নাজমুল হুদা কারাগারে

ঘুষের মামলায় দণ্ডিত সাবেক মন্ত্রী নাজমুল হুদা আদালতে আত্মসমর্পণ করার পর তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন বিচারক।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Jan 2019, 07:29 AM
Updated : 6 Jan 2019, 09:08 AM

ঢাকার দ্বিতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক এইচ এম রুহুল ইমরান জামিন আবেদন নাকচ করে সাবেক বিএনপি নেতা হুদাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

২ কোটি ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে এ মামলায় নাজমুল হুদাকে সাত বছরের সাজা দিয়েছিল নিম্ন আদালত। ২০১৭ সালে হাই কোর্ট তার সাজা কমিয়ে চার বছরের কারাদণ্ড দেয়।

নির্বাচনের আগে গতবছর ১৯ নভেম্বর হাই কোর্টের ওই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করে সুপ্রিম কোর্ট। সেখানে ৪৫ দিনের মধ্যে নাজমুল হুদাকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়।

দুদকের আইনজীবী মোশররফ হোসেন কাজল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এই মামলায় সুপ্রিম কোর্ট নাজমুল হুদাকে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছিল। আজ তিনি হাজির হয়ে আত্মসমর্পণ করে জামিন চেয়েছিলেন। বিচারক তার জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।”

খালেদা জিয়ার সরকারের দুই বারের মন্ত্রী নাজমুল হুদা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন। পরে বিএনপি থেকে বেরিয়ে তিনি প্রথমে বিএনএফ গঠন করেন, ওই দলের কর্তৃত্ব হারানোর পর তিনি গঠন করেন তৃণমূল বিএনপি।

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোটে যোগ দিয়ে ঢাকা-১৭ আসন থেকে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে একাদশ সংসদ নির্বাচন করে হেরে যান। 

সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে ২০০৭ সালের ২১ মার্চ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপপরিচালক মো. শরিফুল ইসলাম ধানমণ্ডি থানায় মামলাটি দায়ের করেন।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, সাপ্তাহিক পত্রিকা ‘খবরের অন্তরালে’র জন্য মীর জাহের হোসেন নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে ২ কোটি ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নেন নাজমুল হুদা ও তার স্ত্রী সিগমা হুদা।

২০০৭ সালের ২৭ অগাস্ট বিশেষ জজ আদালতে এই মামলায় নাজমুল হুদাকে সাত বছরের কারাদণ্ড এবং আড়াই কোটি টাকা জরিমানা করে। পাশাপাশি তার স্ত্রী সিগমা হুদাকে তিন বছরের দণ্ড দেয়।

ওই রায়ের বিরুদ্ধে নাজমুল হুদা ও সিগমা হুদা আপিল করলে ২০১১ সালের ২০ মার্চ হাই কোর্ট তাদের খালাস দেয়।

রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদক ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে গেলে উভয় আবেদনের শুনানি করে সর্বোচ্চ আদালত ২০১৪ সালের ১ ডিসেম্বর হাই কোর্টের রায় বাতিল করে পুনঃশুনানির নির্দেশ দেয়। 

পরে মামলাটির পুনরায় শুনানি নিয়ে ২০১৭ সালের ৮ নভেম্বর হাই কোর্ট রায়ে নাজমুল হুদার সাত বছরের সাজা কমিয়ে চার বছরের কারাদণ্ড দেয়।

হাই কোর্টের ওই রায়ের পর নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ না করেই হাই কোর্টের সাজার বিরুদ্ধে আপিল শুনানির অনুমতি চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেন নাজমুল হুদা। কিন্তু ২০১৮ সালের ৭ জানুয়ারি সে আবেদনটি উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দেয় আপিল বিভাগ।

হাই কোর্টের রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, “যখন একজন ব্যক্তি সরকারের কোনো শীর্ষ পদে যায় এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করে, তখন ওই দুর্নীতি দেশের অর্থনীতি, জাতীয় স্বার্থ ও ভাবমূর্তির ব্যাপক ক্ষতি করে।”