মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনে প্রার্থী হবেন বি চৌধুরী

নিজের আসনটি ছেলেকে ছেড়ে দিয়ে মুন্সীগঞ্জ-৩ এ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Nov 2018, 01:25 PM
Updated : 13 Nov 2018, 03:40 PM

১৯৭৮ সালে বিএনপি গঠনের পর অষ্টম জাতীয় সংসদ পর্যন্ত মুন্সীগঞ্জ-১ আসন (সিরাজদিখান ও শ্রীনগর) আসনেই প্রার্থী হন বি চৌধুরী। রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালনের পর আর ভোটে দাঁড়াননি তিনি।

দশম সংসদ নির্বাচন বিকল্প ধারা বর্জনের পর এবার জোটের নানা সমীকরণে গুরুত্ব বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে একাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে যাচ্ছেন বি চৌধুরী।

মঙ্গলবার বিকালে ঢাকার বাড্ডার ট্রপিক্যাল মোল্লা টাওয়ারে বিকল্পধারা ও যুক্তফ্রন্টের অস্থায়ী নির্বাচনী কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধনের সময় বি চৌধুরী জানান, তিনি এবার মুন্সীগঞ্জ-৩ (সদর ও গজারিয়া) আসন থেকে নির্বাচন করবেন।

বিকল্প ধারার যুগ্ম মহাসচিব ও বি চৌধুরীর ছেলে মাহি বি চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন, তিনি মুন্সীগঞ্জ-১ থেকে নির্বাচন করবেন।

বিকল্প ধারার মহাসচিব আবদুল মান্নান নোয়াখালী-৪ (সদর) আসন থেকে নির্বাচনী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।

সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শমসের মবিন চৌধুরী  সিলেট-৬ আসন থেকে, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য গোলাম সারোয়ার মিলন মানিকগঞ্জ-২ এবং এইচ এম গোলাম রেজা সাতক্ষীরা-৪ আসনে প্রার্থী হতে চান।

নওগাঁ-২ আসনে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রউফ মান্নান, চট্টগ্রাম-২ আসনে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মাযহারুল হক শাহ চৌধুরী, কিশোরগঞ্জ-১ আসনে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুহম্মদ ইউসুফ, নোয়াখালী-১ আসনে সাংগঠনিক সম্পাদক ওমর ফারুক, বগুড়া-৫ আসনে সহসভাপতি মাহবুব আলী, ঢাকা-৫ আসনে সহসভাপতি ওবায়েদুর রহমান মৃধা, ঢাকা-১৪ আসনে যুবধারার সভাপতি আসাদুজ্জামান বাচ্চু, গোপালগঞ্জ-২ আসনে প্রচার সম্পাদক শেখ মেসবাহ উদ্দিন জুন্নু মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন।

যুক্তফ্রন্টের শরিক দলগুলোর মধ্যে লেবার পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হামদুল্লাহ আল মেহেদী কুমিল্লা-১০ আসনে,বিএলডিপির সভাপতি নাজিম উদ্দিন আল আজাদ যশোর-৪ আসন থেকে, বিএলডিপির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খান  নরসিংদী-২ থেকে, বাংলাদেশ জনদলের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান জয় চৌধুরী পাবনা-৩, ইউনাইটেড মাইনরিটি ফ্রন্টের চেয়ারম্যান দিলীপ কুমার দাস ঢাকা-৬, বাংলাদেশ গণ সংস্কৃতি দলের (বাগসদ) চেয়ারম্যান সরদার শামস আল-মামুন বরিশাল-১ থেকে লড়তে মঙ্গলবার বিকালে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।

বি চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা বলেছি, নির্বাচনে যাব। তবে সে নির্বাচনে যেতে আমাদের ময়দান সমতল করতে হবে। উঁচু নিচু ঢালে খেলা হয় না। এতদিন ক্ষমতা সরকারের হাতে পুঞ্জীভূত ছিল। এখন নির্বাচনের সব ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের হাতে। আমরা তাদের কাছে বলছি।”

নির্বাচন কমিশন এখন রাষ্ট্রপতির কাছে ‘দায়বদ্ধ’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, “রাষ্ট্রপতি ও নির্বাচন কমিশনের এখন ঐতিহাসিক দায়িত্ব। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের চ্যালেঞ্জ এখন তাদের।”

বিগত নির্বাচনগুলো নিয়ে নিজের ‘মিক্সড’ অনুভূতির কথা জানিয়ে বি চৌধুরী বলেন, “বাংলাদেশের রাজনীতিতে আমরা একটি নতুন ধারা নিয়ে আসব। আমরা বলেছি, পরিচ্ছন্ন রাজনীতি করার চেষ্টা করব। দুর্নীতি, সন্ত্রাস আমরা করব না। “

বিকল্প ধারা নেতারা জানিয়েছেন, প্রথম দিনে ১০০ জন মনোনয়ন ফরম কিনেছেন। ফরম বিতরণ চলবে ২২ নভেম্বর পর্যন্ত।

এর সমন্বয়কের দায়িত্বে থাকা মিলন জানান, যুক্তফ্রন্ট ও বিকল্পধারার ফরমের মূল্য রাখা হয়েছে ১ হাজার টাকা। ফরম জমা দেওয়ার সময় ২০ হাজার টাকা দিতে হবে। মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হবে ২৩ ও ২৪ নভেম্বর।

মহাজোটে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়নি এখনও

আওয়ামী লীগের সঙ্গে আলোচনা চললেও মহাজোটে যাওয়ার সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি বলে জানিয়েছেন বিকল্প ধারার নেতা মাহি বি চৌধুরী।

মঙ্গলবার দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে গিয়ে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে মাহি বলেন,  ‘চায়ের আমন্ত্রণ’ রক্ষায় সেখানে গিয়েছিলেন তিনি।

তবে এই বৈঠকের মধ্য দিয়ে ১৪ দলের সঙ্গে যুক্তফ্রন্টের আলোচনার ‘আনুষ্ঠানিক সূত্রপাত’ হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

মাহি বলেন, “আমরা বলছি, আমরা স্বতন্ত্র ধারার রাজনীতি করব। নির্বাচনী সমঝোতা না হলেও আমরা গণতন্ত্র রক্ষার স্বার্থে মহাজোটকে সহযোগিতা করব।”

তিনি জানান, আগামী ১৭ নভেম্বর ১৪ দলের সঙ্গে আরেকটি বৈঠকে বসবে যুক্তফ্রন্ট।

ওই বৈঠকে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নিয়ে আলোচনা হবে বলে ইঙ্গিত দেন বিকল্প ধারার মহাসচিব আবদুল মান্নান।

তিনি বলেন, “লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের ব্যাপারে আমরা কোনো কম্প্রোমাইজ করব না। “

২০১৪ সালে বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নিয়ে ‘ঐতিহাসিক ভুল’ করেছিল মন্তব্য করে ওই নির্বাচন বয়কটকারী বিকল্প ধারার মহাসচিব মান্নান বলেন, “গণতন্ত্রের স্বার্থে আমরা এমনটা আর হতে দেব না।”