জোট বাঁধলেন কামাল হোসেন-বি চৌধুরী

গণফোরামকে নিয়ে এক সঙ্গে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তফ্রন্ট। এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী ও কামাল হোসেনের যৌথ নেতৃত্বে চলবে এই প্রক্রিয়া।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 August 2018, 03:12 PM
Updated : 28 August 2018, 06:19 PM

ঢাকার বেইলি রোডে গণফোরাম সভাপতির বাড়িতে মঙ্গলবার রাতে দুই ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকের পর যুক্তফ্রণ্টের চেয়ারম্যান বি চৌধুরী সাংবাদিকদের একথা জানান। এ সময়ে তার পাশেই ছিলেন কামাল হোসেন।

আগামী ডিসেম্বরে অনুষ্ঠেয় একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বাইরে তৃতীয় একটি ধারা তৈরিতে কাজ করছে বি চৌধুরী, আ স ম রব ও মাহমুদুর রহমান মান্নার যুক্তফ্রন্ট।

গত বছরের ডিসেম্বরে যুক্তফ্রন্ট গঠনের পর কামাল হোসেনের গণফোরাম এবং আবদুল কাদের সিদ্দিকীর কৃষক, শ্রমিক, জনতা লীগকে যুক্ত করার চেষ্টায় রয়েছেন জোটটির নেতারা।

এর মধ্যে গত ২০ অগাস্ট বিকল্পধারা মহাসচিব আবদুল মান্নানের গুলশানের বাড়িতে এক বৈঠকে গণফোরামের জোটভুক্ত হওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।

তবে এরপর কামাল হোসেনের অনাগ্রহের খবর গণমাধ্যমে প্রকাশের মধ্যে মঙ্গলবার রাতে তার বাড়িতে হাজির হন যুক্তফ্রন্টের নেতারা।

বিকল্প ধারার সভাপতি বি চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, “যুক্তফ্রন্টের চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরী ও গণফোরামের সভাপতি বাংলাদেশের সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য এই সভায় আমরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি।

“এই লক্ষ্যে পরবর্তী কর্মসূচি প্রণয়নের জন্য আমরা একটি সাব কমিটি গঠন করার ব্যবস্থা নিয়েছি। দ্রুত তারা এ ব্যাপারে গণমাধ্যমকে জানাবেন।”

সাব কমিটিতে কারা আছেন- জানতে চাওয়া হলে কামাল হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, “এই বিষয়ে গণমাধ্যমকে পরে জানানো হবে।”

‘জাতীয় ঐক্য’ গঠনে বিএনপির প্রস্তাব নিয়ে এই সভায় কোনো আলোচনা হয়েছে কি না- জানতে চাওয়া হলে বি চৌধুরী বলেন, “এই পর্যায়ে এটা নিয়ে আলোচনা হয়নি। আজকে আমাদের নিয়ে আলোচনা হয়েছে।”

সভায় কামাল হোসেনকে যুক্তফ্রন্টের পক্ষ থেকে সাতটি প্রস্তাব দেওয়া হয় বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

>> জামায়াতকে বাদ দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের দলসমূহের ঐক্য জরুরি।

>> বাক-স্বাধীনতা নিশ্চিত করা।

>> বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা।

>> নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্পন্ন করা।

>> সংসদ ও সরকারের ভারসাম্য নিশ্চিত করা।

>> সংসদ ভেঙে দেওয়া এবং প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভা বাতিল ঘোষণা করা।

>> নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনো রাজনৈতিক কর্মীকে গ্রেপ্তার না করা এবং সব রাজনৈতিককর্মীর মুক্তি নিশ্চিত করা।

রাত ৭টা ৫০ মিনিটে বি চৌধুরী বেইলি রোডে কামাল হোসেনের বাসায় ঢোকেন। বৈঠক শেষে তারা বেরিয়ে আসেন রাত ৯টা ৫০ মিনিটে। কামাল হোসেন বাসার ফটক থেকে বেরিয়ে গাড়ির সামনে গিয়ে বি চৌধুরীকে বিদায় জানান।

বৈঠকে যুক্তফ্রন্টের সদস্য সচিব ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, জেএসডির সভাপতি আ স ম রব, সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন, বিকল্পধারার মহাসচিব আবদুল মান্নান, যুগ্ম মহাসচিব মাহি বি চৌধুরী, সহ-সভাপতি শাহ আহমেদ বাদল, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু, কেন্দ্রীয় নেতা মোস্তাক আহমেদ, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার আহ্বায়ক আ ব ম মোস্তফা আমিন উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়াও ছিলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী ও ডাকসুর সাবেক ভিপি সুলতান মো. মনসুর ও রবের স্ত্রী তানিয়া রব।