নাগরিক সমাজের অনেকেই বিক্রি হয়ে গেছেন: বদিউল

বাংলাদেশের নাগরিক সমাজ এখন ‘দুরবস্থায় আছে’ দাবি করে এজন্য নাগরিক সমাজকেই দায়ী করেছেন সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার।

নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 July 2018, 04:28 AM
Updated : 21 July 2018, 04:32 AM

তিনি বলেছেন, “নাগরিক সমাজের বর্তমান দুরবস্থার জন্যে নাগরিক সমাজই দায়ী। নিজেদেরকেও আয়নার সামনে দাঁড়ানো উচিৎ।”

শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক সিটির জ্যাকসন হাইটসে প্রবাসী সাংবাদিক ও সুধীজনদের সঙ্গে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে একথা বলেন তিনি।

নাগরিক সমাজের মধ্যে বিভাজনের বিষয়টি তুলে ধরে বদিউল আলম বলেন, “লেনদেনের প্রশ্নে নাগরিক সমাজের লোকজনও অনেকেই বিক্রি হয়ে গেছেন। নাগরিক সমাজও এখন দলগতভাবে বিভক্ত। বিএনপির নাগরিক সমাজ এবং আওয়ামী লীগের নাগরিক সমাজ।”

তিনি বলেন, “আপনি যদি ক্ষমতায় থাকেন, অর্থাৎ ক্ষমতাসীনদের সাথে থাকলে, তাদের সাথে সুর মেলালে, তাদের দলে থাকলে আপনি সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাবেন। আর যদি আপনি তা না করেন, তাহলে আপনার যা প্রাপ্য, ন্যায্য অধিকার, তা থেকেও বঞ্চিত হবেন।

“সহজভাবে বলা যায়, এখন কারও সুদিন, আবার কারও দুর্দিন। কেউ কেউ আবার সুদিনের জন্যে রং পরিবর্তন করে। অর্থাৎ বসন্তের কোকিল।”

দেশের বিচার বিভাগ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে সুজন সম্পাদক বলেন, “বাংলাদেশের নিম্ন পর্যায়ের বিচার ব্যবস্থা ভেঙ্গে খান খান হয়েছে। প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার পদত্যাগের পর দেশত্যাগের ঘটনাবলিতে অনেক কিছুর ইঙ্গিত পাওয়া যায়। এমন অবস্থার উত্তরণ ঘটাতে সকলকে একযোগে কাজের বিকল্প নেই।”

পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে কি না, তা নিয়েও সংশয়  প্রকাশ করেন বদিউল আলম।

“সরকার যদি সহায়তা না করে, তাহলে কোনো কমিশনই, তারা যত ন্যায়নিষ্ঠার সাথেই দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করুক না কেন, নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে সক্ষম হবে না।”

নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে  রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি। ভোটের পর যেন সংঘাত না হয়, সেজন্য দলগুলোকে একটি চুক্তিতে আসার দরকার বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এই প্রসঙ্গে তিনি সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে  বলেন, “১/১১কে গঠিত কেয়ারটেকার সরকার বিপুল সমর্থনে দায়িত্বে অধিষ্ঠিত হলেও পরবর্তীতে তারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি করেছেন।

“এছাড়া দায়িত্ব গ্রহণের আগে কোনো কোনো দলের অকুণ্ঠ সমর্থন থাকলেও পরবর্তীতে রাজনৈতিক দলগুলোর সমর্থন হারিয়ে ফেলেছিল। দলগুলোও সোচ্চার হয়েছিল নির্বাচনের জন্য।”

সাংবাদিক মনির হায়দার এবং মনোয়ারুল ইসলামের সঞ্চালনায় এই মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন নিউ ইয়র্কের নজরুল একাডেমির সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম দুলাল।

উপস্থিত ছিলেন এম এ মালেক, শেলী জামান খান, রেজা রশীদ, আবু বকর হানিপ, মিনহাজ আহমেদ সাম্মু, সাংবাদিক মঞ্জুর আহমেদ, লাবলু আনসার, আকবর হায়দার কিরণ, তাসের খান মাহমুদ, হাসানুজ্জামান শাকি, শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।