১ অক্টোবর থেকে নেতাকর্মীদের ‘রেডি’ হতে বললেন মওদুদ

নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে ১ অক্টোবর থেকে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের ‘সর্বাত্মক প্রস্তুতি’ নিতে বলেছেন বিএনপি নেতা মওদুদ আহমদ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Sept 2018, 11:27 AM
Updated : 25 Sept 2018, 11:27 AM

মঙ্গলবার এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, ‘‘আমরা এবার খালি মাঠে গোল দিতে দেব না।… জনগণকে নিয়েই আমরা থাকব।”

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই নেতা বলেন, ‘‘আসুন পহেলা অক্টোবর থেকে রেডি হয়ে যান, রেডি হয়ে যান।”

তবে ১ অক্টোবর তারিখটি তিনি নির্দিষ্ট করে কেন বললেন, সে বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি তার কথায়।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে ‘জাতীয়তাবাদী প্রজন্ম ৭১’ এর উদ্যোগে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

‘জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়াকে’ শক্তিশালী করতে নেতাকর্মীদের মাঠে নামার আহ্বান জানিয়ে মওদুদ বলেন, ‘‘স্বৈরাচারী সরকারকে অপসারণ করতে হলে সারা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়াকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। মাঠে নামতে হবে। জনগণের জোয়ার এই সরকারকে দেখাতে হবে এবং তা দেখবে সরকার।”

একাদশ সংসদ নির্বাচনের তোড়জোড়ের মধ্যে বদরুদ্দোজা চৌধুরী নেতৃত্বাধীন ‘যুক্তফ্রন্ট’ এবং ডা. কামালের ‘জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া’ যে জোট বেঁধেছে, তাতে যোগ দিয়েছে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে থাকা বিএনপিও।

নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে সংলাপে বসে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন করতে সরকারকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে ‘জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার’ পক্ষ থেকে।

নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করা বিএনপি এবারও তাদের অবস্থানে অনড়। এর সঙ্গে তারা এবার দুর্নীতি মামলার রায়ে কারাবন্দি খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি যুক্ত করে নিয়েছে। 

মওদুদ বলেন, ‘‘জনগণকে সাথে নিয়ে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে আমরা আগামী নির্বাচন অংশ গ্রহণ করে এই সরকারকে অপসারিত করব। তা করব শান্তিপূর্ণভাবে ভোটের মাধ্যমে, কোনো ভায়োলেন্সের মাধ্যমে নয়।”

জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া নিয়ে নিউ ইয়র্কে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘যখন জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া ড. কামাল হোসেন এবং ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরী সাহেব শুরু করলেন তখন তারা (আওয়ামী লীগ) স্বাগত জানালেন। কিন্তু এখন প্রধানমন্ত্রী বলছেন, দুর্নীতিবাজ, ঘুষখোর, সুদখোরদের নিয়ে ঐক্য তৈরি করা হয়েছে, এরা জনগণের জন্য কিছু করতে পারবে না।

‘‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে এই ধরনের অশালীন বক্তব্য আমরা কখনোই আশা করি না। এতে একটা জিনিস স্পষ্ট হয়েছে এই সরকার  আতঙ্কিত হয়েছে, বিচলিত হয়েছে এই জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার অগ্রগতি দেখে। সে কারণে আজকে তাদের গাত্রদাহ। প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের কেউ এটা সহ্য করতে পারছেন না।”

প্রধানমন্ত্রীকে তার বক্তব্য প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়ে মওদুদ বলেন, “আপনি এই বক্তব্য প্রত্যাহার করুন। তা না হলে রাজনীতিতে কোনো শালীনতা আর থাকবে না। কারণ দুর্নীতির কথা যদি বলেন, তাহলে বর্তমান সরকারের চাইতে আমাদের গত ৫০-৬০ বছরে এমনকি পাকিস্তান আমল থেকে শুরু করে কোনো সরকার এত দুর্নীতি করে নাই। আর আজকে আমাদেরকে আপনি দোষারোপ করছেন।”

ক্ষমতাসীনরা যেভাবে সমালোচনা করছেন, তাতে ‘জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার’ জনপ্রিয়তা আরও বাড়বে বলে মন্তব্য করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই নেতা।

তিনি বলেন, “এটা একটা স্বৈরাচার সরকার। তাদের আচার-আচরণ, চিন্তা-চেতনা, ধ্যান-ধারণা কী রকম- সেটা আমরা এখন বুঝতে পারছি। আর তিন মাসও বাকি নাই।”

জাতীয়তাবাদী প্রজন্ম ৭১ এর সভাপতি ঢালী আমিনুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে এ আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, কেন্দ্রীয় নেতা আশরাফউদ্দিন বুকুল, আবদুস সালাম আজাদ, রফিক শিকদার, জাসাসের শাহরিন ইসলাম শায়লা বক্তব্য দেন।