ইভিএমের সীমিত ব্যবহারের পক্ষে প্রধানমন্ত্রী

আগামী সংসদ নির্বাচনে ইভিএমের পরীক্ষামূলক ব্যবহারের পক্ষে মত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Sept 2018, 11:39 AM
Updated : 2 Sept 2018, 02:31 PM

বিএনপিসহ অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের বিরোধিতার প্রেক্ষাপটে রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, “এটা চাপিয়ে দেওয়া যাবে না। কারণ এটা প্র্যাকটিসের ব্যাপার। আমাদের পরীক্ষামূলক করে দেখতে হবে।”

২০১০ সালে বাংলাদেশে চালুর পর এখন পর্যন্ত স্থানীয় সরকারের নির্বাচনেই কেবল ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) পরীক্ষামূলক ব্যবহার হয়েছে।

আগামী ডিসেম্বরে অনুষ্ঠেয় সংসদ নির্বাচনে ব্যবহারের জন্য ইসি ইতোমধ্যে নির্বাচনী আইন সংশোধনের প্রস্তাব করেছে। এক-তৃতীয়াংশ আসনে ইভিএম ব্যবহারের একটি পরিকল্পনার কথা প্রকাশ পেলেও সিইসি বলেছেন, তারা এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি।

ইসির আকস্মিক পদক্ষেপের পর থেকে রাজনৈতিক অঙ্গন সরগরম ইভিএম নিয়ে। বিএনপি এর বিরোধিতা করে বলেছে, ভোটে ‘ডিজিটাল কারচুপি’ করতে ইভিএম ব্যবহারের পরিকল্পনা হচ্ছে।

রোববার গণভবনে নেপাল সফর পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা সাংবাদিকদের প্রশ্নে ইভিএমের পক্ষেই নিজের অবস্থান জানান।

তিনি বলেন, “ইভিএমে ভোট পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেই হয়। ইভিএমটা নিয়ে আসার জন্য আমিই কিন্তু সবসময় পক্ষে ছিলাম। এখনও পক্ষে আছি।”

“আমরা চাচ্ছি, কিছু কিছু জায়গায় শুরু হোক, সীমিত আকারে এটা দেখুক। প্রযুক্তির যদি কোনো সিস্টেম লস হয় কি না, সেটা দেখা যাক। সেটা হলে সঙ্গে সঙ্গে বাতিল করা হবে। এটা এমন না যে এটাই শেষ কথা। আমরা সীমিত আকারে শুরু করি, প্রযুক্তির ব্যবহার।”

বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ব্যবহৃত ইভিএম

বিএনপি বলছে, বিশ্বের ৯০ ভাগ দেশেই ইভিএম চালু নেই, কয়েকটি দেশ চালু করার পর আবার পিছু হটেছে।

শেখ হাসিনা পাল্টা বলেন, কারচুপি করতে পারবে না বলে বিএনপি ইভিএমে আপত্তি জানাচ্ছে।

“কারণ তাদের জন্মটাই কারচুপির মাধ্যমে। তারা আবার কারচুপির কথা বলে।  ইভিএম হলে সেই কারচুপিটা করতে পারবে না। একের বেশি ভোট দিতে পারবে না, সিল মারতে পারবে না- সেজন্য তারা আপত্তি জানাচ্ছে। এটা স্পষ্ট।”

‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ে তুলতে সবক্ষেত্রে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের অংশ হিসেবেই ভোট দেওয়ায় ইভিএম প্রবর্তনের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। 

সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইভিএমের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, “সবচেয়ে সুবিধা হল, যেই মানুষটা যাচ্ছে, একটা টিপ দিয়ে ভোট দিয়ে আসছে এবং সাথে সাথে রেজাল্টটা পেয়ে যাচ্ছে।”

নির্বাচন স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য করতে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরার পাশাপাশি বিএনপি আমলে ভোট কারচুপির কথাও বলেন শেখ হাসিনা।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ক্ষমতা দখলের কথা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, “ভোটে যে কারচুপির রাজনীতি, সেটা তো জিয়াউর রহমানই প্রথম এনেছে এদেশে। কারণ অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে, সেটাকে বৈধ করতে চেয়েছে সে।

“আজকে বিএনপি যখন সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলে। তারা তাদের জন্মস্থানটা খোঁজ করুক। কোথায়, কীভাবে হয়েছে দেখুক। তাদের জন্মের সূত্রটা, লগ্নটা মনে করুক। শুভ না অশুভ লগ্ন নিয়ে তারা জন্ম নিয়েছে।”

খালেদা জিয়ার আমলে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের কথা স্মরণ করে  শেখ হাসিনা বলেন, “১৫ ফেব্রুয়ারির ভোটের কথা যদি কারও মনে থাকে, তারা কী করেছিল। ঘোষণা দিয়েছিল দ্বিতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী। ১৫ দিনও ক্ষমতায় থাকতে পারেনি। জনগণ চাইলে তো থাকতে পারত। কারচুপি করে ক্ষমতায় আসতে চেয়েছিল বলে বাধ্য হয়েছিল পদত্যাগ করতে।”