সড়কে কাউকে খাতির করবেন না: নাসিম

লাইসেন্সবিহীন গাড়ি ও চালকের বিরুদ্ধে শক্ত ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ক্ষমতাসীন ১৪ দল।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 August 2018, 02:20 PM
Updated : 9 August 2018, 02:33 PM

নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রশংসা করে এই আহ্বান জানান জোটের মুখপাত্র ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।

সড়ক ব্যবস্থাপনায় দায়িত্বরতদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনারা অনেক শৈথিল্য দেখিয়েছেন, আপনারা অনেক অনিয়ম করেছেন। কিশোররা আমাদের চোখ খুলে দিয়েছে। 

“মন্ত্রী হোক, এমপি হোক, সে যেই হোক না কেন, রাস্তায় যখন গাড়ি চালাবে তার ড্রাইভারের লাইসেন্স থাকতে হবে, গাড়ির ফিটনেস থাকতে হবে। আপনারা কাউকে খাতির করবেন না। আমি হলেও করবেন না, অন্য কেউ হলেও করবেন না।"

বৃহস্পতিবার ঢাকায় ওয়ার্কার্স পার্টির কার্যালয়ে জোটের এক বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নাসিম।

গত ২৯ জুলাই ঢাকায় দুই কলেজ শিক্ষার্থী বাসচাপায় নিহত হওয়ার পর বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা নামে সড়কে; তারা নিজেরাই গাড়ি ও চালকের লাইসেন্স পরীক্ষা শুরু করলে আটকা পড়ে মন্ত্রি, এমপি, পুলিশ কর্মকর্তাদের গাড়িও।

তবে শেষ পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনকে দেশকে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির জন্য ব্যবহারের প্রয়াস চলছিল বলে আওয়ামী লীগ নেতাদের দাবি।

নাসিম বলেন, “এই আন্দোলনের উপর ভর করে সারাদেশে কালা থাবা বিস্তার করে একটি গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করতে চেয়েছে। কিন্তু তাদের সেই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য পূরণ হয়নি। তারা সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে এবং তাদের মুখোশ উন্মোচিত হয়ে গেছে।"

তিনি বলেন, “কয়েকদিন ধরে কয়েকজন নামকরা রাজনীতিক উসকানিমূলক কথাবর্তা বলেছে। একজন মানুষ যখন ব্যর্থ হয়, তখন কিন্তু সে আবোল তাবোল বকাবকি করে। আজকে তারা সর্বক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি-জামায়াত জোটের সঙ্গে একত্রিত হয়ে এই পরিস্থিতি ঘোলাটে করার জন্য অনেক চেষ্টা করেছে। এই ধরনের ব্যক্তিরা গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার জন্য অতীতেরও তারা বারবার চেষ্টা চালিয়েছিল।"

‘অপশক্তির’ বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে ১৪ দলের মুখপাত্র বলেন, "এদের কোনো ছাড় দেওয়া যাবে না। নিষ্পাপ শিশুদের উপর ভর করে তারা লাশ চেয়েছিল? যে লাশের উপর ভর করে তারা একটি অশুভ শক্তির অসাংবিধানিক শক্তিকে ক্ষমতায় আসার পথ সুগম করতে চেয়েছিল।”

নাসিম বলেন, "শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি, আগামী নির্বাচন অবশ্যই ঠিকমতো হবে। দেশী-বিদেশী চক্রান্ত করে কোন লাভ হবে না। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে এবং নির্বাচনে জনগণের যে রায় হবে সেটা আমরা গ্রহণ করে নেব।”

কোরবানির ঈদের পরে প্রতিটি বিভাগীয় পর্যায়ে ১৪ দলের পক্ষ থেকে সমাবেশ করা হবে বলেও জানান আওয়ামী লীগের এই নেতা।

দেশবাসীসহ রাজনৈতিক গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, "চক্রান্ত চলছে, চক্রান্ত আরও গভীর হবে। তারা চক্রান্তে ব্যর্থ হয়েছে কিন্তু তারা আবারও চক্রান্ত করতে পারে।”

ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য আনিসুর রহমান মল্লিকের সভাপতিত্বে ১৪ দলের এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, উপ দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, সাম্যবাদী দলের দিলীপ বড়ুয়া, জাসদ (একাংশের) শরীফ নুরুল আম্বিয়া, জেপির শেখ শহিদুল ইসলাম, গণতন্ত্রী পার্টির শাহাদাত হোসেন, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের ওয়াজেদুল ইসলাম খান, অসিত বরণ রায়, গণআজাদী লীগের এস কে শিকদার, বাসদের রেজাউর রশিদ খান, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, যুগ্ম  সাধারণ সম্পাদক দিলীপ রায়।