দুর্নীতির মামলায় দণ্ড নিয়ে কারাবন্দি সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর শারীরিক অবস্থা তুলে ধরে তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড সোমবার একথা জানায়।
আট মাস ধরে কারাবন্দি খালেদাকে তিন দিন আগে চিকিৎসার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
মেডিকেল বোর্ডের প্রধান অধ্যাপক আব্দুল জলিল চৌধুরী সোমবার সাংবাদিকদের বলেন, “উনার (খালেদা) শারীরিক অবস্থা ভালো নয়। উনি দীর্ঘদিন ধরে রিউমেটয়েড আর্থ্ররাইটিস (গেঁটে বাত) রোগে ভুগছেন। এটা কনট্রোল না করার কারণে নানা জটিলতা দেখা দিয়েছে।
“এজন্য উনার হাত বাঁকা হয়ে গেছে, হাত তুলতে পারছেন না। বাম কাঁধ নাড়াতে পারেন না। ঘাড়ে ও কোমরে ব্যথা, বাম উরুর জয়েন্টে ব্যথা, বাম হাটু ফুলে গেছে।”
রোববার রাতে খালেদা জিয়াকে দেখে আসা মেডিকেল বোর্ডের সদস্য রিউমেটোলজি বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ আতিকুল হক বলেন, “বেগম খালেদা জিয়ার সমস্যা মূলত গেঁটে বাতজনিত।”
মেডিসিনের অধ্যাপক জলিল বলেন, “উনার উচ্চ মাত্রায় ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে, যা এখন নিয়ন্ত্রণে নেই।”
ডায়াবেটিস ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আনার পরই বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর খালেদার মূল চিকিৎসা শুরু করা হবে বলে জানান তিনি।
অধ্যাপক আতিকুল বলেন, “উনার মূল চিকিৎসা শুরুর আগে আমাদের দুই সপ্তাহ প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার সময় লাগবে। আমরা এরই মাঝে কিছু পরীক্ষা দিয়েছি। সেগুলোর রিপোর্ট আসার পর আমরা চিকিৎসা শুরু করতে পারব। তবে উনার ডায়াবেটিসের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে না এলে মূল চিকিৎসা শুরু করা যাবে না।”
ফিজিওথেরাপি বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “আগামীকাল থেকে ফিজিওথেরাপি শুরু হবে।”
মেডিকেল বোর্ডের প্রধান অধ্যাপক জলিল জানান, সোমবার রাতেও বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা দেখা করতে যাবেন।
কত দিন চিকিৎসা চলবে, তা সুনির্দিষ্ট করে এখন বলতে পারছেন না মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা।
এক প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক জলিল বলেন, “বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য মেডিকেল বোর্ড গঠনে হাই কোর্টের নির্দেশনার কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি।”
বিএসএমএমইউর পরিচালকের সম্মেলন কক্ষে এই সংবাদ সম্মেলনে বিএসএমএমইউর পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহ আল হারুন, মেডিকেল বোর্ডের সদস্য কার্ডিওলজির বিভাগের অধ্যাপক তানজিনা পারভিন, ফিজিক্যাল মেডিসিন এন্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক বদরুন্নেসা আহমেদ ও খালেদা ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. মামুন উপস্থিত ছিলেন।