২১ অগাস্ট মামলার রায়ে প্রভাব খাটাচ্ছে সরকার: বিএনপি

একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলার মামলার বিচারকের উপর সরকার প্রভাব খাটাচ্ছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বিএনপি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Oct 2018, 05:19 PM
Updated : 8 Oct 2018, 05:54 PM

শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার বহুল আলোচিত এই মামলার রায়ের দুই দিন আগে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে এই আশঙ্কার কথা প্রকাশ করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ।

আগামী বুধবার ২১ অগাস্টের গ্রেনেড হামলার মামলায় রায় দেবে ঢাকার আদালত। এই মামলায় বিএনপির জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ কয়েক নেতা আসামি।

বিএনপি বিচার বিভাগের উপর হস্তক্ষেপের অভিযোগ করে এলেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবেই কাজ করছে।

সাবেক আইনমন্ত্রী মওদুদ বলেন, “২১ আগস্টের মামলায় তারেক রহমানসহ দলের কয়েকজন নেতা ও তৎকালীন প্রশাসনের কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে যেভাবে জড়ানো হয়েছে, তা যে কোনো দেশের গণতন্ত্র, স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং বিচার ব্যবস্থার প্রতি এক নির্লজ্জ বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখানো মাত্র। এই ধরনের ষড়যন্ত্রমূলক বিচার প্রক্রিয়া একমাত্র নৈরাজ্যবাদী সরকারের পক্ষেই সম্ভব।

“আমরা মনে করি এই নৈরাজ্যবাদী সরকার তারেক রহমান ও বিএনপিকে হেনস্তা করার জন্য ব্যস্ত। সার্বিক বিবেচনায় আমাদের মনে দৃঢ় সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে যে, তারা সাবেক প্রধান বিচারপতি ‍সুরেন্দ্র কুমার সিনহা ও বিচারক মোতাহার হোসেন (পালিয়ে বিদেশ আছেন) এর দৃষ্টান্তকে সামনে রেখে ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলার বিচারকের ওপর অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে তাদের নীল নকশা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে।”

এই সন্দেহের ক্ষেত্রে পদত্যাগী প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার লেখা বইয়ের কথা উল্লেখ করে মওদুদ বলেন, “বিএনপি শঙ্কিত এই কারণে যে, সরকার তার অসৎ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য তারেক রহমানসহ উক্ত মামলার বহু আসামিকে ফরমায়েসি রায়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত করার সকল প্রকার অপেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে।”

জঙ্গি নেতা মুফতি আব্দুল হান্নানের (মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত) প্রথম স্বীকারোক্তিতে তারেক রহমানের নাম ছিল না উল্লেখ করে মওদুদ বলেন, “এই সরকার আসার পর অবর্ণনীয় অত্যাচারের ফলে মুফতি হান্নানে দ্বিতীয়বারের স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়, যেটা আমাদের আইন অনুযায়ী করা যায় না। পরে তিনি এটা প্রত্যাহারও করেন।

“তদন্তকারী কর্মকর্তা যিনি সরকারের একেবারে নিজস্ব মানুষ। এই দুইটি বেআইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এই প্রতিহিংসামূলক ব্যবস্থা সরকার গ্রহণ করেছেন তারেক রহমানের বিরুদ্ধে।”

মামলায় তারেকের প্রধান কৌঁসুলি খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, “এই মামলায় মোট ২২৫ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন, একজন সাক্ষীও বলেনি যে, তারেক রহমানসহ বিএনপির নেতারা সম্পৃক্ত।

“রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জন্য এই ধরনের মামলা সাজানো হয়েছে। আইনজীবী হিসেবে বলতে চাই, এই মামলায় যদি সাজা দেওয়া হয়, তা হবে ফরমায়েসি রায়, তা হবে ন্যায়বিচারের পরিপন্থি।”

খন্দকার মাহবুব বলেন, “এই মামলার সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি হলেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যিনি ১৬১ করেছিলেন, সেখানে তিনি তারেক রহমান ও বিএনপি সম্পর্কে একটি কথাও বলেন নাই। হঠাৎ করে কেন এটা বলা হল?”

নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, জমিরউদ্দিন সরকার, রফিকুল ইসলাম মিয়া, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সাহিদা রফিক, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, মাহবুবউদ্দিন খোকন, আইন বিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল উপস্থিত ছিলেন।