নিষ্ক্রিয় ‘সংস্কারপন্থি’দের সক্রিয় করছে বিএনপি

জরুরি অবস্থার সময় সংস্কারপন্থি হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার পর বিএনপির সাবেক যে সব সংসদ সদস্য নিষ্ক্রিয় হয়ে আছেন, একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে তাদের সক্রিয় করতে উদ্যোগী হয়েছে দলটি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Oct 2018, 01:59 PM
Updated : 25 Oct 2018, 07:00 PM

এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার বিকালে গুলশানে দলীয় চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ১১ জন সাবেক সংসদ সদস্যদের নিয়ে বৈঠক করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বৈঠকে ছিলেন সাবেক গৃহায়ন প্রতিমন্ত্রী নওগাঁর আলমগীর কবির, সাবেক হুইপ জয়পুরহাটের আবু ইউসুফ মো. খলিলুর রহমান রয়েছেন। এরা বিএনপি ছেড়ে অলি আহমদ নেতৃত্বাধীন এলডিপিতে যোগ দিলেও এখন ওই দলে নিষ্ক্রিয়।

বৈঠকে আরও ছিলেন রাজশাহীর আবু হেনা, বরিশালের জহিরউদ্দিন স্বপন, বগুড়ার জি এম সিরাজ ও জিয়াউল হক মোল্লা, নরসিংদীর সর্দার সাখাওয়াত হোসেন বকুল, নারায়ণগঞ্জের আতাউর রহমান আঙ্গুর, সুনামগঞ্জের নজির হোসেন, ঝালকাঠির ইলেন ভুট্টো, পটুয়াখালীর শহিদুল আলম তালুকদার। এছাড়া গাইবান্ধার শামীম কায়সার লিংকন টেলিফোনে এই বৈঠকে যোগ দেন।

২০০৭ সালে জরুরি অবস্থা জারির পর সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে দুই নেত্রী শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়াকে নিজ নিজ দলের নেতৃত্ব থেকে সরানোর চেষ্টা হয়েছিল।

তখন তৎকালীন বিএনপি মহাসচিব আবদুল মান্নান ভূইঁয়ার নেতৃত্বে একদল দলে সংস্কারের দাবি তুলেছিল। তখন গ্রেপ্তার হওয়ার আগে মহাসচিব মান্নান ভূঁইয়া, তৎকালীন যুগ্ম মহাসচিব আশরাফ হোসেন, তৎকালীন দপ্তর সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তিকে বহিষ্কার করে যান বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

খালেদা বন্দি অবস্থায় তখন দুটি ধারায় বিএনপি চলছিল; তবে খালেদা জিয়া মুক্তি পাওয়ার পর সংস্কারপন্থিরা চুপসে যান, তাদের কাউকে কাউকে দলে ফেরানো হলেও অনেকে রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েন।

তখন যারা বহিষ্কৃত হয়েছিলেন কিংবা অন্য দলে চলে গিয়েছিলেন, তাদের ফেরানোর উদ্যোগ নেওয়া হল এখন।

এর মধ্যে সাবেক ছাত্রনেতা স্বপন ও বকুলকে এর আগে খালেদা জিয়া নিজ কার্যালয়ে ডেকে নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় কাজ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।

বৃহস্পতিবারের বৈঠকে অংশ নেওয়া একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাবেক দপ্তর সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তিসহ কয়েকজনের বহিষ্কারাদেশে প্রত্যাহার করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে অন্যান্যদের সঙ্গেও মহাসচিব বৈঠক করবেন।

বিএনপির সহ দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনের প্রেক্ষাপটে দলের সকল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে সক্রিয় করার উদ্যোগ নিয়েছে, যার অংশ হিসেবে স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশে বৃহস্পতিবার গুলশানে মহাসচিব কয়েকজন সাবেক সাংসদের সাথে বৈঠক করেন।

“বৈঠকে মহাসচিব তাদেরকে পূর্ণ মাত্রায় সক্রিয় হয়ে দলকে শক্তিশালী করা ও সকল কর্মসূচি বাস্তবায়ন করার আহ্বান জানিয়েছেন।”

দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বন্দি এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দণ্ড নিয়ে বিদেশে থাকার মধ্যে বড় ধরনের সঙ্কট মোকাবেলা করছে বিএনপি।

এর মধ্যে একাদশ সংসদ নির্বাচন মাসখানেক পরই অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপি দলীয় নেত্রীকে নিয়ে সেই নির্বাচনে অংশ নিতে তার মুক্তির দাবিতে আন্দোলন জোরদার করতে চাওয়ার পাশাপাশি ভোটের প্রস্তুতিও নিচ্ছে।