কামালের বহরে হামলা সরকারপ্রধানের নির্দেশে: রিজভী

সরকারপ্রধানের নির্দেশেই মিরপুরে বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ এলাকায় ঐক্যফ্রন্টের নেতা কামাল হোসেনের গাড়িবহরে হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Dec 2018, 11:33 AM
Updated : 14 Dec 2018, 11:33 AM

দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, “আক্রমনটি করা হয়েছে এই সরকার প্রধানের নির্দেশে। প্রতিটি মানুষেরই নিরাপদে জীবন-যাপন করার অধিকার আছে, এটা আইনগত ও সাংবিধানিক অধিকার। এরা (সরকার) সংবিধানকে মোটেই তোয়াক্কা করে না, আইনকে তো করেই না।”

শুক্রবার রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন থেকে কামালের গাড়িবহরে হামলার ওই ঘটনার ‘নিন্দা ও প্রতিবাদ’ জানান রিজভী।

তিনি বলেন, “কামাল হোসেন এদেশের প্রখ্যাত আইনজীবীই শুধু নন, তিনি দেশের সংবিধান প্রণেতা। দেশের মানুষের কাছে অত্যন্ত শ্রদ্ধার্ঘ একজন ব্যক্তি। … ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মতো মানুষও আক্রমণের শিকা হয়েছেন আওয়ামী ক্যাডারদের হাতে।“

গণফোরাম সভাপতি কামালের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা শুক্রবার সকাল সোয়া ৯টার দিকে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে গিয়ে শহীদ বেদীতে শ্রদ্ধা জানান।

জোটের নেতাদের মধ্যে জেএসডির আসম আবদুর রব, গণফোরামের জগলুল হায়দার আফ্রিক ও রেজা কিবরিয়া, বিএনপির আবদুস সালাম এবং গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন।

সেখান থেকে তারা বেরিয়ে এসে গাড়িতে ওঠার পর লাঠিসোঁটা নিয়ে ওই হামলার ঘটনা ঘটে। রব ও আফ্রিকের গাড়িসহ ৬/৭টি গাড়ি সেখানে ভাংচুরের শিকার হয়; রবের গাড়ি চালকসহ ১০/১২ জন নেতা-কর্মী হামলার আহত হন বলে ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের ভাষ্য। 

 এর সমালোচনা করে রিজভী বলেন, “শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের দিন আজ। এই ভাবগম্ভীর দিনটিতেও আওয়ামী লীগ আক্রমন করতে দ্বিধা করছে না। কারণ ওরা মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে যে মূল চেতনা সেটাকেই তারা প্রথমে হত্যা করেছেন স্বাধীনতার পরপর। সেটা হচ্ছে গণতন্ত্র।

আওয়ামী লীগের কাছে বুদ্ধিজীবী দিবস, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, একুশের ফ্রেব্রুয়ারির ‘কানাকড়ি মূল্য নেই’ মন্তব্য করে বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, “মূল্য নেই বলেই ওরা এসব দিনেও মানুষকে রক্তাক্ত করতে দ্বিধা করে না। সশস্ত্র ক্যাডাররা তাদের আস্তিনের নিচে লুকিয়ে রাখা অস্ত্র দিবালোকেও প্রদর্শন করতে একেবারে পারঙ্গম।”

রিজভী অভিযোগ করেন, কেবল ঢাকায় ঐক্যফ্রন্টের নেতা নন, দেশের বিভিন্ন স্থানে  ধানের শীষের প্রচারে থাকা নেতাকর্মীরা হামলা, গ্রেপ্তার, হয়রানির শিকার হচ্ছে।

“প্রতিদিন গ্রেপ্তার হচ্ছে। সব জায়গায় আমরা এ বিষয়টি জানাচ্ছি। অথচ সরকারি ও বৈধ কোনো সংস্থার কাছে থেকে পরিত্রাণ বিষয়ক কোনো আশ্রয় পাচ্ছি না। এমতাবস্থায় আমাদের নেতা-কর্মীদের নিজে থেকেই আত্মরক্ষার ব্যবস্থা গ্রহণ ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প থাকছে না।”

রিজভী বলেন, “আমি সরকারের যারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, বৈধ সংগঠন, পুলিশ-র‌্যাব, এদের কাছ থেকে যদি নিরাপত্তা না পাই তাহলে আমি কী করব? সেটা স্পষ্টভাবে দণ্ডবিধিতে আছে। তখন আমাকে নিজেই নিজের আত্মরক্ষা করতে হবে। তাছাড়া উপায় নেই।”

অন্যদের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুল কুদ্দুস, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মাসুদ আহমেদ তালুকদার, কেন্দ্রীয় নেতা মুনির হোসেন, মাশুকুর রহমান সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।