বিএনপি ক্রমেই ‘বন্ধুহীন’ হয়ে পড়ছে: কাদের

উন্নত গণতান্ত্রিক বিশ্বে বিএনপি ক্রমেই ‘বন্ধুহীন’ হয়ে পড়ছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Dec 2018, 10:06 AM
Updated : 1 Dec 2018, 10:12 AM

বাংলাদেশের নির্বাচন ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা নিয়ে বিএনপি মহাসচিব হতাশা প্রকাশের পর শনিবার ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে কাদেরের এমন মন্তব্য এল।

তিনি বলেন, “পাকিস্তানের সঙ্গে তো বন্ধুত্ব এখনও অটুট। একেবারে বন্ধুহীন হয়ে পড়বে এটা এই মুহূর্তে বলছি না। তবে উন্নত গণতান্ত্রিক বিশ্বে তারা ক্রমেই বন্ধুহীন হয়ে পড়ছে।”

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে উত্থাপিত একটি বিলে বাংলাদেশে নির্বাচন ঘিরে জামায়াতে ইসলামী ও হেফাজতে ইসলামসহ ধর্মীয় দলগুলোর সহিংসতার শঙ্কা প্রকাশ করা হয়। এসব দল ও গোষ্ঠীকে কোনো ধরনের সহায়তা না করার জন্য বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানানো হয় ওই প্রস্তাবে।

জামায়াতের জোটসঙ্গী বিএনপি এ বিষয়টিকে কীভাবে দেখছে তা বুধবার দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে জানতে চেয়েছিলেন সাংবাদিকরা।

জবাবে ফখরুল বলেন, “বাংলাদেশে একটা অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করার জন্যে তাদের যে ভূমিকা রাখা উচিত, সেই ভূমিকা তারা রাখছেন না।”

মির্জা ফখরুলের বক্তব্যের সূত্র ধরে ওবায়দুল কাদের শনিবার বলেন, ‘অন্যায় আর অসত্যের’ সঙ্গে কেউ থাকে না।

“তারা অনেক দেশে আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। কই আমরা তো লক্ষ লক্ষ ডলার দিয়ে লবিস্ট নিয়োগ করতে যাইনি? তারা লক্ষ লক্ষ ডলার খরচ করেও মার্কিনিদের সাড়া পাচ্ছেন না।”

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “তারা অগণতান্ত্রিক আচরণ করতে থাকবে আর অন্যরা (বিদেশি রাষ্ট্র) সমর্থন করতে থাকবে এটা হয় না। যুক্তরাষ্ট্র কি আমাদের কথায় চলে? শেখ হাসিনা সরকারের আন্ডারে না কি তারা? ওদের নিজস্ব সত্তা আছে। যুক্তরাষ্ট্র কার পক্ষে থাকবে, আর কার পক্ষে থাকবে না এটা ওয়াশিংটনের ব্যাপার।”

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জাতিসংঘ সফরের প্রসঙ্গ টেনে কাদের বলেন, "তিনি তো জাতিসংঘে গিয়েছিলেন। এত দেন-দরবার করেও সাড়া কেন পাচ্ছেন না এটা তাকেই জবাব দিতে হবে। আমাদের এখানে বলার কিছু নেই।"

জামায়াতের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে বিল আসার পর বাংলাদেশ সরকার এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেবে কি না জানতে চাইলে কাদের তফসিল ঘোষণার পর সরকারের এখতিয়ার সীমিত হয়ে আসার কথা তুলে ধরে বলেন, "এই বিষয়টা এখন সরকারের এখতিয়ারে নেই। ২৪ দিন বাকি, এই সময় সামনে রেখে আদালত ও তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে বলে মনে হচ্ছে না।"

তবে সরকার যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তে নয়, দেশের জনগণের মতামতের ভিত্তিতে কাজ করবে বলে মন্তব্য করেন সরকারের এই মন্ত্রী। 

তিনি বলেন, “বিএনপি-জামায়াতের সম্পর্কটা একেবারেই নীতি আদর্শের ব্যাপার। আমরা জাতীয় পার্টির সঙ্গে স্ট্র্যাটেজিক্যাল অ্যালায়েন্স করেছি। তাদের স্ট্র্যাটেজিক্যাল অ্যালায়েন্স না। তাদেরটা একেবারেই আদর্শিক জোট। বিএনপি সভা সমাবেশ ডাকলে ওটার মূল হয়ে যায় জামায়াত।”

তবে নির্বাচন নিয়ে যে ‘শঙ্কা’ ছিল, তা কাটতে শুরু করছে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘অনুকূল পরিবেশে, উৎসব মুখর পরিবেশে’ জনগণের ভোট দেওয়ার পরিবেশ এখন দেশে বিরাজ করছে।

অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক আব্দুস সবুর, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, উপ দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় সদস্য এস এম কামাল হোসেন, আনোয়ার হোসেন এ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।