গার্মেন্টে ১৬০০০ টাকা মজুরির দাবিতে ঈদের পর আন্দোলনের হুমকি

পোশাক খাতের শ্রমিকদের জন্য ১৬ হাজার টাকা ন্যূনতম মজুরি দাবি আদায়ে ঈদের পর জোরদার আন্দোলন গড়ে তোলার হুঁশিয়ারি দিয়েছে গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 July 2018, 01:12 PM
Updated : 20 July 2018, 01:57 PM

শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক সমাবশে সিপিবির সহযোগী শ্রমিক সংগঠনটির পক্ষ থেকে এ হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।

সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার মালিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, “আপনাদের অত্যাচার, জুলুম, হামলা-মামলা, হুলিয়া কোনো কিছুকেই আমরা তোয়াক্কা করব না। ঈদের পরে শক্তিশালী শ্রমিক আন্দোলন হবে। যে আন্দোলন ২০০৬, ২০১০ ও ২০১৩ সালকে ছাড়িয়ে যাবে। সেই আন্দোলন সংগঠিত ও সচেতন আন্দোলন হবে।”

মালিক পক্ষ থেকে ন্যূনতম মজুরি ছয় হাজার ৩০০ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাবের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমরা যদি মাঠে না নামি, আন্দোলন না করি তাহলে মজুরি বৃদ্ধি পাবে না। আন্দোলনের জন্য সবাই প্রস্তুত হোন, ঈদ যাবে, ঈদের পর পরই শক্তিশালী আন্দোলন শুরু হবে। ১৬ হাজার টাকা ন্যূনতম মজুরি আদায় করতে হবে।”

২০১৩ সালের ১ ডিসেম্বর তিন হাজার টাকা মূল বেতন ধরে পোশাক শ্রমিকদের জন্য ৫ হাজার ৩০০ টাকা ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করে সরকার। এরপর এবার মজুরি বাড়ানোর জন্য নতুন বোর্ড গঠন করা হয়েছে, যেখানে মালিকরা ন্যূনতম মজুরি ছয় হাজার ৩০০ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করেছেন।

ঈদের পরে আন্দোলনের যুক্তি তুলে ধরে জলি বলেন, “ঈদের আগে নিশ্চয় আমরা চাকরি হারাতে চাই না। কারণ আমরা জানি যখনই আন্দোলন-সংগ্রাম হয় তখন আপনারা (মালিক) ছাঁটাই করেন। শ্রমিকদের ওপর নির্যাতন-জুলুম-হুলিয়া চালান। মাস্তান নিয়ে শ্রমিকদের বাড়ি বাড়ি হামলা করেন।”

সংগঠনের সভাপতি অ্যাডভোকেট মন্টু ঘোষ বলেন, “সকলের কাছে শ্রমিক শ্রেণির দোহাই দিয়ে বলছি- এখন থেকে প্রতিটি শ্রমিক ভাইকে বলতে হবে ১৬ হাজার টাকা মজুরি না নিয়ে আমরা কেউ ঘুমাব না, আমরা কেই চুপ থাকব না।”

সরকার ও গার্মেন্ট মালিকদের উদ্দেশ্যে সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, “১৬ হাজার টাকা যদি না মানো… দিন চলে যাচ্ছে, জিনিসের দাম বাড়ছে তখন ১৬ হাজার টাকা রাজি হব না, ২০ হাজার টাকা আদায় করে ছাড়ব।”

জিনিসপত্রের দাম বাড়লেও শ্রমিকদের কেনার ক্ষমতা বাড়েনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমাদের দৈনন্দিন চাল, ডাল তেল, নুন, সাবানের দাম বছর বছর ৯ থেকে ১০ শতাংশ  বাড়ে। মানুষের কেনার ক্ষমতা বাড়ানোর দাবি করেছি, কিন্তু সরকার কেনার ক্ষমতা বাড়ানোর বদলে কমানোর জন্য ষড়যন্ত্র করছে।”

সমাবেশ শেষে প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে একটি মিছিল বের করে সুপ্রিম কোর্টের কদম ফোয়ারা ঘুরে পল্টন মোড় হয়ে সিপিবি কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়।