এসব বিষয়ে ইসি ব্যবস্থা না নিলে আদালতে যাওয়ার হুমকিও দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
ফখরুলের লেখা চিঠিগুলো মঙ্গলবার দুপুরে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের কাছে পৌঁছে দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “এখন আমরা যে অবস্থায় রয়েছি, তা হচ্ছে পর্বতের গিরিখাতে; আর ক্ষমতাসীন দল পর্বতের শৃঙ্গে। ইসিকে সার্বিক বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।”
দশম সংসদ নির্বাচন বর্জনকারী বিএনপি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করে এবার নির্বাচনে এলেও তারা দাবি করে আসছে, ইসি এখনও ভোটে সবার সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে পারেনি।
ইসি সচিবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা দাবি
নয়া পল্টনে বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় ইসি সচিব ও ডিএমপি কমিশনারের বিরুদ্ধে ‘ইন্ধন’ দেওয়ার অভিযোগ এনেছেন বিএনপি মহাসচিব।
একটি চিঠিতে তিনি লিখেছেন, “ইসির আচরণবিধি প্রতিপালনের নির্দেশনা নেতা-কর্মীসহ জনগণের অংশগ্রহণকে বাধাগ্রস্ত করেছে। ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের গণমাধ্যমে দেওয়া বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য ও ডিএমপি কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়ার বক্তব্যে ঘটনা সংঘটনের ইন্ধনের সুস্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যায়।
“এমতাবস্থায় ইসি সচিব, ডিএমপি কমিশনার, সংশ্লিষ্ট জোনের উপ কমিশনার ও উদ্দেশ্যমূলকভাবে জারি করা চিঠির স্বাক্ষরকারী ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখার যুগ্মসচিবের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানাচ্ছি।”
প্রশাসনে রদবদল
সব বিভাগীয় কমিশনার, উপ মহাপুলিশ পরিদর্শক (রেঞ্জ ডিআইজি), মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারদের একটি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বিএনপি।
একটি চিঠিতে এর পাশাপাশি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানার ওসিদের বর্তমান কর্মস্থল জেলার বাইরে বদলি করার দাবি জানানো হয়েছে।
নতুন পদায়নে ব্যাচভিত্তিক জ্যেষ্ঠতা অনুসরণের দাবি জানিয়েছেন ফখরুল। এছাড়া সব চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল ও পদোন্নতি বঞ্চিতদের পদোন্নতি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যুক্ত ছিলেন বা মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর পিএস-এপিএস ছিলেন, এমন ব্যক্তিদের পদায়ন না করতেও ইসিকে আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি।
জেলা প্রশাসনে নিয়োজিত ৪৫ উপদেষ্টাকে বাতিল
তফসিল ঘোষণার পর জারি করা জেলা প্রশাসনের অগ্রাধিকারমূলক কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে উপদেষ্টা (মেনটর) মনোনয়ন সংক্রান্ত আদেশ বাতিলের দাবি জানিয়েছে বিএনপি।
জেলা প্রশাসকদের (রিটার্নিং অফিসার) পরামর্শ দেওয়ার নামে বর্তমান ও সাবেক ৪৫ আমলাকে ৪৫ জেলায় পরামর্শক নিয়োগ করেছে সরকার।
আরেকটি চিঠিতে বিএনপি মহাসচিব লিখেছেন, রিটার্নিং কর্মকর্তাদের এসব জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার প্রভাবমুক্ত রাখতে অবিলম্বে এ আদেশ বাতিল করতে হবে। তা না হলে আইন আদালতের আশ্রয় নেওয়া হবে।
নেতা-কর্মীদের ভয়ভীতি
তফসিল ঘোষণার পর থেকে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী ও কর্মী-সমর্থকদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ফখরুল।
তিনি লিখেছেন, “বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার সব অপকৌশল হিসাবে এ ভীতির সঞ্চার করে এ ধরনের কর্মকাণ্ড পরিচালনা বন্ধ করতে হবে। কমিশন কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে ভোটের পরিবেশ বিঘ্নিত হলে এর দায় ইসির উপর বর্তাবে।”
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ‘ব্রিফিং’
তফসিল ঘোষণার পর রিটার্নিং কর্মকর্তাদের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ডেকে ‘ব্রিফিং’ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।
তিনি চিঠিতে লিখেছেন, গত ১৩ নভেম্বর এসব কর্মকর্তাদের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ‘তলব করা হয়েছিল’। বিষয়টি তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা সিতে হবে।