জনগণ বিবেচনা করবে কারা সহিংসতা করে: ফখরুল

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শনিবার বিএনপির জনসভা নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের নেতামন্ত্রীদের বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন দলের মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Sept 2018, 10:54 AM
Updated : 26 Sept 2018, 11:25 AM

বুধবার নয়া পল্টনের কার্যালয়ে দলের যৌথসভার পর সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আমরা জনসভা করতে চেয়েছিলাম ২৭ তারিখে। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল যে, ২৭ তারিখ করা ঠিক হবে না। শনিবার ২৯ তারিখ ছুটির দিন সেদিন করেন, সোহওরায়ার্দী উদ্যানে করেন। সেজন্য আমরা ২৯ তারিখে জনসভা করার এই সিদ্ধান্তটি নিয়েছি।

“এখন বলা হচ্ছে, না। সেদিন নাকী আওয়ামী লীগের কোনো একটা মতবিনিময় সভা আছে, আমি ঠিক জানি না। এটা মহানগর নাট্যমঞ্চে সম্ভবত আছে। বহু দূরে এই মতবিনিময় সভা। তার সাথে আমাদের জনসভার সম্পর্কটা কোথায়, বিরোধ কোথায় সেটা তো আমরা বুঝতে পারছি না।”

বিএনপির সমাবেশের দিনটিতে মহানগর নাট্যমঞ্চে সমাবেশ করার পাশাপাশি ‘ঢাকা দখলে রাখার’ কথা মঙ্গলবার জানিয়েছিলেন চৌদ্দ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম।

নাসিমের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ফখরুল বলেন, “নাসিম সাহেব এক সভায় বলেছেন, রাজপথে গলিতে যেখানে পাবা সেখানে আটকিয়ে দাও। সেখান থেকে যেন বিএনপি বেরিয়ে আসতে না পারে। আর জাহাঙ্গীর কবির নানক বলছেন, হাত-পা ভেঙে দাও।

“এই তো হচ্ছে তাদের গণতন্ত্রের ভাষা। জনগণ বিবেচনা করবে এই সংঘাত-সহিংসতা কারা শুরু করে। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর কারা লগি-বৈঠা দিয়ে ২৭ জন তরুণকে হত্যা করেছিল এটা ভুলে যাওয়ার কথা নয়। দুর্ভাগ্য এটা যে আমাদের মিডিয়া কেন জানি এসবকে সামনে তুলে নিয়ে আসে না।”

আপনারা শনিবারের সমাবেশের জন্য অনুমতি চেয়ে আবেদন করবেন কিনা জানতে চাইলে ফখরুল বলেন, “ভাই অনুমতির আবেদন-টাবেদন না। ইট ইজ দেয়ার রেসপনসিবিলিটি। এটা তারা ঠিক করবেন কী করবেন? আজকে আমরা যৌথসভা করেছি ২৯ তারিখের জনসভার জন্য।”

শনিবারের জনসভা থেকে বিএনপির ‘ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা ও কর্মসূচি’ ঘোষণা করা হবে বলে জানান মহাসচিব।

“এই জনসভা থেকে আমরা আমাদের নীতিনির্ধারণী বক্তব্য দেব, আমাদের ভবিষ্যতের কর্মপন্থা, ভবিষ্যতের কর্মসূচি- এগুলো আসবে।”

অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে ‘প্রতারণামূলক’ বলেন মির্জা ফখরুল।

গত সোমবার নিউ ইয়র্কে ব্রিটিশ পররাষ্ট্র ও কমনওয়েলথ বিষয়ক মন্ত্রী জেরেমি হান্টের সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ‘অংশগ্রহণমূলক, অবাধ ও সুষ্ঠু’ করতে তার সরকার কাজ করে যাচ্ছে।

ফখরুল বলেন, “এটা স্পষ্ট বর্তমান সরকার আসন্ন নির্বাচন সম্পর্কে যেসব কথা মুখে বলছে সেগুলো সবই তাদের প্রতারণা জনগণের সঙ্গে। এমনকি বিদেশে গিয়েও প্রধানমন্ত্রী বলছেন তারা একটি ইনক্লুসিভ ইলেকশন দেখতে চায়, সকল দল আসুক সেটা তারা দেখতে চান।

“তারা নমুনা হচ্ছে তিন লক্ষ লোকের বিরুদ্ধে মামলা, তার নমুনা হচ্ছে দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দলের চেয়ারপারসন, তিনবার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, তাকে কারাগারে আবদ্ধ করে রাখা, তার নমুনা হচ্ছে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে আবার একটা মামলায় সাজা দেওয়ার চেষ্টা করা। আমাদের সিনিয়র নেতৃবৃন্দের মিথ্যা মামলাগুলোকে আবার তরান্বিত করা হচ্ছে।”

এর আগে মির্জা ফখরুলের সভাপতিত্বে দলের যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় দলের ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুল হাই, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব মাহবুবউদ্দিন খোকন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, কেন্দ্রীয় নেতা ফজলুল হক মিলন, শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, আবদুস সালাম আজাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।