সোমবার দুপুরে সেতু ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে কোটা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন, “কোটা আন্দোলনের নতুন যাত্রার সময় আমি একেবারে অসুস্থ ছিলাম। দু’দিন খবরের কাগজও পড়তে পারিনি। পরবর্তীতে যা জেনেছি-শুনেছি এবং প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করে যতটা জানতে পেরেছি- এখন একটা কমিটি হয়েছে, এতদিন একটা অনিশ্চয়তা, সবাই বলছে কমিটি নেই।
“এখন তো একটা কমিটি মন্ত্রণালয়ের সচিবদের দিয়ে করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেই কমিটির প্রথম মিটিং হয়েছে...কমপ্লেক্স এবং কমপ্লিকেটেড বিষয়। কাজেই এই বিষয়টা হুট করে সমাধান করা যাবে না। সরকারের আন্তরিকতা সদিচ্ছার সামান্যতমও কমতি নেই।”
সরকারি চাকরির কোটা সংস্কারের দাবিতে কয়েক মাস আগে জোরাল আন্দোলন গড়ে তোলে ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’, যা ঢাকার বাইরেও ছড়িয়ে পড়ে। আন্দোলনের এক পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১১ এপ্রিল সংসদে বলেন, সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতিই আর রাখা হবে না। কোটা নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি করার কথাও সেদিন তিনি বলেছিলেন।
কিন্তু কমিটি কবে হবে, সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনো ধারণা দিতে পারছিলেন না সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তারা। এর মধ্যে ‘সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’ ফের আন্দোলনে নামলে কয়েক দফা তাদের উপর হামলা চালায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এই প্রেক্ষাপটে গত ২ জুলাই রাতে কমিটি গঠনের প্রজ্ঞাপন আসে।
আন্দোলনকারীদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী কাদের বলেন, “যারা এই আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত তাদের আবারও বলব যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেখানে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, একটা শক্তিশালী কমিটি করে দিয়েছেন। কমিটিও তাদের তৎপরতা শুরু করে দিয়েছে।
“প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসে তার নির্দেশে কমিটির কাজ এগিয়ে চলছে। এই কর্মকাণ্ডের ওপর আস্থা রেখে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধৈর্য ধরে কিছুটা সময় অপেক্ষা করার জন্য অনুরোধ করছি। প্রধানমন্ত্রী যা বলেন তা কারেন, তিনি কথা দিলে কথা রাখেন।”
কোটা আন্দোলন নিয়ে বিএনপি নেতাদের বক্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, “সরকারের যে কোনো কথা, যে কোনো আশ্বাস তাদের কোনোদিনই পছন্দের নয়। তাদের ব্যাপারটা এমান ‘যারে দেখতে নারি, তার চলন বাঁকা’। সরকার যাই করে তাতে তাদের কোনো আস্থা নেই। এই ব্যাপারে তাদের কোনো সায় নেই।”
আন্দোলন ছাড়া খালেদা জিয়াকে কারামুক্ত করা সম্ভব নয়- বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, “তারা বাংলাদেশের মানুষ পুড়িয়ে মারার আন্দোলন করে ব্যর্থ হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ এই ধরনের আন্দোলনকে প্রত্যাখ্যান করেছে। কাজেই জনগণকে সম্পৃক্ত করে যে আন্দোলন, সেই আন্দোলন করতে তারা বার বার ডাক দিয়েছে জনগণ সাড়া দেয়নি।
“তারা এই যে কোটা সংস্কার আন্দোলন অর্থাৎ অন্য কোনো আন্দোলনকে ইস্যু করার চেষ্টা করছে আমরা লক্ষ্য করে আসছি। (বিএনপির) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যন তিনিও কোটা সংস্কারের অন্দোলনে জড়িয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককে ফোন দিয়েছিলেন এটা সবারই জানা। আন্দোলন করার মত জনসমর্থন নেই, তাই তারা আজকে কোটা সংস্কার আন্দোলনের ওপর ভর করেছে, এখান থেকে যদি কোনো ইস্যু বের করা যায়। এটাই তাদের দুরভিসন্ধি “
নির্বাচনের আগে বিএনপি নেত্রীর কারাগারে থাকা নিয়ে মানুষের মাথাব্যথা নেই বলে মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের।
“এখন নির্বাচনের মাত্র তিন মাস বাকি। মানুষ এখন ইলেকশনের মুডে আছে। মানুষ এখন ঝুঁকে গেছে নির্বাচনের দিকে। এ সময়ে বেগম জিয়াকে নিয়ে, বেগম জিয়ার মুক্তি নিয়ে কারো মাথাব্যথা আছে বলে মনে হয় না। এটা বিএনপির থাকতে পারে। আইনি প্রক্রিয়ায় মুক্তি পেলে আমাদের কোনো সমস্যা নাই।”