নির্বাচনে অংশ নেবে না।

“বিএনপি যখন মনে করে কোনো নির্বাচনে জেতার সম্ভাবনা নেই, তখন তারা এই ধরনের অভিযোগ করে। কেয়ামত পর্যন্ত তারা অভিযোগ করবে।”