তিনি বৃহস্পতিবার ঢাকার লেইক শোর হোটেলে কূটনীতিকদের উপস্থিতিতে এক অনুষ্ঠানে বলেন, “আমি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে অনুরোধ জানাব, বাংলাদেশে এখন কী হচ্ছে, তা নোট করুন।”
পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “ক্ষমতায় টিকে থাকবার জন্য সরকার এখন মরিয়া হয়ে উঠেছে। এই কারণে তারা আজকে কোনো নিয়ম-কানুন, ন্যায়-নীতি, সংবিধান কোনো কিছুরই তোয়াক্কা না করে তারা একের পর এক মানবাধিকার লঙ্ঘন করে তাদের ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করতে চাইছে।”
বিরোধী দলের উপর নিপীড়নের পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি বলেন, “আজকে আমাদের হিসেবে ৫ শতাধিক নেতৃবৃন্দ হারিয়ে গেছেন, খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আমাদের হিসেবে ১০ হাজারের অধিক নেতা-কর্মীকে রাজনৈতিকভাবে হত্যা করা হয়েছে।
“কিছুদিন আগ পর্যন্ত সারাদেশে আমাদের নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে ৭৮ হাজার মামলা ছিল, ১৮ লক্ষ মানুষকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।”
দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ‘সাজানো মামলায়’ সাজা দিয়ে ‘নির্জন কারাগারে’ বন্দি করে রাখার কথাও বলেন তিনি।
সরকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসন দিয়ে নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে ‘নিয়ন্ত্রণ’ করছে বলেও অভিযোগ করেন ফখরুল। বর্তমান সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বিএনপির উদ্যোগে ‘বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি’ শীর্ষক এই গোলটেবিল বৈঠকে ২০০৯ সাল থেকে ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির ওপর ‘রাইট টু লাইফ: এ ফার ক্রাই ইন বাংলাদেশ’ শিরোনামে ১৫ মিনিটের একটি প্রামাণ্য চিত্র দেখানো হয়।
ফখরুলের সভাপতিত্বে ও দলের মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামানের পরিচালনায় এই আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিএনপি নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, খন্দকার মাহবুব হোসেন, শওকত মাহমুদ, রিয়াজ রহমান, সাবিহউদ্দিন আহমেদ, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহ উদ্দিন আহমেদ, মানবাধিকারকর্মী এলিনা খান, কলামনিস্ট মাহফুজউল্লাহ।
অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের মানবাধিকার বিষয়ক সচিব মাইক ক্রেমার, ফ্রান্স দূতাবাসের উপ-প্রধান জ্যঁ-পিয়ের পঁশে, ভারতের হাই কমিশনের রাজনৈতিক বিভাগের শান্তনু মুখার্জী উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও কানাডা, সুইডেন, পাকিস্তান, ইরান, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জাতিসংঘের প্রতিনিধিরা ছিলেন।
বিএনপি নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আবদুল মান্নান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, সেলিমা রহমান, রুহুল আলম চৌধুরী, ইনাম আহমেদ চৌধুরী, জয়নুল আবেদীন, এজেডএম জাহিদ হোসেন, হাবিবুর রহমান হাবিব, আবদুল কাইয়ুম, মাহবুবউদ্দিন খোকন, খায়রুল কবির খোকন, শামা ওবায়েদ, ফাহিমা মুন্নী, রুমিন ফারাহানা, মীর হেলালউদ্দিন, সারোয়ার হোসেন, সৈয়দ এজাজ কবীর প্রমুখ।
অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া,জি-নাইন এর সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন সায়ান্থ, আহাদ আহমেদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম, বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান, শামসুদ্দিন দিদারও অনুষ্ঠানে ছিলেন।