চট্টগ্রামে স্বতন্ত্র হিসেবে মনোনয়নপত্র তুললেন তিন জামায়াত নেতা

নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন হারানো জামায়াতে ইসলামীর তিনজন নেতা চট্টগ্রামে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Nov 2018, 03:29 PM
Updated : 11 Nov 2018, 03:29 PM

এরা হলেন- চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতের সাবেক নায়েবে আমির শাহজাহান চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির আ ন ম শামসুল ইসলাম এবং বাঁশখালী উপজেলা চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম।

এদের মধ্যে কারান্তরীণ শাহজাহান ও শামসুল চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া) আসন থেকে মনোনয়নপত্র তুলেছেন। শাহজাহান ২০০১ সালে এবং শামসুল ২০০৮ সালের নির্বাচনে ওই আসন থেকে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন।

আর জহিরুল মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য।

বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের শরিক জামায়াতে ইসলামী ২০০১ ও ২০০৮ সালে জোটগতভাবে নির্বাচনে অংশ নেয়। ২০১৩ সালে হাই কোর্টের এক রায়ে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী ধর্মভিত্তিক দলটিকে নির্বাচনের ‘অযোগ্য’ ঘোষণা করা হয়। গেল মাসে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলের প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন।

এই প্রেক্ষাপটে দলীয় প্রতীক দাঁড়িপাল্লায় নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন না জামায়াত নেতারা। ২০ দলীয় জোটের সাতটি শরিক দল ইতোমধ্যে বিএনপির প্রতীক ধানের শীষে ভোট করার সিদ্ধান্ত জানালেও জামায়াতের অবস্থান এখনও পরিষ্কার করা হয়নি।

জামায়াতে ইসলামীও ধানের প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেবে না কি দলটির নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হবেন তা নিয়ে আগ্রহ রয়েছে রাজনৈতিক অঙ্গনে। তার মধ্যেই রোববার চট্টগ্রামে নির্বাচন কমিশন কার্যালয় থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র তুললেন জামায়াতের তিন নেতা।

এদিন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা মোট ১৬টি মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন।

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, নির্বাচন কমিশনের আঞ্চলিক কার্যালয় এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে এসব মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা হয়।

এর আগে শুক্র ও শনিবার কেউ মনোনয়নপত্র নেননি।

চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মুনীর হোসাইন খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, রোববার আওয়ামী লীগ, বিএনপি, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট এবং স্বতন্ত্র হিসেবে ১৫ জন প্রার্থী মোট ১৬টি মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।

আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে চট্টগ্রাম-৮ (চান্দগাঁও-বোয়ালখালী-বায়েজিদ আংশিক) এবং চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালী) এই দুই আসন থেকে মনোনয়নপত্র নিয়েছেন নগর কমিটির কোষাধ্যক্ষ ও সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম।

এছাড়া চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং, পাহাড়তলি, খুলশী) আসন থেকে মনোনয়নপত্র নিয়েছেন নগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ফরিদ মাহমুদ।

বিএনপি নেতাদের মধ্যে চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী এবং উত্তর জেলা বিএনপি নেতা সরওয়ার আলমগীর, চট্টগ্রাম-১ (মীরসরাই) আসনে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মনিরুল ইসলাম ইউসুফ এবং চট্টগ্রাম-৩ (সন্দ্বীপ) আসনে কাতার প্রবাসী বিএনপি নেতা নুরুল মোস্তফা মনোনয়নপত্র নিয়েছেন।

এছাড়াও স্বতন্ত্র হিসেবে চট্টগ্রাম-১ আসনে রেজাউল করিম, চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনে মো. আবু তালেব হেলালী, চট্টগ্রাম-১০ আসনে সাবিনা খাতুন এবং চট্টগ্রাম-৮ আসনে এমদাদুল হক মনোনয়নপত্র নিয়েছেন।

ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশের পক্ষে চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা-কর্ণফুলী) আসনে এম এ মতিন এবং চট্টগ্রাম-১১ আসনে আবুল বাশার মো. জয়নাল আবেদিন মনোনয়নপত্র নিয়েছেন।

১৪ নভেম্বরের মধ্যে ব্যানার-ফেস্টুন অপসারণ

১৪ নভেম্বর মধ্যরাতের মধ্যে চট্টগ্রামের সব নির্বাচনী আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের পক্ষে প্রচারণায় ইতোমধ্যে ব্যবহৃত ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুন, বিলবোর্ড, তোরণ, দেয়ালিকাসহ সব ধরনের প্রচার সরঞ্জাম অপসারণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

রোববার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এক নির্বাচনী সমন্বয় সভায় এই নির্দেশ দেওয়া হয়।

ওই সভায় চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তারা, পুলিশ সুপার, সহকারী পুলিশ সুপার, কোস্টগার্ড এবং নৌবাহিনীর প্রতিনিধিরা উপস্থিত চিলেন।

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মুনীর হোসাইন খান বলেন, ১৪ নভেম্বর মধ্যরাতের মধ্যে প্রচারণায় ব্যবহৃত সব সরঞ্জাম অপসারণ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরপর কী করতে হবে সে নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।

“পাশাপাশি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের বলা হয়েছে ভোট কেন্দ্রগুলোতে কোনো সমস্যা আছে কি না এবং যাতায়াতে কোনো অসুবিধা হয় কি না তা প্রতিবেদন আকারে জানাতে।”