ঐক্যফ্রন্টকে সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে পুলিশ: কাদের

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে সিলেটে সমাবেশ করতে পুলিশের পক্ষ থেকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Oct 2018, 11:45 AM
Updated : 21 Oct 2018, 12:08 PM

ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের রোববার বলেন, “অনুমতি অলরেডি দিয়ে দিয়েছে পুলিশ।”

সমাবেশের জন্য পুলিশের অনুমতি পাওয়ার বিষয়টি বিকালে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে নিশ্চিত করেছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমন্বয়ক সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ।

“রোববার দুপুরে পুলিশের পক্ষ থেকে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আগামী ২৪ অক্টোবর বেলা ২টায় সিলেট রেজিস্ট্রারি মাঠে এ সমাবেশ হবে,” বলেন তিনি।

বিএনপিকে সাথে নিয়ে কামাল হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত সরকারবিরোধী নতুন জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট তাদের প্রথম কর্মসূচি হিসেবে সিলেটে ২৩ অক্টোবর সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছিল কিন্তু পরে তা একদিন পিছিয়ে দেওয়া হয়।

শুক্রবার সন্ধ্যায় গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু সাংবাদিকদের বলেন, সিলেটের ২৩ তারিখের সমাবেশের অনুমতি সরকার দেয়নি, পরিবর্তে তারা ২৪ তারিখ চেয়েছেন।

সমাবেশের অনুমতি নিয়ে ‘নাটক’: কাদের

পুলিশ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে সিলেটে সমাবেশের অনুমতি দিলেও জোটের নেতারা বিষয়টি নিয়ে ‘নাটক’ করছেন বলে মন্তব্য করেছেন ওবায়দুল কাদের।

রোববার রাজধানীর ডেফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকরা ওবায়দুল কাদেরের কাছে জানতে চান ঐক্যফ্রন্ট সমাবেশের অনুমতি পাবে কিনা।

জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “দেখুন, অনুমতি নিয়ে নাটক করা এটা তাদের পুরনো অভ্যাস। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপি অনুমতি পেয়েছে, কিন্তু এটা নিয়ে নাটক করতে তারা দ্বিধা করেনি। আমি এখানেও বলছি এটা তাদের পুরানো অভ্যস, তারা অনুমতি নিয়ে নাটক করে।”

সমাবেশের জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে কাদের বলেন,  “আমার তো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি আমাকে বলেছেন যে সভা-সমাবেশ যেখানেই করতে চান এ ব্যাপারে কোনো বাধা-নিষেধ থাকবে না, থাকার কথাও নয়।”

তিনি আরো বলেন, “নিরাপত্তার বিষয়টি.. যেমন এখানে বড় বড় নেতারা যাবেন, এটা তো পুলিশ একটু খতিয়ে দেখে। কিন্তু অনুমতির ব্যাপারে তারা কিন্তু ইঙ্গিতও পেয়ে গেছে। অহেতুক অফিসিয়াল চিঠি না পাওয়ার আগ পর্যন্ত নাটক করবে এটা তাদের পুরনো অভ্যাস।”

সিলেটের পর ২৭ অক্টোবর চট্টগ্রামে এবং ৩০ অক্টোবর রাজশাহীতে সমাবেশের কর্মসূচি রেখেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।

নির্বাচন কমিশনারদের বক্তব্যকে ‘দ্বিধা-বিভক্ত’ উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্য প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, “ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব কি ভুলে গেছেন, নির্বাচন কমিশন পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট? প্রধান নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আরও চারজন কমিশনার আছেন।

“একজন কমিশনার কোনো ইস্যুতে যদি ভিন্নমত পোষণ করে অথবা নোট অব ডিসেন্ট দেয় এটা তো গণতন্ত্রের বিউটি। সেখানেও ইন্টার্নাল ডেমোক্রেসি কাজ করছে, সেটাই আমরা মনে করব। এটাকে নিয়ে বিভক্তির যে অভিযোগ তিনি তুলেছেন এটা সম্পূর্ণই কাল্পনিক ও হাস্যকর ব্যাপার।”

অনুমতি না পেয়ে রিট

এদিকে সিলেটে সমাবেশ করতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে রোববার হাই কোর্টে রিট করেন সিলেটে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমন্বয়ক আলী আহমেদ।

সমাবেশের অনুমতি না দেওয়া কেন অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, সে মর্মে রুল চাওয়া হয় রিট আবেদনে।

স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশ প্রধান, সিলেটের পুলিশ কমিশনারসহ ৫ জনকে রিটে বিবাদী করা হয়েছে।

সোমবার বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন হাই কোর্ট বেঞ্চে রিট আবেদনটির ওপর শুনানি হতে পারে বলে জানান আইনজীবী জগলুল হায়দার আফ্রিক। কামাল হোসেন রিট আবেদনের শুনানিতে অংশ নিবেন বলেও জানান তিনি।

সভা-সমাবেশে বাধা দেওয়ার ঘটনার প্রতিকার চেয়ে উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হওয়ার কথা গত শনিবার জানিয়েছিলেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা কামাল হোসেন।