একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির তিন নেতার মনোনয়নপত্র জমা না দেওয়ার বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে বৃহস্পতিবার এ মন্তব্য করেন তিনি।
ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর কার্যালয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন কাদের।
সাংবাদিকরা তার কাছে জানতে চান, বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতাদের মধ্যে আবদুল আউয়াল মিন্টু, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ও হাবিব-উন নবী খান সোহেলের মনোনয়নপত্র জমা না দেওয়ার পেছনে সরকারের কোনো ভূমিকা রয়েছে কিনা।
উত্তরে কাদের বলেন, “এটা তাদের (বিএনপির) ইন্টারনাল ব্যাপার। এর মধ্যে দুজন নেতা আছেন যারা তাদের মনোনয়ন কাঙ্ক্ষিত জায়গায় দেওয়া হয়নি বলে মনোনয়নপত্র জমা দেননি। মির্জা আব্বাস সময় মত মনোনয়নপত্র জমা দেননি।
“নির্বাচন কমিশন তো আর নিয়মের বাইরে যাবে না। আমরা যতটুকু জানি বিএনপির জগাখিচুরি অবস্থা, পরিস্থিতি মির্জা ফখরুলের নিয়ন্ত্রণের বাইরে।”
একাদশ সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে বুধবার ছিল রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। মনোনয়নপত্র দাখিল না করায় মিন্টু, আলাল বা সোহেল এবার নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারছেন না।
বিএনপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম খান অবশ্য বিষয়টিকে দলীয় কৌশল হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করেছেন।
বৃহস্পতিবার তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাগারে, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন্য তারেক রহমান দেশের বাইরে- এ অবস্থায় অন্যদের নির্বাচনে সহযোগিতা করার জন্যই দলীয় সিদ্ধান্তে তারা তিনজন মনোনয়নপত্র জমা দেননি।
নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ এখনও তৈরি হয়নি বলে বিএনপি নেতারা দাবি করে এলেও কাদের তা মনে করেন না।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকের প্রসঙ্গ টেনে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আমাদের সাথে তাদের অনেক কথা হয়েছে, এসব বিষয়ে আমাদের কথা বলা উচিত না। তবে তারা বলেছে, বাংলাদেশে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ বিরাজ করছে।”
কামাল হোসেনের ঐক্যফ্রন্টের প্রসঙ্গ টেনে কাদের বলেন, “ঐক্যফ্রন্টের হচপচ অবস্থা; ঐক্যফ্রন্টে ঐক্য নেই। ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা মনোনয়ন নেননি। তিনি বলেছেন, তিনি সন্ত্রাসীদের হাতে মনোনয়ন নেবেন না, কার হাত থেকে নেবেন না? আমরা জানি কানাডার আদালত বিএনপি এবং তারেক রহমানকে সন্ত্রাসী হিসেবে রায় দিয়েছে।”
জামায়াত নেতাদের বিএনপির মনোনয়ন দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “জামায়াতকে ছাড়া বিএনপি অচল। তারা এক মোহনায় রাজনীতি করে, এখন জামায়াতের পৃষ্ঠপোষক বিএনপি।”
নির্বাচন নিয়ে ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ হয়েছে কি না– এ প্রশ্নে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “কথাবার্তা আছে, বলব কেন? গোপন কথা গোপন থাক।”
আওয়ামী লীগের জোট শরিক জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের অসুস্থতা নিয়েও কাদেরকে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। তারা জানতে চান, নির্বাচনের আগে এরশাদের এবারের অসুস্থতা ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে তার ‘অসুস্থ’ হয়ে পড়ার মত কোনো বিষয় কি না।
জবাবে কাদের বলেন, “অসুস্থতা নিয়ে এমন কথা না বলাই ভাল। অসুস্থতা গতবারের মত নয়। অবস্থা সঙ্কটের দিকে ছিল, এখন স্থিতিশীল আছে।”
পুরনো খবর