১০ম সংসদের মতো নির্বাচনের স্বাপ্নিকরা ‘রাজনীতির কুলাঙ্গার’: আম্বিয়া

সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা বজায় রাখার লক্ষ্য নিয়ে সবার অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের অনুষ্ঠানের উপর গুরুত্বারোপ করেছেন জাসদের একাংশের সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 July 2018, 05:36 PM
Updated : 22 July 2018, 05:36 PM

রোববার এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, “সাংবিধানিক ধারা সমতা গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বাংলাদেশ জাসদ দৃঢ়তার সংগে রাজনীতি করবে।

“১০ম সংসদ নির্বাচনের মত আর একটি নির্বাচনের স্বপ্ন যারা দেখছে - তারা গণতান্ত্রিক রাজনীতির কুলাঙ্গার। তাদেরকে রাজনীতি থেকে পরিত্যাগ করতে হবে।”

একাত্তরের সেক্টর কমান্ডার শহীদ কর্নেল আবু তাহের বীরউত্তমের ৪২তম মৃত্যুবার্ষিকীর স্মরণসভায় সভাপতির বক্তব্য দেন আম্বিয়া।

বাংলাদেশ জাসদের নিবন্ধন নিয়ে যে ষড়যন্ত্র চলছে তা মোকাবেলা করা হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “আমরা সকল শর্ত পূরণ করে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছি।”

আম্বিয়া বলেন, ”আমরা এখনো গণতান্ত্রিক স্থিতিশীলতা অর্জন করতে সংগ্রাম করে চলছি। নির্বাচন কালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে বির্তক তৈরী করে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেয়া হচ্ছে। সাংবিধানিক ধাবাহিকতায় আমাদের গণতন্ত্র রক্ষা করতে হবে।”

তিনি বলেন, “বেগম জিয়া ও তার দল বিগত নির্বাচনে অংশ না নিয়ে উপরন্তু সন্ত্রাস সৃষ্টি করে গণতান্ত্রিক ধারা থেকে নিজেদের বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে। আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে তারা সেই ভুল সংশোধন করতে পারে। ২১শে আগস্টের হত্যাকান্ড, ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলা, জঙ্গিসন্ত্রাসীদের মদদ দানের রাজনীতি প্রভৃতির জন্য দায়ীদের কর্মফল ভোগ করতে হবে।

জিয়াউর রহমান ক্ষমতা সংহত করার জন্য প্রহসনমূলক বিচার করে তাহেরকে ফাঁসি দেয় মন্তব্য করে আম্বিয়া বলেন, “হত্যাকাণ্ড আইনসম্মত করার জন্য ফাঁসির ১০ দিন পর আইন সংশোধন করা হয়েছিল। জামায়াত-মুসলিম লীগ-স্বাধীনতা বিরোধী ও রাষ্ট্রপতি সায়েম ছিল জিয়ার সহযোগী।

“তাহের ছিলেন নির্ভীক বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং মহান দেশপ্রেমিক। সমাজ বদলের সংগ্রামে তার দৃঢ়চিত্ত নতুন প্রজম্মের জন্য প্রেরণাদায়ক হয়ে থাকবে।কর্ণেল তাহের বীরউত্তমের জীবন ও সংগ্রাম থেকে শিক্ষা নিয়ে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য নতুন প্রজম্মকে শপথ নিতে হবে।”

আলোচনায় অংশ নিয়ে ঐক্য ন্যাপ সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য্য বলেন, “এখন যারা ক্ষমতায় আছেন তারা কেমন যেন অস্থির। অস্থিরতা গণতন্ত্রের দুশমন। অস্থিরতা থেকে স্বৈরতন্ত্রের জন্ম হয়।” জাসদ রাজনীতি সম্পর্কে তিনি আরও বলেন,“ যে অংশ বিপ্লবের চেতনা ধারণ করবে তারাই টিকে থাকবেন।”

সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দীলিপ বড়ুয়া বলেন,“স্বাধীনতার পরে বাংলাদেশ কার হাতে যাবে, কোন শ্রেণীর হাতে যাবে সে প্রশ্নের জবাব খুঁজতে জাসদের জন্ম। শোষণ নির্যাতনের সাথে সাম্প্রদায়িকতা যুক্ত হয়ে দেশ দক্ষিণপন্থায় চলে গেছে।”

বাংলাদেশের ওয়াকার্স পার্টির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান মল্লিক বলেন, “বাংলাদেশ জাসদকে বাঁচাতে হলে কর্নেল তাহেরকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। তার চিন্তা-চেতনাকে বাস্তবে প্রয়োগের জায়গায় নিয়ে যেতে হবে।”

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে গণতন্ত্রী পাটির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন, বাংলাদেশ জাসদ স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. মুশতাক হোসেন, কর্নেল তাহের হত্যা মামলার অন্যতম অভিযুক্ত সার্জেন্ট (অব.) রফিকুল ইসলাম বীরপ্রতীক, জাতীয় কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুর ইসলাম বাবু, সংগঠনের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি আবদুস সালাম খোকন, ঢাকা মহানগর পশ্চিম সহসভাপতি টুটুল সরকার বক্তব্য দেন।