বিএনপির ইশতেহার দেশবাসী প্রত্যাখ্যান করেছে: আ.লীগ

বিএনপির নির্বাচনী ইশতেহারে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা তুলে দেওয়ার যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে তাকে ‘তরুণদের সঙ্গে প্রহসন’ বলেছে আওয়ামী লীগ। 

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Dec 2018, 08:53 AM
Updated : 19 Dec 2018, 08:53 AM

বুধবার দুপুরে ধানমণ্ডিতে দলের সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, দেশবাসী বিএনপির অবান্তর ও কল্পনাপ্রসূত ইশতেহার প্রত্যাখ্যান করেছে।

তিনি বলেন, “দেশবাসী জানে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে বাংলাদেশ আবারও অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে। হত্যা-সন্ত্রাস, সংখ্যালঘু নির্যাতন, দুর্নীতি, দুর্বৃত্তায়নের অভয়ারণ্যে পরিণত হবে। শিক্ষাঙ্গনে অস্ত্রের ঝনঝনানি উঠবে, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ সমৃদ্ধ, সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ রাষ্ট্র নির্মাণের স্বপ্ন সুদূরপরাহত হবে। 

“তাই আগামী নির্বাচনে বাংলাদেশের জনগণ তাদেরকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করবে। আমরা বিএনপিকে আহ্বান জানাব আপনারা গণতান্ত্রিক রাজনীতির ধারায় ফিরে আসুন, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির রাজনীতি গ্রহণ করুন।”

নানক বলেন, “তরুণদের যৌক্তিক দাবি বিবেচনা করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নির্বাচনী ইশতেহারে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধির কথা বলেছে । কিন্তু বিএনপি তাদের ইশতেহারে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা পুরোপুরি তুলে দেওয়ার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তা বিভ্রান্তিকর ও মেধাবী তরুণদের সাথে প্রহসন মাত্র। সস্তা জনপ্রিয়তায় বিএনপির প্রতিশ্রুতি দেশের তরুণদের সঙ্গে প্রতারণা ছাড়া আর কিছুই না।

“বয়সসীমা নিয়ে এই ধরনের প্রতিশ্রুতি পৃথিবীর কোথাও নেই। এতে করে দেশে বেকারকত্বের সংকট আরো বৃদ্ধি পাবে।”

তিনি আরও বলেন, “একজন দুর্নীতিবাজ, অর্থপাচারকারী তারেক রহমানকে দলের চেয়ারম্যান বানাতে, যারা রাতের অন্ধকারে তাদের গঠনতন্ত্র সংশোধন করতে পারে, সে দলের মুখে দুর্নীতি, অর্থ পাচার রোধের অঙ্গীকার হাস্যকর।

“বিএনপি একদিকে দুর্নীতি ও মুদ্রা পাচার রোধের অঙ্গীকার করছে অন্যদিকে মনোনয়ন বাণিজ্যের মাধ্যমে হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করছে, যা তাদের মনোনয়নবঞ্চিত কর্মীদের বক্তব্যে প্রমাণিত হয়েছে।”
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, “গতকাল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ’ শিরোনামে ঘোষিত নির্বাচনী ইশতেহারে দেশের মানুষের মধ্যে যেমন ব্যাপক ব্যাপক উৎসাহ সৃষ্টি হয়েছে, অন্যদিকে বিএনপি ঘোষিত নির্বাচনী ইশতেহারে দেশবাসীকে চরম হতাশ ও বিভ্রান্ত করেছে। কোনো গণতান্ত্রিক রাজনীতি দলের কাছ থেকে এ ধরনের ইশতেহার দেশের মানুষ আশা করেনি।”

নানক বলেন, “মহান বিজয়ের মাসে ঘোষিত তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষাবলম্বন করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাভিত্তিক বাংলাদেশকে বরাবরের মতোই চরমভাবে আঘাত করেছে বিএনপির নির্বাচনী ইশতেহার। বিএনপির এই ইশতেহার নিবন্ধন বাতিল হওয়া রাজাকার ও আলবদরদের পোষণ ও পুনর্বাসনের ইশতেহার। বিএনপির এই ইশতেহার নিবন্ধন বাতিল হওয়া যুদ্ধাপরাধী, রাজাকার, আলবদরের দল জামায়াতকে রাজনৈতিক বৈধতা দেওয়ার ইশতেহার। বিএনপির এই ইশতেহার দুর্নীতি, দুর্বৃত্তায়ন, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদকে পৃষ্ঠপোষকতা দানের ইশতেহার।”

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, আহমদ হোসেন, বি এম মোজাম্মেল হক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আব্দুর সবুর, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আফজাল হোসেন, উপ-দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য মাহরুফা আখতার পপি এসময় উপস্থিত ছিলেন।