নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রে তারেক-ফখরুল: আ.লীগ

লন্ডনে তারেক রহমানের সঙ্গে আইএসআইর এবং পাকিস্তান দূতাবাসে মির্জা ফখরুলের গোপন বৈঠক নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রের অংশ বলে দাবি করেছে আওয়ামী লীগ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Dec 2018, 08:49 AM
Updated : 9 Dec 2018, 08:49 AM

রোববার সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান।  

তিনি বলেন, “একটি রাষ্ট্রের সঙ্গে আরেকটি রাষ্ট্রর কূটনৈতিক সম্পর্কের কারণে দূতাবাসের সঙ্গে যাতায়াত থাকতে পারে। তবে বিজয়ের এই মাসে আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে পাকিস্তান দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ জনমনে প্রশ্নের সঞ্চার করে। একদিকে লন্ডনে তারেক রহমানের সঙ্গে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইর সঙ্গে গোপন বৈঠক, অন্যদিকে পাকিস্তানি দূতাবাসে মির্জা ফখরুলের সাক্ষাৎ ও গোপন বৈঠক ষড়যন্ত্রের আভাস দেয়।

“দুই বৈঠক একই সূত্রে গাঁথা। সে জায়গা থেকে আমরা মনে করি, এই সাক্ষাতে আসন্ন নির্বাচন বানচাল ষড়যন্ত্র এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার রাজনীতিকে বিনষ্ট করার দূরভিসন্ধি রয়েছে।”

বিএনপি কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “গতকাল ও আজকে বিএনপির মনোনয়ন বাণিজ্য নিয়ে সারাদেশে তাদের নেতাকর্মীরা যে সন্ত্রাস ও অগ্নিকাণ্ড চালাচ্ছে, তারই অংশ হিসেবে আমরা দেখতে পাই বিএনপির গুলশান ও পল্টন কার্যালয়ে ভাঙচুর। এই হামলা আসন্ন নির্বাচনের পরিবেশকেই বিঘ্নিত করে না, গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির সুষ্ঠু ধারাকেও ব্যাহত করে।”

বিএনপি একটি কর্পোরেট সংস্থা দাবি করে আব্দুর রহমান বলেন, “ইতোমধ্যে গণমাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি, বিএনপি নির্বাচনের মনোনয়ন নিয়ে কি ধরনের বাণিজ্য করেছে। একটি রাজনৈতিক দলের মনোনয়ন নিয়ে এ ধরনের বাণিজ্য হতে পারে না। যা থেকে বোঝা যায়, বিএনপি কোনো রাজনৈতিক দল না বরং একটি কর্পোরেট সংস্থা।

“মনোনয়ন বাণিজ্যের প্রেক্ষিতেই বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীদের বিক্ষোভের মাধ্যমে দলের নেতৃত্বের ওপর আস্থাহীনতাই প্রকাশ পায়। এমন মনোনয়ন বাণিজ্যের নেতৃত্বে আছেন মির্জা ফখরুল ও রুহুল কবির রিজভী। যার নেপথ্যের নায়ক সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি তারেক রহমান। একটি নীতিভ্রষ্ট, দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনৈতিক দলের কাছে দেশের জনগণ এর বেশি কিছু প্রত্যাশা করতে পারে না বলে মনে করি।”

বিএনপির জামায়াত সখ্যতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা বারবার বলে এসেছি, বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের জোট কোনো রাজনৈতিক জোট নয়, বরং এটা আদর্শিক। বিএনপির প্রধান শরিক ঐক্য ফ্রন্ট নয়, জামায়াত। গতকাল মনোনয়ন ভাগাভাগির মধ্য দিয়েই আবারও সেটা প্রমাণিত। আপানার ইতোমধ্যে জানতে পেয়েছেন শরিক হিসেবে জামায়াত আসন পেয়েছে ২৩টি এবং ঐক্য ফ্রন্ট পেয়েছে ১৭টি। যার মধ্যে দিয়ে প্রমাণিত হয় জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির গাঁটছড়া সম্পর্ক, যা অবিচ্ছেদ্য।”

আওয়ামী লীগের শরিক জাতীয় পার্টি কতগুলো আসন পাচ্ছে জানতে চাইলে আব্দুর রহমান বলেন, “আজকে মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন। এই বিষয়টি আমরা পরিষ্কার করতে পারব আজকে বিকাল নাগাদ।”

আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিষয়ে তিনি বলেন, “যে কয়জন বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন, আমাদের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী দুই থেকে তিনজন বাকি আছে মনোনয়ন প্রত্যাহারে। আমরা আশা করছি বাকিগুলো আজকে প্রত্যাহার হয়ে যাবে। আমাদের দলীয় প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার খোলা চিঠির আহ্বানে সবাই সাড়া দিয়েছেন। আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কোনো বিদ্রোহী প্রার্থী থাকবে না।”

আওয়ামী লীগের আরেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী,  আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম,  তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আফজাল হোসেন,  ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী সংবাদ সম্মেলনে ছিলেন ।