বুধবার ঢাকার বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টারে জাতীয় পার্টির ‘আগামী জাতীয় নির্বাচনে অত্যাধুনিক তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর নির্বাচনী ক্যাম্পেইন’র সমাপনী অধিবেশনে এই ইচ্ছার কথা জানান অশীতিপর এরশাদ।
তিনি বলেন, “মৃত্যুর আগে আমি জাতীয় পার্টিকে আবারও ক্ষমতায় দেখতে চাই। আমি দেখে যেতে চাই, জাতীয় পার্টি জনগণের দল হয়েছে, তারা জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে।
“আমি মরার আগে দেখে যেতে চাই, জাতীয় পার্টি শৃঙ্খলমুক্ত হয়েছে। দেখে যেতে চাই, জাতীয় পার্টি আবারও জেগে উঠেছে। এটাই আমার শেষ ইচ্ছা।”
ঢাকা-১৭ আসনে প্রার্থী হতে গণসংযোগে নেমে এরশাদ এই নির্বাচনকে তার শেষ নির্বাচন বলে উল্লেখ করেছিলেন।
বিএনপিবিহীন সংসদে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সামনে ক্ষমতায় যাওয়ার ‘সুবর্ণ সুযোগ’ তৈরি হয়েছে বলে নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করার প্রয়াস চালান এরশাদ।
তিনি বলেন, “উই ক্যান ডু ইট, উই উইল ডু ইট।”
২০০৯-১৩ মেয়াদে মহাজোট সরকারের শরিক হিসাবে ছিল এরশাদের গঠিত দল জাতীয় পার্টি। আর ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির পর দশম জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগকে সমর্থন দিয়ে সরকার ও বিরোধী দল- দুই জায়গাতেই জাতীয় পার্টিকে দেখা যাচ্ছে।
বিএনপিবিহীন সংসদে জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ এখন বিরোধী দলীয় নেতা; সেই সঙ্গে দলের একজন মন্ত্রী ও দুইজন প্রতিমন্ত্রী রয়েছে সরকারে। এরশাদ নিজেও হয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত।
তবে এক সপ্তাহ আগে জাতীয় পার্টির শনিবারের যৌথসভার স্থল পরিদর্শনে এসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ দূত এরশাদ বলেছিলেন, ‘গৃহপালিত বিরোধী দলের’ ভূমিকায় না থেকে আগামী নির্বাচনে জাতীয় পার্টি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় যেতে চায়।
দুর্নীতির অভিযোগে দায়ের করা মামলাগুলো এখনও প্রত্যাহার হয়নি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করে এরশাদ বলেন, “আমরা আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় এনেছিলাম। কিন্তু আমরা সুবিচার পাইনি। তারা আমাদের বন্ধু নয়।
“আমি এখনও মুক্ত রাজনীতিবিদ হতে পারিনি। সব সময় শৃঙ্খলাবদ্ধ হয়ে থাকতে হয়। এখন আশা করছি, আগামী নির্বাচনে শৃঙ্খল ভেঙ্গে দিয়ে মুক্ত মানুষ হব।”
দুই দিনব্যাপী এই ক্যাম্পেইনে জাতীয় পার্টির ওয়েবসাইট উদ্বোধন ছাড়াও তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহারের পাশাপাশি রাজনৈতিক প্রচারণার নানা দিক নিয়ে কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিতে কর্মশালার আয়োজন করে জাতীয় পার্টি।
তরুণ ভোটারদের টানতে তৃণমূলে গিয়ে সভা-সমাবেশ, মিছিল করার চেয়ে তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক ক্যাম্পেইনের দিকে মনোযোগী হতে এর আগের দিন নির্দেশনা দিয়েছিলেন এরশাদ।
তরুণ ভোটারদের উদ্দেশে এরশাদ বলেন, “আজকে তোমরা প্রযুক্তির মাধ্যমে দেখবে জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় থাকতে কী কী করেছে। আমি ল্যাপটপ খুলে বসে থাকব। তোমাদের সমস্যা ও দুঃখের কথা শুনব; তা দূর করব।”
সমাপনী অধিবেশনে আরো বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের এবং মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার।
আরও খবর