রাজশাহীতে বিএনপির মেয়র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের পথসভায় হাতবোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় দলটির আরেক নেতার জড়িত থাকার তথ্য পুলিশ তুলে আনার প্রেক্ষাপটে এই মন্তব্য করেন তিনি।
সোমবার আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে শেখ হাসিনা বলেন, “নির্বাচন যত এগিয়ে আসবে, নানা রকম খেলাও শুরু হবে। এতে কোনো সন্দেহ নাই।”
“তারা যখন নির্বাচনে জনগণের কাছে যেয়ে সাড়া পাচ্ছে না, তখন এই ব্লেইম গেম খেলা শুরু এবং হাতে নাতে ধরা,” বলেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী।
রাজশাহী জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান মন্টুকে একদিন আগে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ জানিয়েছে, তিনি দলের প্রার্থী বুলবুলের পথসভায় বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ফায়দা তুলতে চেয়েছিলেন।
বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপুর সঙ্গে মন্টুর কথিত ফোনালাপের একটি অডিও পাওয়ার কথাও পুলিশ জানায়।
শেখ হাসিনা বলেন, “দেখা গেল, তাদের নিজেদেরই ভাষা বেরিয়ে আসল, তারা নিজেরাই করেছে, শুধু আওয়ামী লীগকে দোষারোপ করার জন্য।
“তাদের নিজেদের ভাষ্যতেই বেরিয়ে গেল এই ঘটনাটা তারা ঘটিয়েছে। অর্থাৎ তারা নিজেরাই ঘটনা ঘটিয়ে আমাদের উপরে দলের উপরে অভিযোগ দিল, দোষারোপ করল।”
সরকারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মহলের কাছে অভিযোগ তুলতেই এই হামলার ঘটনা সাজানো হয়েছিল বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী।
এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেওয়ার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “কারা এই বোমা হামলা করল.. সে যে দলেরই হোক, তাকে ধরা হোক।”
বিএনপির প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, “দেখা গেল তারা নিজেরা বোমা মেরে নিজেরা খেলা খেলে। এটা তাদের নিজেদের অভ্যাস আছে। নিজেরা বোমা মারবে, নিজেরা গাড়ি ভাঙবে, নিজেরা একটা ঘটনা ঘটাবে তারপর ব্লেম গেম…।
“এই মিথ্যাচারে বিএনপির সাথে আর কেউ পারবে না। এই সমস্ত নাটক করার তারা যথেষ্ট পারদর্শী।”
উন্নয়নের কথা বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশের উন্নয়ন তো তাদের ভালো লাগবে না, চোখে লাগবে না। বাংলাদেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে, বিশ্বব্যাপী সম্মান পাচ্ছে; তখনই তাদের অন্তর্জ্বালা শুরু হয়ে গেছে।”
মামলার হাজিরার দিনে বিএনপি চেয়ারপারসনের অনুপস্থিতির দিকে ইঙ্গিত করে শেখ হাসিনা বলেন, “খালেদা জিয়া খায় দায় জেলখানায়, যেই মামলার তারিখ হয়, উনি অসুস্থ হয়ে যায়। এ আরেক নাটক শুরু হয়েছে। যখনই কোর্টের তারিখ পড়ে তখনই উনি অসুস্থ!”
বিএনপির অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে তিনি বলেন, “এতিমের টাকা মেরে, সেই কারণে তো জেলে। জেলে তো আর আমরা দিইনি। আমাদের কাছে তো মুক্তির আন্দোলন করে তো লাভ নেই। আমরা তো ইচ্ছে করলেই ছাড়তে পারব না, যতক্ষণ পর্যন্ত না কোর্ট না অর্ডার দেবে।
“আইনজীবীরা এত কথা বলে.. তারা কিছুতেই প্রমাণ করতে পারল না যে, এই টাকাটা খালেদা জিয়া বা তার পরিবার নেয় নাই। সে দোষটা কি আমাদের নাকি?
“দোষ দিলে নিজেদের ওপরই দিতে হবে .. যে, এত বড় বড়, মানে বাঘা বাঘা আইনজীবী সব; তারা ব্যর্থ হয়ে গেলো এটা প্রমাণ করতে যে উনি করেন নাই।”
কারাগারে খালেদা জিয়াকে সব সুবিধা দেওয়ার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “খানাপিনা কোনো দিক দিয়ে তো আমি কম দেখছি না। খোঁজ-খবর তো আমরা রাখি। তাকে মেইড সার্ভেন্ট দেওয়া হয়েছে। তার জন্য স্পেশাল খাট, স্পেশাল গদি.. কোনো কিছু তো কম দিই নাই। এয়ার কন্ডিশন.. সবই ব্যবস্থা তার জন্য জেলখানায়। যা যা চাচ্ছে, তাই পাচ্ছে। এই রকম আয়েশ করে তো, আর কেউ পায়েস খেতে পারে নাই।”