দ্রুত রাজনৈতিক চিত্র বদলের আশায় মওদুদ

দেশে কোনো ‘সরকার নেই’ দাবি করে ‘অতি দ্রুত’ রাজনৈতিক চিত্রের পরিবর্তন ঘটবে বলে প্রত্যাশা করছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 August 2018, 11:47 AM
Updated : 10 August 2018, 11:47 AM

শুক্রবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, “যে দেশের রাজধানীতে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের উপরে আক্রমণ হয়, কারা আক্রমণ করেছে আমরা সবাই তা জানি এবং একজনও গ্রেপ্তার হয় নাই। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ৮০০ কোটি চলে গেল, একজনও গ্রেপ্তার হয় নাই, সোনা রূপা হয়ে গেল, তামা হয়ে গেল, একজন মানুষও গ্রেপ্তার হয় নাই, এক লক্ষ টনের উপরে কয়লা উধাও হয়ে গেল একজনও গ্রেপ্তার হয় নাই,  ….।

“এখানে কী সরকার আছে? এসব কিছু দেখে মনে হয় দেশে কোনো সরকার নাই। সরকার থাকলে তো এসব হওয়ার কথা নয়। আমি আগেও বলেছি, আজকেও বলতে চাই, অতি দ্রুত বাংলাদেশের রাজনীতির চিত্রের পরিবর্তন ঘটতে থাকবে। পরিবর্তনের শেষ সময় এখন এসে গেছে। ”

প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সমালোচনা করে সাবেক আইনমন্ত্রী মওদুদ বলেন, “প্রধান নির্বাচন কমিশনার সরকারের একজন তল্পিবাহক ব্যক্তি। বিবেকের তাড়নায় একটা সত্য কথা বলে ফেলেছেন। সেটা হলো আগামী সাধারণ নির্বাচনে যে অনিয়ম হবে না সেটার ব্যাপারে কোনো নিশ্চয়তা দেওয়া সম্ভবপর নয়। আজকের খবরের কাগজে দেখলাম- চারজন নির্বাচন কমিশনার সিইসির এই বক্তব্যের সাথে দ্বিমত পোষণ করেছেন।

“এরপরে এই সিইসির আর নিজের পদে থাকার অধিকার থাকতে পারে না। আমরা অবিলম্বে তার পদত্যাগ দাবি করছি । তার আর একদিনও সিইসি পদে থাকার অধিকার আছে বলে আমরা মনে করি না।”

জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে নাগরিক অধিকার আন্দোলনের ফোরামের উদ্যোগে  ‘শিক্ষার্থী ও সাংবাদিক নির্যাতন এবং বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা কেন’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়।

মন্ত্রিসভায় সড়ক পরিবহন আইনের খসড়া অনুমোদনের মাধ্যমে সরকার শিক্ষার্থীদের সাথে রাজনৈতিক প্রতারণা করেছে বলে মনে করেন মওদুদ।

তিনি বলেন, “মন্ত্রিসভায় সরকার যে সড়ক পরিবহন আইনটা অনুমোদন দিল- ইটস টোটালি এ পলিটিক্যাল ব্লাফ। রাজনৈতিক প্রতারণা করেছে সরকার। এর চাইতে বড় প্রতারণা আর হতে পারে না। তারা (শিক্ষার্থীরা) কী চেয়েছে? তারা সড়ক দুর্ঘটনায় হত্যার জন্য মৃত্যুদণ্ড চেয়েছে।

“আইন যা ছিল তাই রেখেছে এবং এই আইনের মধ্যে একটি পরিবর্তন হয়েছে যে, তিন বছরের জায়গায় পাঁচ বছর কারাদণ্ড হবে। আর ফাঁসির ব্যাপারটা দেখেছেন যদি হত্যা প্রমাণিত হয় তাহলে ফাঁসি হবে। যেটা অসম্ভব। কে কিভাবে কখন প্রমাণ করবে? অর্থাৎ এটা ফাঁকিবাজী। এটা ব্লাফ, প্রতারণা। যে প্রতারণা সরকার করেছিল কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গেও।”

দৃক গ্যালারি কর্ণধার প্রবীন আলোকচিত্রী শহিদুল আলমকে গ্রেপ্তারের সমালোচনাও করেন মওদুদ আহমদ। অবিলম্বে গ্রেপ্তার শিক্ষার্থীদের মুক্তির দাবিও জানান তিনি।

সংগঠনের উপদেষ্টা সাঈদ আহমেদ আসলামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, কেন্দ্রীয় নেতা আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, ফরিদ উদ্দিন, শাহজাহান মিয়া সম্রাট, ভিপি ইব্রাহীম, আরিফা সুলতানা রুমা, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মাওলানা শোয়েব আহমেদ প্রমুখ বক্তব্য দেন।