‘ভারসাম্য’ প্রতিষ্ঠায় বেশি আসন চান বি চৌধুরী

সরকার গঠনকারী দলের সংসদে একচেটিয়া আসনের কারণে রাজনীতিতে ‘ভারসাম্য’ নষ্ট হচ্ছে বলে মনে করছেন বিকল্প ধারার সভাপতি ও সাবেক রাষ্ট্রপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Nov 2018, 02:59 PM
Updated : 21 Nov 2018, 03:02 PM

তাই ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠায় জোটের বড় দলের কাছে অন্য দলগুলোর জন্য বেশি আসন দাবি করছেন তিনি।

সংসদ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে আসার পরদিন বুধবার ঢাকার বাড্ডায় বিকল্প ধারা ও যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই মত জানান বি চৌধুরী।

আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট বেঁধে একাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া বিকল্প ধারা এখন আসন বণ্টন নিয়ে আলোচনায় রয়েছে।

এই প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নে বি চৌধুরী বলেন, “ভারসাম্যের রাজনীতি প্রতিষ্ঠায় আমাদের যদি আপস করতে হয়, সে পরিস্থিতি আনা উচিত হয়.....  তাহলে বলব, যে দলটি সরকার গঠন করবে সে দলের শরিকদের অধিক সংখ্যক আসন দিয়ে ব্যালেন্স করতে হবে।”

“কোনো দল যেন একক সিদ্ধান্তে স্বেচ্ছাচারিতা করতে না পারে, বিকল্প ধারা সে ধারার রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করবে,” বলেন তিনি।

২০০১ সাল থেকে প্রতিটি সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী দল নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠন করে। তা রাজনীতিতে ভারসাম্য নষ্ট করছে বলে মনে করেন বি চৌধুরীরা।

এবারের নির্বচনের আগে কামাল হোসেনের সঙ্গে মিলে যে পাঁচ দফা বি চৌধুরী দিয়েছিলেন, তার একটি দফায় ছিল সংসদ ও সরকারের ভারসাম্য নিশ্চিত করতে হবে।

পরে কামাল হোসেনের সঙ্গে জোট আর হয়নি বি চৌধুরী। কামাল বিএনপির সঙ্গে মিলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করেন, অন্যদিকে বি চৌধুরী ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট বেঁধে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেন।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ইতোমধ্যে জানিয়েছেন, ৩০০টি আসনের ৬৫-৭০টি তারা জাতীয় পার্টিসহ জোট শরিকদের ছেড়ে দিতে পারেন।

বিকল্প ধারার নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা ২৫ জন প্রার্থীর একটি তালিকা তৈরি করে আওয়ামী লীগের সঙ্গে দর কষাকষিতে যাবে।

বি চৌধুরী

মঙ্গলবার রাতে গণভবনের বৈঠকে বিকল্প ধারা কতটি আসন চেয়েছে- এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে বি চৌধুরী বলেন, “এই মুহূর্তে এটা বলব না।”

বিদেশি পর্যবেক্ষকদের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, “বিদেশের পর্যবেক্ষকদের এক দিনের জন্য নয়, আসতে হবে এক রিজনেবল টাইমের জন্য। যেটা নির্বাচনের কয়েক সপ্তাহ আগে হতে হবে। নির্বাচনের সময়ে তারা যেখানে যেতে চায়, যেতে দিতে হবে।”

নির্বাচনের পরে রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য তাদেরকে বেশ কয়েক দিন থাকার অনুমতি দেওয়া উচিৎ বলে মনে করেন তিনি। 

বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে ইঙ্গিত করে বিকল্প ধারা সভাপতি বলেন, “নির্বাচনকে ঘিরে কোনো ষড়যন্ত্র, হুমকি-ধমকি দিলে নির্বাচন নিয়ে জনমনে সন্দেহের সৃষ্টি হবে। বিরোধী দলকে এ কথা বুঝতে হবে।

“নির্বাচন ঠেকিয়ে দেওয়া হবে, ভোটে বাধা দেওয়া হবে, এমন কোনো আভাস দেওয়া হলে ইতিহাস ক্ষমা করবে না। তা হবে ইতিহাসের নির্মম অধ্যায়।”

আসন্ন নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, “ইট ক্যান বি আ হিস্টোরিক ইলেকশন। কিছু উল্টো হলে হবে ডিজাস্টার।”

সাবেক রাষ্ট্রপতি বি চৌধুরী জানান, সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে বিভিন্ন দাবি নিয়ে তারা রাষ্ট্রপতির সাক্ষাৎ চেয়ে আবেদন করলেও এখনও সাড়া পাননি।

আগামী কয়েক দিনের মধ্যে বিকল্প ধারার নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশের ঘোষণা দিয়ে বি চৌধুরী বলেন, “নতুন ভোটারের সংখ্যা অনেক বেশি। তারা যেন নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে। নিরপেক্ষ সুন্দর নির্বাচন দেখতে পারে, তার ব্যবস্থা করতে হবে।”