গ্রেপ্তার-রদবদল নিয়ে সিইসির আশ্বাস পেয়েছেন বিএনপি নেতারা

বিএনপির মনোনীত প্রার্থীসহ নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার বন্ধ এবং পুলিশ ও প্রশাসনে রদবদলের দাবি নিয়ে নির্বাচন কমিশনে গিয়ে আশ্বাস পেয়েছেন দলটির নেতারা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Dec 2018, 12:48 PM
Updated : 1 Dec 2018, 12:48 PM

শনিবার বিকালে আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা ও তিন নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে প্রায় দুই ঘণ্টা বৈঠক করেন বিএনপির সাত সদস্যের প্রতিনিধি দল।

বৈঠক থেকে বেরিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমেদ বলেন, “আমরা দুটি বিষয়ে কমিশনের সঙ্গে কথা বলেছি।দেশব্যাপী পুলিশি অভিযান, গ্রেপ্তার চলছে। বর্তমান জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, পুলিশ সুপার ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা সরকারি লোক।

“সরকারের সাজানো প্রশাসন, মন্ত্রী-এমপি বহাল রেখে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ভাবাই যায় না। এজন্যে ভোটের পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে গ্রেপ্তার বন্ধ এবং প্রশাসন-পুলিশে রদবদল করতে হবে।”

যেভাবে বিএনপি নেতাকর্মীদের ‘গ্রেপ্তার-হয়রানি করা হচ্ছে’ তাতে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তো দূরের কথা নির্বাচনের ন্যূনতম পরিবেশ নেই বলে অভিযোগ করেন তিনি।

“নির্বাচন কমিশন দাবিগুলো পর্যালোচনা করে ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন,” বলেন মওদুদ আহমদ।

দিন দিন পরিস্থিতি আরও ‘খারাপের দিকে যাচ্ছে’ মন্তব্য করে এই বিএনপি নেতা বলেন, “সরকারের নীল নকশা যেভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে তাতে ইসি কিছু করতে পারছে না। জামিন পাওয়া মুশকিল এখন, বিএনপির সাত সম্ভাব্য প্রার্থীকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সরকারের সাজানো প্রশাসনে রাজনৈতিক সরকারের অধীনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডও নেই।

“এমন পরিবেশে বিএনপির নির্বাচন করা দুরূহ হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত তা প্রহসনের নির্বাচনে পরিণত হতে পারে। আমরা প্রহসনের নির্বাচন চাই না। জাতির জন্যে এটা একেবারের শেষ সুযোগ। এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হলে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা কঠিন হয়ে যাবে।”

মির্জা ফখরুলের চার চিঠি

গণগ্রেপ্তার বন্ধ, গ্রেপ্তারদের মুক্তি, পুলিশ ও জনপ্রশাসনে প্রত্যাহার এবং রদবদলের মাধ্যমে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

এছাড়া ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্যানেল থেকে নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম বাতিল, ভোটকেন্দ্রে নিয়োজিত আইন শৃঙ্খলাবাহিনী সদস্যদের নাম, পদবী ও র‌্যাংক ব্যাজ পরে দায়িত্ব পালন নিশ্চিতকরণ এবং জানিপপকে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ থেকে বিরত রাখার দাবিও জানিয়েছেন তিনি।

এ সব দাবি সম্বলিত বিএনপি মহাসচিবের চারটি চিঠি নির্বাচন কমিশনারদের কাছে পৌঁছে দেন দলটির নেতারা।

গত ৮ নভেম্বর তফসিল ঘোষণার পর বিএনপি, ২০ দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে কয়েক দফা অভিযোগ জানানো হয় নির্বাচন কমিশনে। তাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে নারায়ণগঞ্জের এসপিকে সরানোসহ বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নিয়েছে কমিশন।

তবে বিএনপি নেতারা বলছেন, তাদের প্রধান দাবিগুলোর দিকে নজর না দিয়ে সরকারের ‘নির্দেশ মতোই’ কাজ করে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন, যাতে নির্বাচনে সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে না।