বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ঈদের আগের দিন মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, গত রোববার জ্যেষ্ঠ নেতৃবৃন্দের পক্ষ থেকে তারা ওই চিঠি কারাগারে পাঠিয়েছেন।
“দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ যাতে ঈদের দিন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সাথে সাক্ষাতের সুযোগ পান, সেজন্য দলের পক্ষ থেকে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে। অনুমতি পেলে নেতৃবৃন্দ চেয়ারপারসনের সঙ্গে দেখা করতে যাবেন। আমরা আশা করছি, নেতৃবৃন্দ অনুমতি পাবেন।”
জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের দণ্ড নিয়ে গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে পুরনো ঢাকার পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি আছেন খালেদা জিয়া।
এর মধ্যে গত জুন মাসে ঈদুল ফিতরের দিনও বিএনপি মহাসচিবসহ স্থায়ী কমিটির নেতৃবৃন্দ সাক্ষাতের জন্য কারা কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দিয়েছিলেন। কিন্তু কারা কর্তৃপক্ষ ঈদের দিন খালেদা জিয়ার আত্মীয়-স্বজন ছাড়া কাউকে অনুমতি দেয়নি।
খালেদা জিয়ার মেজ বোন, ছোট ভাইসহ কয়েকজন আত্মীয় সেদিন কারাগারে গিয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন।
বিএনপি নেতারা বলছেন, এবার যাদের জন্য আবেদন করা হয়েছে, তাদের মধ্যে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির কয়েকজন সদস্য রয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মাহবুবুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “স্বজনরা আবেদন করলে অন্যান্য বন্দির মত তাদেরও দেখা করার সুযোগ দেওয়া হতে পারে। তবে কোনো আবেদনের কথা এখনও আমার জানা নেই।”
নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সংবাদ সম্মেলনে ঈদে সড়ক-মহাসড়কে ঘরমুখো মানুষের দুর্ভোগের কিছু চিত্র ও সড়ক দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান তুলে ধরে ‘ব্যর্থতার’ জন্য সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খানের সমালোচনা করেন রুহুল কবির রিজভী।
সেইসঙ্গে বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ সোমবার ভোলায় এক অনুষ্ঠানে বিএনপি সম্পর্কে যে বক্তব্য রেখেছেন তাকে ‘উদ্ভট ও গুজব’ আখ্যায়িত করে তার নিন্দা করেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব।
ভোলার ওই অনুষ্ঠানে তোফায়েল বলেছিলেন, বিএনপি ক্ষমতায় এলে “প্রথম দিনই লক্ষ লোককে হত্যা করবে। কোনো মা-বোন ইজ্জত নিয়ে বাড়িতে থাকতে পারবে না।”
খালেদা জিয়ার ঈদ শুভেচ্ছা
দুইদিন আগে দেখা করতে যাওয়া স্বজনদের মাধ্যমে খালেদা জিয়া দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে তথ্য দেন বিএনপি নেতা রিজভী।
“কারাগারে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে যারা দেখা করতে গিয়েছিলেন তাদের মাধ্যমে তিনি দেশবাসী, বিশ্ব মুসলিম সম্প্রদায়, দলের নেতা-কর্মী, সাংবাদিকসহ সর্বস্তরের মানুষকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।”
ইতোমধ্যে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পৃথক বিবৃতির মাধ্যমে দেশবাসীসহ সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বলেও জানান রিজভী।
ঈদের দিনে বিএনপির কর্মসূচি
ঈদের দিন সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত ছাড়া অন্য কোনো কর্মসূচি রাখেনি বিএনপি।
রিজভী জানান, বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা শেরেবাংলা নগরে জিয়ার কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাবেন এবং ফাতেহা পাঠ করবেন।
অন্যদের মধ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য মামুন আহমেদ, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, আসাদুল করীম শাহিন, মুনির হোসেন রিজভীর সঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।