ঐক্যফ্রন্টে রেজা কিবরিয়া, বিব্রত বিএনপি নেতা

আওয়ামী লীগের অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়ার ছেলে রেজা কিবরিয়ার জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন খবরে বিব্রত হবিগঞ্জের নবীগঞ্জের বিএনপি নেতারা।

হবিগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Nov 2018, 10:39 AM
Updated : 7 Dec 2018, 10:32 AM

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের বিদায়ের ঘোষণায় হবিগঞ্জ-৪ আসনে সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী করার পরিকল্পনার মধ্যে হবিগঞ্জ-১ আসনে প্রার্থী হওয়ার সিদ্ধান্ত জানালেন রেজা কিবরিয়া।

তিনি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টভুক্ত দল কামাল হোসেনের গণফোরামের প্রার্থী হতে শুক্রবার মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন। এই জোটের বড় দল বিএনপির প্রতীক ধানের শীষ নিয়ে জোটের অন্য দলগুলোও ভোটে অংশ নিতে চায়।

রেজার বাবা শাহ এ এম এস কিবরিয়া শেখ হাসিনার ১৯৯৬-২০০১ সালের সরকারে অর্থমন্ত্রী ছিলেন। ২০০১ সালে হবিগঞ্জ-১ আসনে (নবীগঞ্জ-বাহুবল) আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। ২০০৫ সালে হবিগঞ্জে গ্রেনেড হামলায় নিহত হন তিনি।

বাবা আওয়ামী লীগ করলেও অন্য দলে গিয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে রেজা শনিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমার বাবা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করলেও আমি কখনও আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত হইনি। এছাড়াও গত ১৪ বছরেও আমার বাবার হত্যাকারীদের বিচারের আওতায় আনতে পারেনি আওয়ামী লীগ।”

শাহ এ এম এস কিবরিয়া

জাতিসংঘের সাবেক কর্মকর্তা শাহ কিবরিয়ার মতো তার ছেলে রেজাও জাতিসংঘে কাজ করছেন। রেজার জন্ম নবীগঞ্জ উপজেলার দেবপাড়া ইউনিয়নের জালালসাপ গ্রামে হলেও তার কৈশোর আর যৌবনের বেশির ভাগ সময় কেটেছে বিদেশে।

একাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বিএনপি যখন অন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে জোট করল, তখনই তাতে ভিড়লেন রেজা।

রেজা জানান, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট মনোনয়ন দিলে তিনি ধানের শীষ প্রতীকে নিয়েই নির্বাচনে অংশ নেবেন।

রেজা কিবরিয়ার খবরে নবীগঞ্জ পৌর বিএনপির সভাপতি ও পৌর মেয়র ছাবির আহমদ চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ড. রেজা কিবরিয়ার বাবা হত্যা মামলার আসামি বিএনপি নেতাকর্মী। সেই রেজা কিবরিয়া ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচন করলে এটা আমাদের জন্য চরম বিব্রতকর।”

কিবরিয়া হত্যামামলার আসামি বিএনপি নেতাদের মধ্যে রয়েছেন সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র (বরখাস্ত) জি কে গউছ। এই মামলায় অভিযুক্ত হওয়ার পর কারাগারে যেতে হয়েছিল তাদের, বরখাস্ত হতে হয় গউছকে।

খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, খালেদা জিয়া সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরও মামলার আসামি। তিন দফা তদন্তের পর ২০১৪ সালের ২১ ডিসেম্বর মোট ১১ জনের বিরুদ্ধে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। হত্যা ও বিস্ফোরক আইনের দুটি মামলা এখনও বিচারাধীন।

রেজা যে আসনে প্রার্থী হতে চান, সেই হবিগঞ্জ-১ থেকে একাধিকবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া বিএনপি শেখ সুজাত মিয়া এবারও ভোটের লড়াইয়ে নামতে চান।

কিবরিয়াপুত্রের প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় পর্যায় কোনো সিদ্ধান্ত পাননি জানিয়ে ছাবির বলেন, “আমাদের এখানে দলীয়ভাবে শেখ সুজাত সাহেবই যোগ্য প্রার্থী। আমরা তাকেই প্রার্থী হিসাবে দেখতে চাই।

তবে এখনও কোনো সিগনাল আমরা পাইনি, দলের হাই কমান্ড কী সিদ্ধান্ত নেয়, সেই অপেক্ষায় আছি।”

বাহুবল উপজেলা বিএনপির সভাপতি আকাদ্দছ মিয়া বাবুল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ড. রেজা কিবরিয়া ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হয়ে আসলে কেন্দ্রীয় নির্দেশ আমাদের মানতে হবে। কেন্দ্রে যাকে ধানের শীষ দেবে, আমরা তার পক্ষেই কাজ করব।”