মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে গণফোরাম সভাপতি কামাল বলেন, “সারা জীবন যেটা আমি করিনি, শেষ জীবনে সেটা করতে যাব কেন?”
আওয়ামী লীগ ছেড়ে আসা কামাল হোসেন এবং বিএনপি ছেড়ে আসা এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার ঘোষণা দেন গত মাসের শেষে।
কামালের গণফোরাম, বদরুদ্দোজা চৌধুরীর বিকল্পধারার সঙ্গে মাহমুদুর রহমান মান্নার নাগরিক ঐক্য এবং আ স ম রবের জেএসডি রয়েছে এই ‘জাতীয় ঐক্য’ গঠনের প্রক্রিয়ায়।
তাদের একসঙ্গে কাজ করার ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে বিএনপি বলেছে, সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে তাদের জাতীয় ঐক্যের প্রক্রিয়া ‘জাতীয় রাজনৈতিক ঐক্যে’ রূপান্তরিত হবে বলে দলটি আশা করছে।
অন্যদিকে তাদের এই জোটভুক্ত হওয়ার উদ্যোগকে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্ণনা করেছেন ‘আওয়ামী লীগবিরোধীদের’ এক জায়গায় আসার চেষ্টা হিসেবে।
সংবাদ সম্মেলনে ড. কামালের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল- জামায়াতকে রেখে বিএনপির সঙ্গে কোনো ‘বৃহত্তর ঐক্যে’ তিনি যাবেন কিনা।
উত্তরে তিনি বলেন, “আমি ও আমাদের দল যাবে না। অন্য কোনো দল করবে কিনা আমি জানি না।
“তবে আমি যতটুকু জানি, ওরা (জামায়াতে ইসলামী) তো এখন দলও না, ইতোমধ্যে তাদের নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে।”
নির্বাচনের আগে ‘বৃহত্তর ঐক্য’ গড়ার কাজ কতটা এগিয়েছে জানতে চাইলে কামাল বলেন, “এই ঐক্যের কাজ আগাচ্ছে, ঐক্য গড়ে উঠছে, আগাচ্ছে। আমরা সেটাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখতে চাই ।”
আগামী ২২ সেপ্টেম্বর ঢাকার গুলিস্তানের মহানগর নাট্যমঞ্চে সমাবেশের অনুমতি পাওয়ার কথাও জানান কামাল হোসেন।
‘কারাগারে আদালত সংবিধানসম্মত নয়’
জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট মামলার বিচারে ঢাকার একটি বিশেষ জজ আদালতকে পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত ‘সংবিধানসম্মত হয়নি’ বলে মনে করেন কামাল হোসেন।
এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমার ধারণা এটা তারা আদালতে চ্যালেঞ্জ করবে। আদালত এটার বিচার করবে। আমি আদালতে গেলে এটাই বলব, এটা সংবিধানসম্মত না।”
জিয়া এতিমখানা দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত খালেদা জিয়া গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ঢাকার পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি। জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট মামলার শুনানি শেষ করতে কারাগারের ভেতরেই আদালত বসিয়ে তার বিচারের ব্যবস্থা করেছে সরকার।
কামাল বলেন, “বিরোধী দলীয় নেত্রীকে আটক করেছেন। তার ব্যাপারে জেলখানায় বিচার-টিচার- এসব ঠিক নয়। বলা হচ্ছে কর্নেল তাহেরের উদাহরণ। সামরিক শাসনে সেই বিচার হয়েছে। ৪১ বছরের আগের উদাহরণ একটা দিয়ে এটা (আদালত স্থানান্তর) করার কোনো যুক্তি থাকতে পারে না।”
এই সিদ্ধান্ত শেষ পর্যন্ত সরকারের ‘পক্ষে যাবে না’ বলেও মন্তব্য করেন সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে গণফোরামের উদ্যোগে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নেতা জগলুল হায়দার আফ্রিক, আওম শফিক উল্লাহ, সাইদুর রহমান, মোশতাক আহমদ, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সদস্য সচিব আবম মোস্তফা আমিন উপস্থিত ছিলেন।