পুলিশের লাঠিপেটায় পণ্ড বাম জোটের ইসি ঘেরাও

‘নিরপেক্ষ তদারকি সরকার’ গঠনের দাবিতে বাম গণতান্ত্রিক জোটের নির্বাচন কমিশন (ইসি) ঘেরাওয়ের কর্মসূচি লাঠিপেটা করে পণ্ড দিয়েছে পুলিশ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Sept 2018, 09:09 AM
Updated : 20 Sept 2018, 04:16 PM

বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশের পর দুপুর দেড়টার দিকে বাম গণতান্ত্রিক জোটের একটি মিছিল আগারগাঁওয়ের ইসি কার্যালয় অভিমুখে যাত্রা করে।

মিছিলটি কারওয়ান বাজারের সার্ক ফোয়ারার কাছে পৌঁছালে পুলিশ তাদের পথরোধ করে। নেতাকর্মীরা বাধা উপেক্ষা করে সামনে এগোতে চাইলে পুলিশ লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

জোটের শরিক সিপিবির প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সার্ক ফোয়ারার কাছে গণতান্ত্রিক জোটের পদযাত্রা পৌঁছালে পুলিশ বিনা উসকানিতে তাদের উপর লাঠিচার্জ করে।

“পুলিশের হামলায় জোটের সমন্বয়ক ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি ও সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য লুনা নূরসহ অনেকে আহত হন।”

এদের মধ্যে সাইফুল হককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে রতন জানান।

পরে প্রেস ক্লাবের সামনে জোটের বিক্ষোভ সমাবেশে সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাসদ (মার্কবাদী) নেতা শুভ্রাংশু চক্রবর্ত্তী, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নু ও গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা ফিরোজ আহমেদ বক্তব্য দেন।

অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে তফসিল ঘোষণার আগে সংসদ ভেঙে দিয়ে ‘নিরপেক্ষ তদারকি সরকার’ গঠনের মাধ্যমে নির্বাচন অনুষ্ঠানসহ ১০ দফা দাবি উত্থাপন করে বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশন ঘেরাওয়ের ঘোষণা দিয়েছিল বাম গণতান্ত্রিক জোট।

ইভিএম চালু ও ডিজিটাল ভোট ডাকাতির পাঁয়তারা বন্ধ করা, প্রার্থীর জামানত ৫ হাজার টাকা ও নির্বাচনী ব্যয় ৩ লাখ টাকা নির্ধারণ করে কঠোরভাবে তা মেনে চলতে বাধ্য করা, অনলাইনে মনোনয়পত্র জমা দেওয়ার বিধান চালু করা, ভোটার ইচ্ছায় জনপ্রতিনিধি প্রত্যাহার করা এবং ‘না’ ভোটের বিধান চালু করা এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্ষেত্রে ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনসূচক সইয়ের বিধান বাতিল করা প্রভৃতি রয়েছে বাম জোটের অন্য দাবির মধ্যে।

আটটি বামপন্থি রাজনৈতিক দল মিলে গত ১৮ জুলাই ‘বাম গণতান্ত্রিক জোট’ যাত্রা শুরু করে।

সিপিবির নিন্দা

বাম গণতান্ত্রিক জোটের ইসি ঘেরাও কর্মসূচিতে ‍পুলিশি হামলার নিন্দা জানিয়েছে সিপিবি।

দলটির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ আলম এক বিবৃতিতে বলেন, কারওয়ান বাজারে নারী পুলিশের অনুপস্থিতিতে নারীনেত্রীদের উপর পুলিশের পুরুষ সদস্যরা ‘ন্যক্কারজনক’ হামলা করেছে।

সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ১০ দাবিতে বাম গণতান্ত্রিক জোট বৃহস্পতিবার ইসি ঘেরাও করতে গেলে কারওয়ান বাজার এলাকায় পুলিশের বাধার মুখে পড়ে।

সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ১০ দাবিতে বাম গণতান্ত্রিক জোটের ইসি ঘেরাওয়ের মিছিল বৃহস্পতিবার দুপুরে কারওয়ান বাজার পৌঁছলে লাঠিপেটা করে নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ।

বিবৃতিতে বলা হয়, “গণবিরোধী সরকার জনরোষের ভয়ে ভীত হয়ে ক্রমেই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। পেটোয়া পুলিশ বাহিনীকে দিয়ে সরকার জনগণের বিক্ষোভ দমন করতে চাইছে।”

বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচি চলাকালে সাতক্ষীরায় জোটের ৩ জন নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। 

সরকারকে হুঁশিয়ার করে বিবৃতিতে বলা হয়, “জনগণের ন্যায়সংগত দাবিকে অগ্রাহ্য করে, হামলা-নির্যাতন করে কোনোকালেই স্বৈরশাসকরা রেহাই পায়নি। বর্তমান সরকারও রেহাই পাবে না। জনগণের প্রবল আন্দোলনের কাছে এই সরকারকেও নতি স্বীকার করতে হবে।”