আপনারা তো প্রতিপক্ষ, কাদেরকে নজরুল

কামাল হোসেন ও এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বে ‘জাতীয় ঐক্য’ নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম খান।

ওবায়দুল কাদেরের প্রশ্ন তুলেছিলেন- দেশের ‘সবচেয়ে জনপ্রিয় দল’ আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে কোনো ঐক্য হলে তাকে ‘জাতীয় ঐক্য’ কীভাবে বলা যায়।

উত্তরে নজরুল ইসলাম খান স্পষ্ট করে বলেছেন, এ ঐক্য আওয়ামী লীগেরই বিরুদ্ধে।

“এখন যে কারণে ঐক্য সেটা হচ্ছে আপনারা যেসব অন্যায়-অনাচার করছেন, অপরাধ করছেন, সেসব থেকে দেশ এবং মানুষকে মুক্ত করার আন্দোলন। এই আন্দোলনে আপনাকে সাথে পাওয়া যাবে না। এই আন্দোলনে আপনারা প্রতিপক্ষ, আপনারা অন্য পাশে। দাবি তো আপনাদের কাছেই।”

রোববার রাজধানীতে জাতীয়তাবাদী নবীন দলের এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুলের এমন মন্তব্য আসে।

তিনি বলেন, শনিবার মহানগর নাট্যামঞ্চে নাগরিক সমাবেশে বাংলাদেশে ‘বৃহত্তর আন্দোলনের ক্ষেত্র’ সৃষ্টি হওয়ায় সরকার ‘ভয় পাচ্ছে’।

‘‘আগামী দিনে ইনশাল্লাহ সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবির ভিত্তিতে দেশের জনগণের একটা ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন  গড়ে উঠতে যাচ্ছে। এই  আন্দোলনের মুখে সরকারের শুধু পদত্যাগ নয়, এই সরকারকে পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তীর (সাবেক ভারতীয় হাই কমিশনার ) ভাষায় লজ্জাজনক পরাজয় বরণ করতে হবে।”

নির্বাচন সামনে রেখে বদরুদ্দোজা চৌধুরী নেতৃত্বাধীন ‘যুক্তফ্রন্ট’ এবং ডা. কামালের ‘জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া’ শনিবার মহানগর নাট্যামঞ্চে নাগরিক সমাবেশ করে।

নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে আসা বিএনপির নেতারাও ওই সমাবেশে যোগ দেন।

নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে সংলাপে বসে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন করতে সরকারকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয় ওই সমাবেশ।

নির্বাচন সামনে রেখে দলগুলোর এই জোট বাধা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাদের শনিবার এব জনসভায় বলেন, “যে জাতীয় ঐক্যের কথা আপনারা বলছেন, সেটা বিএনপির জাতীয়তাবাদী সাম্প্রদায়িক জাতীয় ঐক্য। যারা যুদ্ধাপরাধীদের নিয়ে রাজনীতি করে, সেই বিএনপিকে নিয়ে জাতীয় ঐক্য হবে, এটা বাংলাদেশের মানুষ বিশ্বাস করে না।”

এর জবাবে বিএনপি নেতা নজরুল বলেন, “দুর্নীতি অনাচার করে তারা মানসিকভাবে এতোই দুর্বল যে এখন সব কিছুতেই ভয় পাচ্ছে। বেগম খালেদা জিয়া যে মামলায় অভিযুক্ত হয়েছেন সেটাতে তিনি জামিন পেয়েছেন। অন্য মামলাতেও জামিন পেয়েছেন। দুইটা মামলায় তাকে আটকে রাখা হয়েছে।”

এখন নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের বিরোধিতা করা আওয়ামী লীগই যে ১৯৯৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করেছিল, সে কথা মনে করিয়ে দেন নজরুল। 

তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ যখন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায়- তখন সেটা হালাল। আর আমরা যখন বলি যে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে- তখন সেটা হারাম।… এটাই আওয়ামী লীগের চরিত্র।”

এর বিরুদ্ধে ‘ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন’ গড়ে তুলতে জাতীয়তাবাদী নবীন দলকে সংগঠিত হওয়ার আহবান জানান নজরুল।

খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দির মুক্তির দাবিতে  জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স কক্ষে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

সংগঠনের সভাপতি হুমায়ুন আহম্মেদ তালুকদারের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য জয়নুল আবদিন ফারুক, হাবিবুর রহমান হাবিব আলোচনায় অংশ নেন।