গ্রেনেড হামলার রায়ে সন্তুষ্ট চৌদ্দ দল

বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ২০০৪ সালের একুশে অগাস্ট গ্রেনেড হামলা ঘটনার মামলার রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে আদালতকে ধন্যবাদ জানিয়েছে চৌদ্দ দল।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Oct 2018, 03:38 PM
Updated : 12 Oct 2018, 03:38 PM

শুক্রবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু এভিনউয়ের আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে দলের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম “আমরা ধন্যবাদ জানাই আদালতকে। আদালত রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেছেন দেশকে নেতৃত্বে শূন্য করতে এই বর্বরোচিত হামলা করা হয়েছে। আদালতের পর্যবেক্ষণের সাথে দেশের ১৬ কোটি মানুষ একমত। কয়েকজন খুনি বিশ্বাসঘাতকদের দোসর ছাড়া সমগ্র জাতি এ ব্যাপারে একমত।”

বুধবার ওই মামলার রায়ে ঢাকার এক নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়।

আর খালেদা জিয়ার বড় ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরীসহ ১৯ জনকে দেওয়া হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।

এছাড়া এ মামলার আসামি ১১ পুলিশ ও সেনা কর্মকর্তাকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

নাসিম বলেন, “বহু প্রত্যাশিত ২১ অগাস্টের জঘন্যতম হত্যাকাণ্ডের রায় হয়েছে। আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করতে এই বর্ববোরচিত মর্মান্তিক হামলা চালানো হয়েছিল। আল্লাহর অশেষ রহমতে আমাদের নেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেদিন বেঁচে গিয়েছিলেন। আইভি রহমানসহ ২৪ জন মানুষকে আমরা হারিয়েছি।

“এই দুঃখ-বেদনা দীর্ঘ একযুগ ধরে আমরা বহন করে এসেছি। বিএনপি-জামায়াত সেদিন ক্ষমতায় ছিল। খালেদা সেদিন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পূর্ণমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন তিনি। ২১ অগাস্টের হামলার বিচার তো দূরের কথা তদন্ত পর্যন্ত করা হয়নি। এটা এখন ইতিহাসের অংশ হয়ে গেছে।”

বিএনপিকে সন্ত্রাসী লালনকারী রাজনৈতিক দল বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।

“বিএনপি একটি সন্ত্রাসী লালনকারী রাজনৈতিক দল। এটা স্বীকৃত, পরীক্ষিত ও প্রমাণিত। এরা ১৫ অগাস্টের হত্যাকারীদের আশ্রয় দিয়েছে, লালন করেছে। তাদের নেতা জিয়াউর রহমান এই খুনের সঙ্গে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে জড়িত ছিল। তারই ধারাবাহিকতায় বেগম জিয়া ক্ষমতায় এসে আত্মস্বীকৃত খুনিদের আশ্রয় প্রশ্রয় দিয়েছে, রাষ্ট্রদূত বানিয়েছে, এমপি-মন্ত্রী বানিয়ে পার্লামেন্টে বসিয়েছে।

“শুধু তাই নয় জাতীয় চার নেতার হত্যাকাণ্ড থেকে শুরু করে ২১ অগাস্টের গ্রেনেড হামলা- প্রতিটি হত্যাকাণ্ড তাদের আমলে হয়েছে। আর যাই হোক তাদের মুখে গণতন্ত্র আর আইনের শাসনের কথা মানায় না।”

বিএনপি রাজনৈতিক খুনি চক্র ও সন্ত্রাসী দল উল্লেখ্য করে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, “বিএনপি-জামায়াত যেমন সাম্প্রদায়িক যুদ্ধপরাধী দল , ঠিক সে রকম বিএনপি সব খুনিদের আশ্রয়দাতা ও রক্ষাকারী। বিএনপি খুন করায় এবং খুনিদের আশ্রয় দেয়।

“জামায়াতের সাথে যদি আমরা সকল লেনদেন বন্ধ করে দিয়ে থাকি তাহলে গণতন্ত্রের স্বার্থে, দেশের জন্য বিপদজনক, সন্ত্রাসী রাজনৈতিক খুনি চক্র বিএনপির সঙ্গেও সকল রাজনীতিক লেনদেন সবার বন্ধ করা উচিত। একই সাথে সিদ্বান্ত নিতে হবে বিএনপিকে শুধু ক্ষমতার বাইরে নয় রাজনীতির বাইরে রাখাটাও একটা রাজনৈতিক কর্তব্য।”

জাতীয় ঐক্য প্রস‌ঙ্গে তি‌নি ব‌লেন, “ঐক্যের নামে এই খুনি চক্রের সাথে জাতীয় ঐক্য যারা করে‌ছে, তারা একটি ঐতিহাসিক বেইমানী করছে। এই বিশ্বাসঘাতকরা প্রকারান্তরে রাজাকার জঙ্গী খুনিদের পক্ষ নিল।”

২১ অগাস্টের গ্রেনেড হামলার প্রসঙ্গ টেনে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, “এই রায়ের মধ্য দিয়ে দুইটি বিষয় পরিষ্কার হ‌লে, একটি হল বিএনপি জঙ্গি সংশ্লিষ্ট দল। বিএনপির জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা এই রায়ের মধ্য দিয়ে প্রমানীত হয়েছে। দ্বিতীয়টি হল বিএনপি এই ঘটনা ঘটানোর জন্য রাষ্ট্রযন্ত্রকে পরিপূর্ণভাবে ব্যবহার করেছে।”

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, জাসদ অপর অংশের সভাপতি শরিফ নুরুল আম্বিয়া, আওয়ামী লীগের সাংগঠ‌নিক সম্পাদক আহ‌মেদ হো‌সেন, খা‌লিদ মাহমুদ চৌধুরী, উপ দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া।