আদেশ স্পষ্ট করতে খালেদার ফাইল ফের হাই কোর্টে

দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্রের বৈধতা প্রশ্নে হাই কোর্টের আদেশটি স্পষ্ট করতে মামলার ফাইল বেঞ্চে ফেরত পাঠিয়েছেন প্রধান বিচারপতি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Dec 2018, 05:28 AM
Updated : 12 Dec 2018, 08:22 AM

সুপ্রিম কোর্টের হাই কোর্ট বিভাগের বিশেষ কর্মকর্তা সাঈফুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গতকাল খালেদা জিয়ার মনোনয়ন সংক্রান্ত যে দ্বিধা বিভক্ত আদেশ হাই কোর্টে হয়েছে, সেটির কারণ উল্লেখ করে ডিটেইল আদেশ লেখার জন্য প্রধান বিচারপতি তা আবার সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে ফেরত পাঠিয়েছেন।”

বুধবার হাই কোর্ট বেঞ্চ থেকে ফাইল পাওয়ার পর প্রধান বিচারপতি  নতুন বেঞ্চ গঠন করে দিলে সেখানেই খালেদা জিয়ার আবেদনের নিষ্পত্তি হবে।

তিনটি আসনে মনোনয়নপত্র বাতিল করে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে রিট আবেদন করেছিলেন খালেদা জিয়া। বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের হাই কোর্ট বেঞ্চে মঙ্গলবার ওই আবেদনের ওপর শুনানি করে মঙ্গলবার বিভক্ত আদেশ দেয়।

বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ইসিকে খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র গ্রহণ করার নির্দেশ দিতয়ে রুল জারি করেন। খালেদার মনোনয়নপত্র বাতিলের সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চাওয়া হয় রুলে।

অন্যদিকে বিচারপতি মো. ইকবাল কবির এর সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করলে খালেদার ভোটের ভাগ্য আটকে যায়।

হাই কোর্টের আদেশের পর অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের বলেন, “যেহেতু দুইজন বিচারপতি ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেননি, সেজন্য এখন বিষয়টি প্রধান বিচারপতির কাছে যাবে। তিনি পরবর্তী বেঞ্চ নির্ধারণ করে দেবেন। আইনগত অবস্থা যা দাঁড়াল, এখন পর্যন্ত উনি (খালেদা জিয়া) কোনো আদেশ প্রাপ্ত হননি।”

অন্যদিকে খালেদার অন্যতম আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল আদেশের পর সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা প্রত্যাশা করছি, তৃতীয় বেঞ্চে আমরা ন্যায় বিচার পাব, সঠিক সিদ্ধান্ত পাব।”

জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১০ বছর এবং জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ৭ বছরের দণ্ড নিয়ে গত ফেব্রুয়ারি থেকে কারাগারে আছেন খালেদা জিয়া।

বিএনপি নেতারা আশা করছিলেন, রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে তিনি ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন। সে অনুযায়ী তাকে একাদশ সংসদ নির্বাচনে ফেনী-১ এবং বগুড়া-৬ ও ৭ আসনে প্রার্থী করেছিল বিএনপি। তার পক্ষে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন বিএনপি নেতারা।

কিন্তু নভেম্বরের শেষে হাই কোর্টে এক মামলার রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, সংবিধানের ৬৬ (২) (ঘ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কারও দুই বছরের বেশি সাজা বা দণ্ড হলে সেই দণ্ড বা সাজার বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল বিচারাধীন থাকা অবস্থায় তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না, যতক্ষণ না আপিলে ওই দণ্ড বাতিল বা স্থগিত হয়।

এর ফলে খালেদা জিয়াসহ বেশ কয়েকজন বিএনপি নেতার আপিল করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ আটকে যায়।

এরপর ২ ডিসেম্বর রিটার্নিং কর্মকর্তার বাছাইয়ে দুই বছরের বেশি সাজার কারণ দেখিয়ে খালেদা জিয়ার তিনটি মনোনয়নপত্রই বাতিল করে দেওয়া হয়। খালেদার আইনজীবীরা ওই সিদ্ধান্ত বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে আপিল করেও বিফল হন। এরপর তারা রিট আবেদন নিয়ে আসেন হাই কোর্টে।