তিনি সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা অনুষ্ঠানে বলেন, “আসুন, আমরা সবাই উঠে-পড়ে এই কাজে ব্যস্ত হয়ে যাই। আজকে থেকেই এখান থেকে বেরিয়ে গিয়ে শুরু করুন- আমার ভোট আমি দেব, সংবিধান অনুযায়ী দেব।
“যেখানেই থাকেন রাস্তা-ঘাট, পাড়ায়-মহল্লায় নেমে পড়ুন। সকলকে বলব, আসুন বাসায়-বাসায়, বাড়িতে-বাড়িতে যাই।”
বিএনপিকে সঙ্গী করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গড়ে একাদশ সংসদ নির্বাচনে নামা গণফোরাম সভাপতি কামাল হোসেন বলে আসছেন, আওয়ামী লীগের শাসনামলে দেশ ‘গণতন্ত্র ও আইনের শাসনহীন’ হয়ে পড়েছে।
৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় এই নির্বাচনে রোববার ছিল মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন। সোমবার প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দের পর নির্বাচনের প্রচার চালানো শুরু হয়েছে।
ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে কামাল বলেন, “ভোট দিতে না পারব না মানেই হচ্ছে স্বাধীনতা হারিয়ে গেল। স্বাধীনতা হারিয়ে যাবে আমাদের চোখের সামনে আর আমরা বসে থাকব, এটা হতে পারে না।
“গণতন্ত্রকে আবার ফিরিয়ে আনতে হলে দেশের মালিক জনগণের হাতে তাদের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে। আমাদের মালিকানা ভোগ করার জন্য আমাদের সংঘবদ্ধ হতে হবে।”
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি যে ভোট হয়েছিল, তা জনগণের কাছে ‘গ্রহণযোগ্য হয়নি’ মন্তব্য করে এবার সেদিকে সজাগ থাকার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
২০১১ সাল থেকে চলতি বছর পর্যন্ত ‘বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের’ পরিসংখ্যান তুলে ধরে তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন কামাল।
তিনি বলেন, “আজকে একটি পত্রিকায় রিপোর্ট আছে যে, এই বছরে ৪০৬ ব্যক্তিকে বিনা বিচারে জীবন দিতে হয়েছে। ২০০৫ সালে ছিল ৩৫৪ জন। বিনা বিচারের হত্যা ২০১১ তে ছিল ৬০, ২০১২ তে ছিল ৫৭, ২০১৩ সালে ৪০, ২০১৮ সালে তার বেড়ে ৩২১ এ দাঁড়িয়েছে। কোথায় ৬০, এরপর ৩২১!
“এতে কী বোঝা যায়? সমাজ সুস্থ অবস্থায় আছে? মহামান্য সরকারকে বিনয়ের সঙ্গে বলব, এই বছর শেষ হওয়ার আগে সর্বোচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিদের নিয়ে তদন্ত বসান। কেন হচ্ছে, কেনো হল, এটা চিহ্নিত করুন।”
জাতীয় প্রেস ক্লাবে বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে ‘মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ পরিষদের’ উদ্যোগে ‘রাজনীতি ও মানবাধিকার’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন কামাল হোসেন।
সংগঠনের সভাপতি নুরুল হুদা মিলু চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও নির্বাহী পরিচালক তালুকদার মনিরুজ্জামানের পরিচালনায় আলোচনা সভায় সাবেক শিক্ষামন্ত্রী শেখ শহিদুল ইসলাম, সাবেক সচিব এ এইচ এম মোফাজ্জল করীম, মানবাধিকার ফেডারেশনের সভাপতি মো. শাহজাহান, ফরিদ উদ্দিন ফরিদ, অমিত আজাদ, আবদুল্লাহ আল মাহমুদ, মমিনুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন।