সিনহাকে দিয়ে ‘জুডিশিয়াল ক্যু’ করাতে চেয়েছিলেন কামাল: আইনমন্ত্রী

পদত্যাগী প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহাকে দিয়ে ‘জুডিশিয়াল ক্যু’ ঘটিয়ে কামাল হোসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করতে চেয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 August 2018, 06:53 PM
Updated : 16 August 2018, 01:58 PM

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বুধবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের আলোচনা সভায় বক্তব্যে এই দাবি করেন তিনি।

শ্রীলঙ্কা, পকিস্তান, নেপালের উদাহরণ দিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, “প্রথমেই হইল এখন কী করা, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়ন করেই ফেলতেছে। প্রথম ষড়যন্ত্র হইল কীভাবে একটা জুডিশিয়াল ক্যু করে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থেকে শেখ হাসিনাকে সরানো যায়।

“আমাদের এখানে প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সিনহা সাহেবকে নিয়ে যারা ষড়যন্ত্র করেছে, তাদের সকলের নাম কিন্তু আমরা জানি। আপনারা তো চিনবেনই, ড. কামাল হোসেন, আপনারা চিনেন না? আর কী?”

নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারের বাড়িতে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাটের উপস্থিতিতে নৈশভোজের দিকে ইঙ্গিত করেন করেন আইনমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “আন্দোলনের ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করা যায়, সেই জন্য এই কামাল হোসেন, এই ইউনূস, এই খালেদা জিয়ার যারা সহচর, তারা কিন্তু নাক গলানো শুরু করেছে।

“এর মধ্যেও একটা ষড়যন্ত্র, সরকারকে ফেলে দিতে হবে। বদিউল আলম মজুমদারের ঘরে, হাত সুপ্রিম কোর্টেও চলে এসেছে। যেহেতু তাদের কমিটি বারের, সেহেতু প্রেসিডেন্ট-সেক্রেটারির সাহেবের ঘরে বইসা এইখানে (শহীদ শফিউর রহমান মিলনায়তনে) মিটিং করে গেছে।

“এগুলো কিসের আলামত? এগুলো হচ্ছে ওনারা কোনো একটা পেছনের দরজা দিয়ে যাতে ক্ষমতায় আসতে পারে।”

বিএনপি ক্ষমতায় ফিরলে ‘বাংলাদেশ থাকবে না’ মন্তব্য করে আনিসুল বলেন, “আমি এইখানে দাঁড়িয়ে বলে যেতে পারি, আরেকবার বিএনপি ক্ষমতায় আসলে এই বাংলাদেশ থাকবে না। আমরা হয়ত দেখতে পারব না, কিন্তু বাংলাদেশ থাকবে না। কারণ যারা আছে তাদের একজনও বাংলাদেশে বিশ্বাস করে না।”

বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ‘আওয়ামী লীগেরই কুচক্রিশীল নেতারা’ জড়িত বলে মন্তব্য করেন জাতির জনকের হত্যাকাণ্ডের মামলাটি পরিচালনাকারী আইনজীবী আনিসুল হক।

“অনেকেই বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল একাত্তরের পরাজিত গোষ্ঠী রাজাকার, আল বদররা। কিন্তু সেটা কি ঠিক? ইতিহাস কিন্তু তা বলে না। ইতিহাস বলে, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল এই আওয়ামী লীগেরই কিছু কুচক্রিশীল নেতা। তার মানে মীর জাফর আমাদের মধ্যে ছিল। সেই মীর জাফর যদি আমাদের মধ্যে না থাকতো তাহলে একাত্তরের পরাজিত শক্তি বঙ্গবন্ধুর গায়ে হাত দেওয়ার সাহস পেত না।”

বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের আহ্বায়ক ইউসুফ হোসেন হুমায়ুনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব ফজলে নূর তাপসের সঞ্চালনায় এই আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সৈয়দ রেজাউর রহমান, আব্দুল বাসেত মজুমদার, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন, আওয়ামী লীগের আইন সম্পাদক শ ম রেজাউল করিম, সাবেক আইনমন্ত্রী আব্দুল মতিন খসরু, নজিবুল্লাহ হিরু, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর মোখলেছুর রহমান বাদল প্রমুখ।