কী বিচিত্র! দুর্নীতিবাজের পক্ষে কামাল: রহমান

দুর্নীতির দায়ে দণ্ডিত খালেদা জিয়ার পক্ষে দাঁড়ানো কামাল হোসেনের রাজনৈতিক সততা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আওয়ামী লীগ নেতা আবদুর রহমান।

বিএনপি চেয়ারপারসনের নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়ার দাবি জানিয়ে কামাল সংবিধানের বিরোধিতা করছেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

আওয়ামী লীগের এক সময়ের নেতা ও বঙ্গবন্ধু সরকারের মন্ত্রী কামাল হোসেন বিএনপিকে সঙ্গে নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গড়ে এবার তার পুরনো দলের বিরুদ্ধেই ভোটের লড়াইয়ে নেমেছেন।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদার এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ আটকে গেছে দুর্নীতির মামলায় দণ্ডের কারণে। নির্বাচন কমিশন তার মনোনয়নপত্র বাতিল করলে তিনি আদালতে যান, এখনও এর সুরাহা হয়নি।

মঙ্গলবার আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রহমান বলেন, দণ্ডের কারণে যে খালেদা জিয়া যে এবার নির্বাচন করতে পারবেন না, তা তার দলের নেতারাই জানতেন।  

“আইনের চোখে বেগম খালেদা জিয়া একজন এতিমের টাকা আত্মসাতকারী, সাজাপ্রাপ্ত দুর্নীতিবাজ। দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী তিনি নির্বাচনে ও রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করতে পারেন না।"

খালেদা জিয়ার মুক্তিতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দাবির প্রসঙ্গ তুলে রহমান বলেন, “ড. কামাল হোসেন এই সংবিধান প্রণয়ন কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। ১৯৭২ সালের সংবিধানের জন্মলগ্ন থেকেই অনুচ্ছেদ ৬৬ লেখা রয়েছে। ড. কামাল হোসেন আজ ক্ষমতার মোহে নিজের বাংলাদেশের সংবিধানের এই অনুচ্ছেদের বিরোধিতা করছেন। কী বিচিত্র এ দেশ!”

তিনি বলেন, “আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতসহ অন্যান্য দেশে ও দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত অপরাধীদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়টি রহিত করা হয়েছে। ড. কামাল হোসেনের মতো বিএনপি নেতাকর্মীদের এ বিষয়ে সম্যক ধারণা থাকার পরও দুর্নীতিবাজের পক্ষাবলম্বন করে বিভিন্ন অপচেষ্টা চালাচ্ছে।

“বিএনপি নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে কলুষিত করে একজন চিহ্নিত দুর্নীতিবাজের পক্ষে জনগণের সহানুভূতি সৃষ্টির অপকৌশল হিসেবেই এই ধরনের কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে।”

মনোনয়নপত্র বাতিলের বিরুদ্ধে খালেদার আবেদনে হাই কোর্টের বিভক্ত আদেশ হয়েছে। ফলে নিয়ম অনুযায়ী, এখন প্রধান বিচারপতি আরেকটি বেঞ্চ ঠিক করে দেবেন এই আবেদনের শুনানির জন্য।

রহমান বলেন, “তবে জাতির দুর্ভাগ্য এই যে মহামান্য হাই কোর্ট বিভাগের আদেশ নিয়ে বিএনপি তার চিরাচরিত মিথ্যাচার ও অপপ্রচারের আশ্রয় নিয়েছে।”

দলীয় প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গোপালগঞ্জ সফরসূচি প্রসঙ্গে রহমান জানান, শেখ হাসিনা বুধবার টুঙ্গীপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন ও মাজার জিয়ারত করবেন। এরপর টুঙ্গীপাড়া ও কোটালীপাড়ায় বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নেবেন।

বৃহস্পতিবার সড়কপথে ঢাকা ফেরার পথে ফরিদপুরের ভাঙ্গা মোড়, ফরিদপুর মোড়, রাজবাড়ী রাস্তার মোড়, পাটুরিয়া ঘাট, মানিকগঞ্জ বাস ট্যান্ড, ধামরাই রাবেয়া মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতাল প্রাঙ্গণ এবং সাভার বাসস্ট্যান্ডে নির্বাচনী প্রচার কর্মসূচিতে শেখ হাসিনা অংশ নেবেন বলে জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।

সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম ও বি এম মোজাম্মেল হক,  বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আবদুস সবুর উপস্থিত ছিলেন।